প্রথম দিন নার্ভাস ছিলাম

শেষ হয়েছে ‘কাজল রেখা’ চলচ্চিত্রের শুটিং। গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে কাজল রেখা চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‘চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে ২০১২’-এর রানারআপ মন্দিরা চক্রবর্তী। প্রথম চলচ্চিত্রের শুটিং অভিজ্ঞতা ও নানা প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে
মন্দিরা চক্রবর্তী
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করে কেমন লাগল?

শুটিং তো দারুণভাবে শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে সাত মাস লেগেছে এই ছবির শুটিং শেষ হতে।  

প্রশ্ন :

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

প্রথম দিন নার্ভাস ছিলাম। কারণ, এর আগে কোনো দিন তো সিনেমায় কাজ করিনি। সেরা নাচিয়ে অনুষ্ঠানের পর প্রস্তাব পেয়েছিলাম। কিন্তু আত্মবিশ্বাস ওভাবে পাইনি। মনে হয়েছে, আরেকটু শিখেপড়ে যাই, তাহলে আমার জন্য ভালো হবে। যদিও এমনিতে টিভিসি, ওবিসির কাজ করতাম। কিন্তু সিনেমার ব্যাপারটা তো অনেক বড় বিষয়। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস পাইনি। এর মধ্যেই গিয়াস উদ্দিন সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলো। তাঁকে আবার ছোটবেলা থেকে পছন্দ করতাম, পছন্দের পরিচালক হিসেবে। আমি যখন মনপুরা দেখি, তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। বড় হতে হতে মনপুরা ছবিটাই মাথায় ঢুকেছে। কারণ, ওটাই ছিল আমার প্রথম দেখা চলচ্চিত্র। পুরো পরিবার খুলনার শঙ্খ সিনেমা হলে ছবিটি দেখেছিলাম।

মন্দিরা চক্রবর্তী
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

যে পরিচালক স্কুলজীবন থেকে প্রিয়। তাঁর পরিচালনায় জীবনের প্রথম সিনেমায় অভিনয়ের ব্যাপারটা কীভাবে ঘটেছিল?

করোনার সময় নারায়ণগঞ্জে সেলিম ভাইয়েরই একটা নাটকের শুটিং করেছিলাম। শুটিংয়ের সময় একজন সহকারী আমাকে কাজল রেখা বলে ডাক দিয়েছিলেন। তখনো আমি কিছুই জানতাম না। ভেবেছিলাম, নামটা হয়তো ভালো লেগেছিল বলে আমাকে বারবার ডাকছিলেন। যাঁরা অবশ্য ছবিটি সম্পর্কে জানতেন, তাঁরা একটু অবাক হন। একে অন্যকে জিজ্ঞেস করছিলেন, ওই কি তাহলে কাজল রেখা? আমিও সারপ্রাইজ হই। একদিন সেলিম ভাইয়ের সহকারী বলছিলেন, এটা তাঁর নতুন ফিল্ম। অনেক বছর ধরে ছবিটি বানানোর পরিকল্পনা তাঁর। একটা ড্রিম প্রজেক্ট। তখন আমি আরও বেশি অবাক হয়েছি। ভাবলাম, তাহলে আমাকে কেন কাজল রেখা বলে ডাকছেন সবাই! অনেক দিন পর সেলিম ভাই আমাকে ডেকেছেন। তখন তাঁর অন্য ছবির কাজও চলছিল। তাই আমিও কনফিউজড ছিলাম। আমাকে গল্পের বই পড়তে দিতেন। তারপর তাঁর সামনে সংলাপ বলতে দিতেন। পারি কি না পারি। একদিন হুট করে বললেন, ‘আমি চাই তুমি কাজল রেখা চলচ্চিত্রে কাজ করো। তোমাকে কাস্ট করতে চাই।’ এটা শোনার পর আমার ভীষণ ভালো লাগে। তখন আমি পুরো কনফিউজড। এরপর অনেক সময় ধরে রিহার্সেল হয়েছে। নেত্রকোনায় প্রথম যখন শুটিংয়ে গিয়েছি, খুবই নার্ভাস ছিলাম। আমি ছাড়া সেদিন সবাই সিনিয়র। তবে সবাই বেশ আন্তরিক ছিলেন। আন্তরিকভাবে আমাকে গ্রহণ করেছিলেন। একটা সময় সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে ওঠে।

মন্দিরা চক্রবর্তী
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

‘কাজল রেখা’ তো শেষ হলো। নতুন কোনো ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পাচ্ছেন?

এরই মধ্যে তিনটি ছবির ব্যাপারে কথা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে চাই।

প্রশ্ন :

আপনার পরিবারের কেউ কি বিনোদন অঙ্গনে আছেন?

একদম কেউ না। মা-বাবা ও দুই ভাই অবশ্য সংস্কৃতিমনা। সবাই আমাকে সাপোর্ট করে। তবে মায়ের ইচ্ছাটা সবচেয়ে বেশি। আমার ছোটবেলা কেটেছে খুলনায়, সেখানে নাচের তালিম নিতাম। মা-ই আমাকে সবখানে নিয়ে যেতেন। নাচে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছি। একটা সময় নিজেরও স্বপ্ন বড় হতে থাকে। চ্যানেল আইয়ের রিয়েলিটি শো সেরা নাচিয়েতে নাম লেখানোর পর যখন রানারআপ হলাম, তখন অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে থাকি। চলচ্চিত্রের জন্যও প্রস্তাব পাই। কিন্তু করিনি।

মন্দিরা চক্রবর্তী
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

কেন করেননি?

তখন আমি স্কুলে পড়তাম। এত অল্প সময়ে চলচ্চিত্রে নাম লেখালে হয়তো পড়াশোনার ক্ষতি হতো, এমন কিছু করতে চাইতাম, পড়াশোনাও যাতে নিয়মিত করতে পারি। তাই মডেলিং আর নাটকে অভিনয়টাই করতাম। এখন তো ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে অনার্স শেষ করেছি। নাচকে সঙ্গী করে এখন অভিনয়ে নিজেকে আরও বড় পরিসরে মেলে ধরতে চাই।