আপনি তো জয়া চরিত্রেই অভিনয় করছেন। পর্দার জয়া আসলে কেমন?
এটা (চরিত্র) আসলে জয়া আহসান নন। পিপলু আর খান জয়া আর শারমিন সিনেমায় জয়া আহসানকে যেভাবে দেখাতে চেয়েছেন, চরিত্রটা আসলে সেই রকম। ইটস আইডিয়া অব জয়া আহসান। আমার বাড়িটা ঠিক ওটা নয়, আমার বাড়িতে অন্য অনেক লোকজন আছে। কিন্তু সিনেমায় জয়াকে একা দেখানো হয়েছে। সেই জয়ার থেকে এই জয়ার কতটুকু আসলে নেওয়া হয়েছে, সেটা একটা বিষয়।
ছবিটির বিষয়বস্তু কী?
ব্যাকগ্রাউন্ডে কোভিডের সময়কার গল্প আছে। কোভিডের সময়েই শুটিং হয়েছে। আর এমনিতে নির্লিপ্ত সময়ের কিছু টুকরো ঘটনা আছে, কিছু মুহূর্ত আছে। গল্পের প্রধান চরিত্র দুজন নারী, যাঁদের আর্থসামাজিক অবস্থা আলাদা। কোভিডের মধ্যে একটা ঘরে বন্দী ছিলেন। এটা দুজন নারীর অন্য রকম সম্পর্কের গল্প। শারমিনের চরিত্রটি করেছেন মহসিনা আক্তার। আমরা ছাড়াও কয়েকজন অভিনেত্রী কাজ করেছেন। পিপলু (পিপলু আর খান) ভাইয়ের টিমটা দারুণ কাজ করেছে।
চরিত্রটা কেন করলেন? চরিত্রটি আপনাকে ঘিরে লেখা?
জয়া আহসান: না, চরিত্রটা আমাকে ঘিরে লেখা হয়নি। ছবিটা অনেকখানি মহসিনার ওপরে। আমি ছবিটির প্রযোজক। আমাকে ঘিরে লেখা না হলে করব না, ব্যাপারটা তা-ও নয়। ছবিটা করার মূল কারণ হলো, কোভিডের মধ্যে আর্টিস্ট হিসেবে ব্লক হয়ে যাচ্ছিলাম। বাইরে বের হতে পারছিলাম না, অভিনয় করতে পারব কি না, সেটা বুঝতে পারছিলাম না। সেই জায়গা থেকে কাজটা করেছি। কাজটার মধ্যে রিলিজ, রিলিফ ও এক্সপেরিমেন্ট ছিল।
বলা হয়, তারকাখ্যাতির বলয় তারকাদের অনেকটা একা করে ফেলে। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে ডিল করেন?
জয়া আহসান: এটা সিস্টেমের ভেতরে পড়ে গেছে। এই ছবিতে কিন্তু তারকা জয়া আহসানকে নয়, আর্টিস্ট জয়া আহসানকে দেখানো হয়েছে। এটা (ডিল) করতে করতে সাবধান হয়ে গেছি। আমি আশপাশের মানুষ ভালোবাসি। মানুষের সঙ্গে যদি না-ই মিশি, তাহলে তো মানুষ থেকে দূরে চলে গেলাম। মানুষ দেখা, মানুষের সংস্পর্শে থাকা আমার জন্য খুব প্রয়োজন। মানুষ যত পাহাড়ের উঁচুতে উঠতে থাকে, তত একা হয়ে যেতে থাকে। আবার ওপর থেকে নিচের দিকে দেখাটা ইন্টারেস্টিং। আমি আসলে অনেক মানুষ ভালোবাসি তো, ফলে মানুষের ভেতর থাকতে আমার ভালো লাগে। আমার কোনো অসুবিধা হয় না। আমি রাস্তাঘাটে, সব জায়গায় একাই চলি-ফিরি। আমার তো সেই সেলিব্রিটি লেভেলের ক্রেজ নেই; আমাকে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা আর্টিস্ট হিসেবে ভালোবাসেন।
‘গেরিলা’র বিলকিস থেকে ‘বিসর্জন’–এর পদ্মা—আপনাকে বরাবরই বলিষ্ঠ চরিত্রে পাওয়া গেছে। আপনি তো সচেতনভাবেই নারীপ্রধান গল্প নির্বাচন করেন...
জয়া আহসান: এখন আমার বাইরেও অনেক নারীপ্রধান কাজ হচ্ছে। শুধু নারীপ্রধান চরিত্রেই কাজ করতে হবে, তা নয়। আমি অনেক ছবিতে কাজ করেছি, যেখানে চরিত্রটা আগে আসে। চরিত্রটা গল্পের জন্য প্রয়োজন কি না, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে নারীপ্রধান চরিত্রের কাজ খুব কম হয়।
বাইরে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীপ্রধান সিনেমা হলেও ঢালিউড পুরুষপ্রধান চরিত্রের ছায়া থেকে বেরোতে পারেনি। এর পেছনে কী কারণ দেখেন?
জয়া আহসান: আমাদের সমাজব্যবস্থা। পাশের দেশে কিংবা পশ্চিমা বিশ্বে একই অবস্থা। নারীরা যেন একটু দ্বিতীয় সারিতে দাঁড়ানো। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় নিজের মতো করে অনেকে বলছেন। নকশীকাঁথার জমিন, দেবী, গেরিলা সিনেমায় নারীপ্রধান চরিত্র করার চেষ্টা করেছি। এখন এত পুরুষপ্রধান চরিত্র, থ্রিলার, অ্যাকশনধর্মী ছবির ভিড়ে জয়া আর শারমিন রিলিজ করেছে, এতেই তো আমরা বেশ এগিয়ে আছি। আমাদের চেষ্টাটা আছে।
ঈদে আপনার আরেক সিনেমা ‘উৎসব’ মুক্তি পাচ্ছে। ছবিটিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
জয়া আহসান: ইন্টারেস্টিং চরিত্রে কাজ করছি। গল্পটা অসাধারণ। আমাদের অনেক গুণী অভিনয়শিল্পী এ সিনেমায় কাজ করেছেন। অল্প কাজ ছিল আমার, কাজটা করে আনন্দ পেয়েছি।