আমার সবকিছুই মৌসুমীকে বলে ফেলেছি: ওমর সানী
দেখতে দেখতেই একসঙ্গে জীবনের ২৭ বসন্ত পার করলেন ঢালিউডের সবচেয়ে আলোচিত দম্পতি। ফেলে আসা দিনগুলোয় কখনোই পেছনে তাকাতে হয়নি ওমর সানী ও মৌসুমীকে। তাঁরা সব সময় এগিয়েছেন সামনের দিকে। হয়েছেন দর্শক, সাধারণ অনেক মানুষের কাছে আদর্শ দম্পতি। দেশের তারকা দম্পতি কথা বললে এখনো ভেসে আসে ওমর সানী মৌসুমীদের নাম। দীর্ঘ যেমন ছিল ভালোবাসা তেমনি অন্যদের মতো কখনো মান–অভিমান হলেও সেটা ভালোবাসাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অভিনেতা ওমর সানীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম ২৭ বছরের সংসারে আপনার অনুভূতি কী?
এমন প্রশ্নের উত্তর যেন এই ঢালিউড চিত্রনায়কের মুখেই ছিল। ওমর সানী বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা আমরা দুজন দুজনকে পুরোপুরি জানি। শুধুই না বেশ ভালোভাবেই জানি। আমাদের দুজনের বোঝাপড়া ভালো। একটা কথাই বলব দুজনের জানাশোনার কোনো গাফিলতি নেই। বাকি সময় একসঙ্গে তাঁর সঙ্গেই কাটিয়ে দিতে চাই। একজন স্ত্রী, আমার সন্তানদের মা, একজন ফ্যামিলি গার্ডিয়ান হিসেব সে চমৎকার। দীর্ঘ সংসার জীবনে তাঁর ওপর আমি পুরোপুরি খুশি।’ দীর্ঘ সংসার জীবনে মৌসুমীকে কোন কথাটা বলা হয়নি? এমন প্রশ্নে ওমর সানী বলেন, ‘আমার সবকিছুই মৌসুমীকে বলে ফেলেছি। নতুন করে বলার কিছু নেই। দীর্ঘ এই সময় আমরা যেভাবে চেয়েছি, সেভাবেই এখনো ভালো আছি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ওমর সানী যে ছবিটিতে অভিনয় করতে চাননি সেই ছবির শুটিংয়ে গিয়েই তিনি মৌসুমীর প্রেমে পড়েন। ঘটনাটা ঘটেছিল দিলীপ সোম পরিচালিত ‘দোলা’ সিনেমার শুটিংয়ের সময়। ঢাকার বাইরে সিনেমাটির শুটিং হয়। সেই শুটিং শেষ করে ঢাকায় ফেরেন তারা। সেই স্মৃতি স্মরণ করে ওমর সানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিলেটে আউটডোরে শুটিং করতে গিয়ে দুজনের কিছুটা মনোমালিন্য হলো। কাজ শেষ করে ঢাকায় ফিরলাম। এরপর কেন জানি মেয়েটার জন্য মায়াই লাগল। যে বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়েছিল, সেটা ওর (মৌসুমীর) ব্যক্তিত্ব। ওই সময় অন্য যাঁরা কাজ করতেন, তাঁদের থেকে আলাদা। তাঁর বাবাও ছিলেন খুব স্মার্ট ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। পুরো পরিবারের প্রতি আলাদা একটা শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হলো। ভেতরে ভেতরে হয়তো ভালোবাসাও জন্মে গেল।’ একসময় তাঁরা দুজনই বুঝতে পারেন একে অন্যের প্রেমে পড়েছেন। এর মধ্যেই এক দিন ওমর সানী এক সাক্ষাৎকার বলে বসেন মৌসুমীকে তিনি পছন্দ করেন। এরপরেই তাঁদের বিয়ের সিদ্ধান্ত আরও পাকাপোক্ত হয়।
১৯৯৫ সালের ২ আগস্ট বিয়ে হয় এই তারকা দম্পতির। মৌসুমীর চাওয়া মতো সে দিন ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে ওমর সানী বিয়ের আসরে যান। ঘোড়ার গাড়ির পেছনে ওই সময়ে ১১৭টা প্রাইভেটকারের বহরও ছিল। পরের দিন তাঁদের বউভাত হয় রাওয়া ক্লাবে। বিয়ের আগে সিনেমার এই জনপ্রিয় জুটির প্রেম কেমন ছিল, এমন প্রশ্নে মৌসুমী এর আগে গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, বিয়ের আগে তাঁদের খুব একটা প্রেম করা হয়নি। তাঁরা প্রেম করেছেন বিয়ের পর। তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে মৌসুমী আরও জানিয়েছিলেন, ‘শুধু দাম্পত্যে নয়, যেকোনো সম্পর্কেই বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা থাকতে হবে। বন্ধুত্বের মধ্যেও তা-ই। বন্ধুকে ভালো না বাসলে, শ্রদ্ধা না করলে বন্ধুত্ব টিকবে না।’ বিবাহবার্ষিকীর বিশেষ এই দিনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাবেন তাঁরা। রাতে একসঙ্গে সিনেমা দেখবেন বলে জানালেন ওমর সানী।