বাবা রাধা গোবিন্দ চৌধুরী আর কখনো বলবেন না, ‘চঞ্চল, বাবা ঘুমাইছ?’—এটা কোনোভাবেই মানতে পারছেন না অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। গতকাল বুধবার পাবনার নিজ গ্রাম কামারহাটে বাবার শেষকৃত্যের পর আজ সকালে এক ফেসবুক পোস্টে বাবাকে ঘিরে স্মৃতিচারণা করেছেন অভিনয়শিল্পী।
গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯১ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রাধা গোবিন্দ চৌধুরীর মৃত্যু হয়েছে; যিনি এলাকায় দুলাল মাস্টার নামে পরিচিত।
চঞ্চল ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শেষকৃত্য শেষে যখন বাড়ি ফিরলাম, তখন ভুলেই গিয়েছিলাম, বাবাকে তো নদীর পাড়ে রেখে এসেছি। সারা রাত দুই চোখের পাতা এক করতে পারিনি। সারা বাড়িময়, ঘরময় যেন বাবা গুটি গুটি পায়ে হেঁটে বেড়াচ্ছেন। এই বুঝি কখন আমায় ডাক দিয়ে বলবে, ‘চঞ্চল, বাবা ঘুমাইছ?’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘বাবার কোনো কথা আর কোনোদিন কানে বাজবে না, বাবাকে দেখতে পাব না—কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। যখন এই কথাগুলো লিখছি, তখন শীতের এই সকালে বাবার শালটা আমার শরীরে জড়ানো। যে জায়গায় রোদে বসে আছি, এ জায়গায় বসেই বাবা রোদ পোহাতো। রোদের উষ্ণতা নয়, বাবার শরীরের কোমল উষ্ণতা খুঁজে ফিরছি এখন, বাকি জীবনটা হয়তো এভাবেই খুঁজতে হবে।’
বার্ধক্যের কারণে চঞ্চল চৌধুরীর বাবা বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন।
গত ৬ নভেম্বর প্রথম আলোর কর্মী উৎসবে চঞ্চল চৌধুরী প্রসঙ্গক্রমে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা বার্ধক্যের কারণে ভালো নেই। ওই সময় তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি, নাটক-সিনেমা করছি। আমি যা-ই করতাম, সেগুলোর খবর প্রকাশিত হতো। সেই খবরের কাটিং বাবা ঘরের দেয়ালজুড়ে লাগিয়ে রাখত। কষ্টটা আমার এখানেই, বাবার বয়স এখন অনেক বেশি। বাবা আর প্রথম আলো কেটে আমার ইন্টারভিউটা লাগাতে পারে না!’