মারুফের ৪ কোটি ৬৩ লাখের ‘গ্রিন কার্ড’ কত আয় করল?

কাজী মারুফ। ফেসবুক থেকে

গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে ১১টি ছবি। এর মধ্যে আছে কাজী মারুফ অভিনীত ও প্রযোজিত ‘গ্রিন কার্ড’ সিনেমাটিও। মাল্টিপ্লেক্সে মাত্র দুটি শো এবং টাঙ্গাইল ও সখীপুরে মিলনায়তন ভাড়া করে ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে। মুক্তির তিন দিনের মাথায় ছবিটি মাল্টিপ্লেক্স থেকে নেমেও যায়। ছবিটির পরিচালক কাজী হায়াৎ ও রওশন আরা নিপা।

আরও পড়ুন

এ ব্যাপারে মারুফের বক্তব্য, ‘সিনেমাটিকে স্মার্ট করতে গিয়ে এত স্মার্ট করে ফেলেছি যে আমার যাঁরা সাধারণ ভক্ত-দর্শক ছিলেন, তাঁরাও সিনেমা দেখতে যাননি, আবার স্মার্ট দর্শকেরাও যাননি সিনেমাটি দেখতে। তা ছাড়া মাল্টিপ্লেক্স টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। মধ্যবিত্তের পকেটে টাকা নেই। সিনেমা না দেখলে মানুষ অসুস্থ হবে না, কিন্তু ভাত না খেলে তো অসুস্থ হবে। তাই মানুষের পকেটে যে টাকা আছে, তা দিয়ে এখন আর সেভাবে সিনেমা দেখছেন না, জীবন বাঁচাতে খাবার কিনে খাচ্ছেন।’

যুক্তরাষ্ট্র বসে বেশ সময় নিয়েই ‘গ্রিন কার্ড’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছিলেন মারুফ। ঈদ উৎসবে ছবিটি মুক্তি দিতে বড় প্রত্যাশা নিয়ে পরিবারসহ দেশে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু ছবিটি মুক্তির সময় হলসংকটে পড়েন। একক হল পাননি। মাল্টিপ্লেক্সে মাত্র কয়েকটি শো পেয়েছিলেন। তাও তিন দিনের মাথায় নেমে যায়।

কাজী মারুফ। ফেসবুক থেকে

অনেকটাই আক্ষেপ মারুফের। তিনি বলেন, ‘ছবিটা তো দর্শককে দেখানো গেল না। হল না থাকলে দেখাব কোথায়? তবে আমি মনে করি, এই ঈদে ওইভাবে কোনো ছবিই ভালো চলছে না। “রাজকুমার”ও কি ভালো চলছে? সব ছবি তো আর “প্রিয়তমা” হবে না। আর সব ছবি সব সময় সুপারহিট হয় না।’

এই নায়কের মন্তব্য, ‘এখন যতগুলো সিনেমা হল আছে, আমার ধারণা ঈদের পর ৩০ থেকে ৪০টি হল বন্ধ হবে। দুই বছরের মধ্যে বাকিগুলোও প্রায় সব বন্ধ হয়ে যাবে। হল না থাকায় একটা সময় বাংলা সিনেমার দর্শকও থাকবে না, কমবে বাংলা সিনেমাও। ঘরে বসে বিভিন্ন দেশের সিনেমা দেখবেন মানুষ। আগামী পাঁচ বছরে হয়তো অনেক সিনেপ্লেক্স হবে। তখন দেশের সিনেমার অভাবে পাশের দেশের সিনেমা চলবে সেখানে।’

‘গ্রীন কার্ড’ সিনেমার পোস্টার

কিন্তু মুক্তির আগে আগে হল পাচ্ছিলেন না, তাহলে ঝুঁকি নিয়ে মুক্তি দিলেন কেন? এ ব্যাপারে মারুফ বলেন, ‘মাল্টিপ্লেক্সে যে কটা শো পেয়েছিলাম, বুঝিনি দর্শক হবে না। মাত্র ১০/১২ জন মিলে সিনেমা দেখলে তো প্রযোজকের পেট ভরবে না। এমন অবস্থা দেখে আমি নিজেই সিনেপ্লেক্সে ফোন করে আমার ছবি নামিয়ে দিতে বলেছি। কারণ, এমনিতেই মাল্টিপ্লেক্সে সিস্টেম জটিলতা আছে। আমার সিনেমার শোয়ের হলটি দর্শকে পরিপূর্ণ থাকলে কমিশন হিসাবে মাত্র ১৬ হাজার টাকা পাব আমি। প্রযোজকের সঙ্গে হলমালিকের টিকিটের টাকার ভাগাভাগির এই জটিলতা চলতে থাকলে, একটা সময় সিনেমা কেউ বানাবে না, সিনেমা থাকবে না।’

এই অভিনেতা মনে করেন, সিনেমার অভাবে একটা সময় হল থাকবে না। ফেসবুক থাকবে। সেখানে সিনেমা নিয়ে গরম থাকবেন বিভিন্ন শিল্পী–ভক্তরা।
মারুফের হিসাবমতে, ৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘গ্রিন কার্ড’ মুক্তির পর প্রেক্ষাগৃহে থেকে লাখ টাকাও আসেনি। ওটিটি, টেলিভিশনে বিক্রির পরও এত বিনিয়োগ ওঠার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি। অনেকটাই হতাশ চিত্রনায়ক মারুফ বলেন, ‘আর বাংলা ছবি নির্মাণ করব না। এখন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে বিদেশি সিনেমার বানানোর চেষ্টা করব।’
আগামী ৩ মে পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার কথা আছে তাঁর।