এভাবে আমাকে আগে দর্শক কখনো দেখেননি: মিথিলা

চলতি মাসেই কলকাতায় মুক্তি পাবে রাফিয়াত রশীদ মিথিলার ‘মায়া’। ঢাকা, কলকাতা মিলিয়ে মুক্তির অপেক্ষায় আছে তাঁর আরও চারটি সিনেমা। এ ছাড়া ঈদে তাঁকে চরকির সিরিজ ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’-এও দেখা যাবে।

‘মেঘলা’ ছবিতে মিথিলা
ফেসবুক থেকে নেওয়া

একের ভেতর তিন
উইলিয়াম শেক্‌সপিয়ারের ‘ম্যাকবেথ’-এর ছায়া অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ‘মায়া’। ছবিটিতে মাহিরা থেকে মায়ারূপে হাজির হয়েছেন মিথিলা। কীভাবে? নিজেই সে গল্প শোনালেন মিথিলা, মাহিরা মুসলিম মেয়ে। জীবনের চলার পথে নানা ধরনের বাধার মুখে পড়ে। একটা সময় মায়া হয়ে ঘুরে দাঁড়ায়। গল্পে তিনটি আলাদা সময়, আলাদা রূপে মিথিলাকে দেখা যাবে। তা ছাড়া চরিত্রটির সংলাপে হিন্দির আধিক্য আছে। কাজটি তাঁর জন্য অতটা সহজ ছিল না। চরিত্রটির প্রস্তুতি নিয়ে মিথিলা বলেন, ‘পরিচালক তাঁর ভাবনাগুলো আমাকে বলেছেন, প্রস্তুতি আমি নিজে নিজে নিয়েছি। প্রায় দুই মাস প্রস্তুতি নিয়েছি। চরিত্রটি কীভাবে তাকাবে, কীভাবে কথা বলবে, হাঁটাচলা সবই অনুশীলন করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একাধিক রূপ, বয়স ও অন্য ভাষা—এভাবে আমাকে আগে দর্শক কখনো দেখেননি। বলতে পারেন, সিনেমায় এটি আমার নতুন জন্ম।’

রাফিয়াত রশীদ মিথিলা
মিথিলার সৌজন্যে

অভিনেত্রী জানান, তিনটি চেহারার মধ্যে একটিতে তিনি ২০ থেকে ২২ বছরের মেয়ে, আরেকটিতে ৪০ বছরের, অন্যটিতে ৫৫ বছরের এক নারী। তিনটি বয়সের আলাদা চেহারা, কথা বলার ভঙ্গিও আলাদা। ছবিতে প্রায় ৭০ ভাগ সংলাপই হিন্দিতে দিতে হয়েছে। টানা শুটিং, পরপর তিনটি চরিত্রে কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হয়নি? এ প্রশ্নের উত্তরে মিথিলা বলেন, ‘এটা তো মায়ার জার্নি। এ কারণে কিছুটা সুবিধা ছিল। দিন ভাগ করে করে চরিত্রগুলোর শুটিং হয়েছে। তা ছাড়া আমার নিজের একটা সুবিধা আছে, আমি যখনই যে চরিত্রের জন্য গেটআপ নিই, সঙ্গে সঙ্গে ওই চরিত্রের মধ্যে ঢুকে যেতে পারি। ভাষা নিয়েও তেমন সমস্যা হয়নি। হিন্দিটা আমি আগে থেকেই মোটামুটি পারি।’

সিনেমা থেকে রেডিও
ভারতের জনপ্রিয় এফএম চ্যানেল রেডিও মিরচিতে প্রতি রোববার প্রচারিত হয় জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘সানডে সাসপেন্স’, যেখানে রোমাঞ্চধর্মী গল্প, উপন্যাসের বেতার নাট্যরূপ দেওয়া হয়। সেই অনুষ্ঠানে ‘মৌমাছির শোক’ নামের নাটকে কণ্ঠ দিয়েছেন মিথিলা। এই অঙ্গনে এটি তাঁর প্রথম কাজ।

আরও পড়ুন
মেয়ে আইরাও কলকাতার একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছে
মিথিলার সৌজন্যে

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দুই পর্বে প্রচারিত হয় নাটকটি। রেডিওতে কাজ নিয়ে মিথিলা বলেন, ‘সানডে সাসপেন্স অনুষ্ঠানটি দুই বাংলায়ই বেশ জনপ্রিয়। হঠাৎই আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হলো। কারণ, ওই নাটকে বাংলাদেশ থেকে আসা একটা মেয়ে চরিত্রের দরকার ছিল। আমিও রাজি হয়ে গেলাম। তা ছাড়া আগে রেডিওতে কাজ করিনি। সে অভিজ্ঞতাও নেওয়ার ইচ্ছা ছিল। প্রচারের পর দেখলাম, কলকাতা তো বটেই, বাংলাদেশেও প্রশংসা পাচ্ছি। কণ্ঠ দিয়ে অভিনয়ের ব্যাপারটি আমার ভালো লাগে। এ কারণে সিনেমার ডাবিং উপভোগ করি। কণ্ঠ দিয়ে চরিত্রটি নিয়ে খেলা যায়। অন্য রকমের মজা আছে।’

এপার-ওপার ক্লান্তিহীন
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকে চাকরির সুবাদে মিথিলাকে কখনো উগান্ডা, কখনো তানজানিয়া, সুদান—ছুটতে হয় নানা দেশ। কলকাতার পরিচালক সৃজিতের সঙ্গে বিয়ের পর মিথিলার জীবনযাপনেও পরিবর্তন এসেছে।

‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’-এ মিথিলার চরিত্রের নাম শায়লা
ছবি : চরকির সৌজন্যে

মেয়ে আইরাও কলকাতার একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তাই কাজের বাইরে বেশির ভাগ সময়ই এখন কলকাতায় থাকেন তিনি। কলকাতা ও ঢাকা দুই জায়গার কাজ নিয়েই এখন ব্যস্ত মিথিলা। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে কলকাতার সিনেমা ‘নীতিশাস্ত্র ও মেঘলা’র শুটিং। ঢাকায় করেছেন ‘নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়’ ও ‘কাজলরেখা’। ছবিগুলো মুক্তির অপেক্ষায় আছে। ঈদুল ফিতরে চরকিতে মুক্তি পাবে তাঁর সিরিজ ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’। এটি নিয়েও দারুণ আশাবাদী মিথিলা, ‘এখন সবাই অ্যালেন স্বপন চরিত্রে নাসির উদ্দিন খানকে জানছেন। এখানে আমি শায়লা চরিত্রে অভিনয় করেছি। চরিত্রটা কী ধরনের, দর্শক এখনো তা জানতে পারেননি। মুক্তির পর চরিত্রটি দেখে দর্শক অবাক হতেই পারেন।’