মাহির হুঁশিয়ারি, ডলি সায়ন্তনীর চ্যালেঞ্জ

তিনি রাজনীতিতে আরও বেশি সক্রিয় হতে চান
ভিডিও থেকে

নির্বাচন নিয়ে সরব ছিলেন তারকা প্রার্থীরা। কেউ দলীয় মনোনয়ন পেলেও বেশ কয়েকজন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচন উপলক্ষে প্রচারণায় সাড়া ফেললেও শেষ মুহূর্তে তাঁরা ভোটে হেরে যান। এরপর এসব তারকা কেউ কেউ ফিরেছেন গানে। কেউ নিজের মতো করেই দিন কাটাচ্ছেন। কেউ কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পথচলার ঘোষণা দিয়েছেন। এই তারকাদের মধ্যে রয়েছেন সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম, ডলি সায়ন্তনী, চিত্রনায়িকা মাহিয়া। এই তারকারা কেউ গণমাধ্যমে কথা না বললেও ফেসবুকে সরব রয়েছেন।

নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচনের দিন ভোট থেকে সরে দাঁড়ান গায়িকা ডলি সায়ন্তনী। সে সময় তিনি নির্বাচনী এলাকা পাবনা-২–এর সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে আমি মা, বোন, ভাই—সবাইকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা বলেছিলাম। গ্রামবাসী আপনাদের কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।’ পরে তিনি নির্বাচন থেকে আবেদন করে নিজেকে সরিয়ে নেন। ফেসবুক লাইভে এসে নিজের ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে নতুন খবর জানান, তিনি কখনোই কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। কিন্তু এখন থেকে তিনি রাজনীতিতে নিয়মিত হতে চান।

আরও পড়ুন
ডলি সায়ন্তনী। ছবি: ফেসবুক

ডলি সায়ন্তনী লাইভে বলেন, ‘আমি একজন মা, আমি একজন ওয়াইফ। একটা মা এবং ওয়াইফের অনেক দায়িত্ব থাকে। আমার বাচ্চারা এখন বড় হয়ে গেছে। তাই আমি গানের পাশাপাশি যেকোনো কাজে পুরোপুরি সময় দিতে পারব। এ কারণে এলাকাবাসীর জন্য রাজনীতিতে নেমেছি। আমি লোকদেখানো রাজনীতি করব না। এখন থেকে আমার সুজানগর ও আমিনপুরবাসীর শতভাগ পাশে থাকার চেষ্টা করব। যদি সুষ্ঠু ভোটের সুযোগ থাকে, আমি ডলি সায়ন্তনী এমপি ফিরোজ ভাইকে ভোটে হারাব ইনশা আল্লাহ। এটা আমার চ্যালেঞ্জ। আপনারা ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা।’

পরদিন ফেসবুক পোস্টে দেখা যায়, ডলি সায়ন্তনী নিজের গানের মিউজিক ভিডিও পোস্ট করেছেন। ‘ভালোবাসার ময়না পাখি এখন জানি কার’ লিখে পোস্ট করা ভিডিওতে ছিল ‘কলিজাতে দাগ লেগেছে’ গানটি। পরে তিনি ফেসবুকে গানের দুটি রিলস ভক্তদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেন। সর্বশেষ তিনি আজকের একটি পোস্টে তিনি বিদায় নেন। লিখেছেন, ‘ইনশা আল্লাহ আবার দেখা হবে।’ কারণ, এখন গানের পাশাপাশি তিনি রাজনীতিতে আরও বেশি সক্রিয় হতে চান।

আরও পড়ুন
মাহিয়া মাহি
ছবি: প্রথম আলো

এদিকে মাহিয়া মাহি নির্বাচনের পর প্রথম দিন কারও সঙ্গে তেমন কথা বলেননি। সেদিন মন খারাপের কথা প্রথম আলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করেছিলেন। নির্বাচনের পরদিন তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এখনো এলাকায় রয়েছি। অনেক কিছু নিয়ে কথা থাকলেও সেগুলো বলতে চাই না। আমি মানুষের কাছে গিয়েছি, তাঁদের সাড়া পেয়েছি। (তাঁরা) ভালোবেসেছেন। ফেসবুকে অনেক কিছুই দেখেছি।’

এর পরদিন মাহি রাজশাহী-১ তানোর–গোদাগাড়ীবাসীর উদ্দেশে ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘নারীদের উদ্দেশে আমি বলেছিলাম কর্মসংস্থানের কথা। সেটা বড় পরিসরে কতটা করতে পারব জানি না। এটা সরকারিভাবে যতটা সহজ, তার চেয়ে অনেক বেশি কঠিন ব্যক্তিগতভাবে করা। তারপরও আমি চেষ্টা করব। আমাদের এলাকার রাস্তা ও পানির সমস্যা নিয়ে নতুন এমপিকে অনুরোধ করব পদক্ষেপ নিতে। কারণ, আমাদের অনেক রাস্তা এখনো গরুর গাড়ি চালানোর মতো। আশা করি তিনি মানুষের জন্য কাজ করবেন। তবে আমি কিন্তু এখনো মাঠে আছি।’

আরও পড়ুন
প্রচারণায় সরব ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহিয়া মাহি
ছবি: প্রথম আলো

হেরে নীরব থাকতে চান না মাহিয়া মাহি। তিনি এখন রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চান। এই প্রসঙ্গে হুঁশিয়ার করে চিত্রনায়িকা বলেন, ‘আমি কিন্তু মাঠে আছি। আগামী পাঁচ বছর পর আবারও নির্বাচনে দেখা হবে। আমার কর্মীরা আগামী পাঁচ বছর মাঠে কাজ করবে। তাদের কোনো রকম ডিস্টার্ব যদি কেউ করেন, তাহলে মনে রাখবেন যারা আপনাদের সঙ্গে টক্কর দেয়, তাদের মতো আমি দুর্বল না। নতুন এমপির প্রতি পরামর্শ, পাঁচ বছরে ভালো কাজ করবেন, যেন মানুষের হৃদয়ে আপনাদের জায়গা হয়। মানুষের কাজের জন্য যে ক্ষমতা পেয়েছেন, সেটাকে কাজে লাগান।’

এ সময় মাহি কম ভোট পাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘যদিও আমি অনেক কম ভোট পেয়েছি। নতুন অবস্থায় একটা মেয়ে হয়ে ভোট করেছি, এটা সবার অ্যাপ্রিশিয়েট করা উচিত।’ নির্বাচন নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। সবার কাছ থেকে তিনি সহায়তা পেয়েছেন বলে জানান। পাঁচ বছর পর আরও শক্ত অবস্থান নিয়ে তিনি নির্বাচনের মাঠে থাকতে চান। এদিকে দীর্ঘদিন পর স্বাভাবিকভাবে ফেসবুকে ফিরেছেন মাহিয়া মাহি। একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘কাঁধে মাথা রাখব।’ আরেকটিতে লিখেছেন, ‘হ্যালো, এটাই আমি যাকে আপনারা খুঁজছেন।’ এ ছাড়া বলিউডের গানও ভক্তদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন এই নায়িকা।

আরও পড়ুন