৮৩ কোটি বাজেটের বাংলাদেশি ছবিটি দেশের বাইরে কয়টি হলে মুক্তি পাচ্ছে

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ১৫১টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে মাসুদ রানা অবলম্বনে ‘এমআর–৯: ডু অর ডাই’। খবরটি জানিয়েছে ছবিটির আন্তর্জাতিক পরিবেশক সংস্থা ‘স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো’–এর প্রেসিডেন্ট অলিউল্লাহ সজীব। তিনি বলেন, ‘আমাদের সিনেমা আমেরিকা ও কানাডার ১৫০–এর বেশি থিয়েটারে একযোগে চলছে, এ অবিশ্বাস্য ঘটনা এখন বাস্তব।’

‘এমআর–৯: ডু অর ডাই’ ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবিএম সুমন
ছবি : ফেসবুক

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টমিডিয়ার দাবি, ৮৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ‘এমআর–৯: ডু অর ডাই’ ছবিটি তৈরি হয়েছে। ২৫ আগস্ট ছবিটি দেশে ও দেশের বাইরে একযোগে মুক্তি পাচ্ছে। ছবিটির মুক্তি উপলক্ষে ঢাকার একটি পাঁচতারা হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে জাজ মাল্টিমিডিয়ার স্বত্বাধিকারী আবদুল আজিজ জানান, ‘এমআর–৯: ডু অর ডাই’–এর ইংরেজি ভার্সন সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। এটি দেশের সবগুলো সিনেপ্লেক্সে ২৫ আগস্ট থেকে চলবে। বাংলা ডাবিং করা অংশ যদি বৃহস্পতিবারের মধ্যে সেন্সর পায়, তবে এ সপ্তাহে সিঙ্গেল স্ক্রিনেও চলবে। নইলে পরের সপ্তাহ থেকে চলবে।

‘এমআর–৯: ডু অর ডাই’ ছবিটি নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হলিউড নির্মাতা আসিফ আকবর। ছবিতে সুমন ছাড়াও অভিনয় করেছেন সাাক্ষী, ফ্র্যাঙ্ক গ্রিলোসহ আরও অনেকে
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

এদিকে ‘এমআর–৯: ডু অর ডাই’ ছবিটির আন্তর্জাতিক পরিবেশক সংস্থা স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর প্রেসিডেন্ট অলিউল্লাহ সজীব তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘এর আগে আমরা কখনো ১০০ প্রেক্ষাগৃহের বেঞ্চমার্ক ছুঁতে পারিনি। “পাপ পুণ্য” ছবিটি ৯১টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল। এরপর ৮৮টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় “হাওয়া”। এবার ১০০ ছাড়িয়ে ১৫০–ও ছাড়িয়ে গেছে। ঘটনাটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ এ কারণে, এত বড় পরিসরে মুক্তির পরও এই তালিকায় নেই রিগ্যাল–এর একটা থিয়েটারও। অথচ আমাদের সবগুলো ছবি মুক্তির সময় তাদের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক থিয়েটার থাকেই। এবারও তাদের কাছে বেশ কিছু থিয়েটারের অনুরোধ ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণে তারা এ সপ্তাহে “এমআর নাইন: ডু অর ডাই” চালাতে পারছে না। যদি পারত, তাহলে থিয়েটারের সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াত, ভাবলে অবাক লাগে। তবে এখনো “এমআর–৯: ডু অর ডাই”–এর মোট থিয়েটারসংখ্যা বাড়ার সুযোগ আছে। কারণ, রিগ্যাল ২৫ আগস্ট না পারলেও ১ সেপ্টেম্বর থেকে সিনেমাটি চালাবে বলে জানিয়েছে।’

‘এমআর–৯: ডু অর ডাই’ ছবিতে অভিনয় করেছেন সাক্ষী প্রধান
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

প্রয়াত কথাসাহিত্যিক কাজী আনোয়ার হোসেনের সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্র মাসুদ রানা, যা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বহু বই এবং প্রতিটি সিরিজই পাঠকপ্রিয় হয়েছে। তারই একটি ‘ধ্বংস পাহাড়’, যা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রযোজনায় ‘এমআর-৯: ডু অর ডাই’ ছবিটি। ছবিটির চিত্রনাট্যকার নাজিম উদ দৌলা। তিনি বলেন, ‘এই স্ক্রিপ্ট ২০ বার ড্রাফট হওয়ার পরে নিজে থেকেই কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। পুরোটা শোনার সময় তিনি কোনো এক্সপ্রেশন দেননি। পরে তিনি তাঁর সেবা প্রকাশনীর লোকদের ডেকে জানান, এর চেয়ে ভালো স্ক্রিপ্ট হতে পারত না। সুতরাং তিনি এই স্ক্রিপ্টের বিষয়ে অবগত কি না, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর সম্মতি নিয়ে করা। তিনি আমাদের পাশে না থাকলেও তাঁর স্মৃতি থাকবে।’

১৯৬৮ সালে সৃষ্ট ‘মাসুদ রানা’ চরিত্রটি আধুনিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। পর্দায় তা করেছেন এ বি এম সুমন। এর আগে তাঁকে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবিতে দেখা গেছে। সেই ছবিতে তিনি সবার নজর কেড়েছিলেন। নতুন ছবিটি প্রসঙ্গে বলেন, ‘এত আনন্দ লাগছে যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। মাঝেমধ্যে ফ্রোজেন ফিল হচ্ছে। এতে হলিউড যুক্ত হওয়ায় আরও ভালো লাগছে, যেখানে আমি লিড রোলে আছি। বইয়ের মাসুদ রানার যত কাছাকাছি যাওয়া যায়, চেষ্টা করেছি। বই লেখার সময় লেখায় সমস্যা হয় না, কিন্তু ফিল্ম বানাতে গেলে অনেক ছাড় দিতে হয়।’

‘এমআর–৯: ডু অর ডাই’ পরিচালনা করেছেন আসিফ আকবার। তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী ছয় মাস শুধু প্রেক্ষাগৃহে চলবে ছবিটি। এরপর ওটিটিতে রিলিজ হবে। ছবিতে আন্তর্জাতিক শিল্পীদের মধ্যে অভিনয় করেছেন ফ্র্যাঙ্ক গ্রিলো, বলিউড অভিনেত্রী সাক্ষী প্রধান, হলিউড অভিনেতা নিকো ফস্টার, বলিউড অভিনেতা ওমি বৈদ্য, হলিউড অভিনেতা ওলেগ প্রুডিয়াস, আমেরিকান মডেল-অভিনেত্রী জ্যাকি সিগেল প্রমুখ। আরও আছেন শহীদুল আলম সাচ্চু, আনিসুর রহমান মিলন, জেসিয়া ইসলাম, আলিশা।