মোবাইলে কথা বলতে বলতে পড়ে গেলেন শাবনূর, পায়ে প্লাস্টার
মোবাইলে কথা বলতে বলতে হাঁটছিলেন, অসাবধানতাবশত রাস্তায় পড়ে গিয়ে পা মচকে যায়। পরে জানা যায়, টিস্যুতেও ক্ষতি হয়েছে। এখন পায়ে প্লাস্টার, হাঁটতে হচ্ছে ক্রাচে ভর দিয়ে। সিডনিতে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা জানিয়ে শাবনূর বললেন, ‘ব্যথাটা পেয়ে আমার আক্কেল হয়েছে, জীবনে কোনো দিন কোথাও হাঁটতে–চলতে গিয়ে মোবাইল দেখব না।’
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির ল্যাকেম্বার একটি রাস্তায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। আজ দুপুরে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে জানা যায়, শাবনূরের এই দুর্ঘটনার খবর। তিনি জানালেন, গত শনিবার সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর পায়ের প্লাস্টার করিয়েছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যথানাশক ওষুধ খাচ্ছেন। দুই সপ্তাহ পায়ে প্লাস্টার রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা ১টায় কথা হয় শাবনূরের সঙ্গে। তখন তিনি ছোট বোন ঝুমুরের বাসায়। কথা প্রসঙ্গে শাবনূর জানালেন, গত শনিবার ল্যাকেম্বায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে সেদিন আর বাসায় ফেরেননি। পরিবারের অন্য সদস্যরাও ছিলেন। পরদিন ছেলে আইজান নেহানকে পাশের একটি মাঠে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত পান।
শাবনূর বললেন, ‘আমি মোবাইলে কথা বলতে বলতে ল্যাকেম্বার রাস্তায় হাঁটছিলাম। একপর্যায়ে অসাবধানতাবশত ফুটপাত থেকে পড়ে যাই। পা মচকে যায়। হাঁটুর চামড়াও ছিলে গেছে। ব্যথায় এমন অবস্থা হয়, ওঠার মতো শক্তি ছিল না। তারপর হেল্প নিয়ে চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। জানতে পারি, টিস্যুতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর পায়ে প্লাস্টার করে দেওয়া হয়। ব্যথানাশক ওষুধও দেওয়া হয়েছে। আমাকে এখন ক্রাচে ভর দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে।’
মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনায় শাবনূরের উপলব্ধি হয়েছে বলেও জানালেন।
তিনি বললেন, ‘আমার এই দুর্ঘটনা সমাজের জন্য একটা বার্তা। ব্যথাটা পেয়ে আমার আক্কেল হয়েছে, জীবনে কোনো দিন কোথাও হাঁটতে–চলতে গিয়ে মোবাইল দেখব না। গাড়ি চালানোর সময়ও মোবাইল দেখব না। আজ আমার হয়তো অল্প কিছুর ওপর দিয়ে গেছে। যদি গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটত, তাহলে আমার কারণে অন্য কোনো একটা মানুষেরও বিশাল বিপদ হতে পারত। আমিও মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়তে পারতাম। পথ চলতে গিয়ে এই মোবাইল দেখার সময় দুর্ঘটনায় আমার পা-টা ইনজুরি হয়েছে, এর জন্য আরও ভয়ংকর কিছুও হতে পারত।’
অনেক বছর ধরেই অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পরিবার নিয়ে থাকেন শাবনূর। তবে সময়–সুযোগ পেলেই ঢাকায় আসেন। কোভিড সংক্রমণের কারণে তিন বছর দেশে আসা হয়নি। ২০২৩ সালে আসার পর এই তারকাকে নিয়ে নতুন সিনেমার ঘোষণা দেন পরিচালক ও প্রযোজক। গত বছরের এপ্রিলে ‘রঙ্গনা’ দিয়ে ক্যামেরার সামনে ফিরেছিলেন শাবনূর। টানা ছয় দিন শুটিংও করেছিলেন। এর পর থেকে বন্ধ সিনেমাটির কাজ। চলতি বছরের শুরুতে খবর ছড়িয়েছিল, ‘রঙ্গনা’ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তবে এমন খবরকে ‘গুজব’ বলে জানিয়েছিলেন শাবনূর। কারও কথায় বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধও করেছিলেন এই ঢালিউড তারকা।
ঢাকার একটি অভিজাত ক্লাবে ‘রঙ্গনা’ সিনেমার মহরত শেষে শুটিং শুরু হয়। ‘রঙ্গনা’ পরিচালক আরাফাত হোসাইন জানান, তাঁরই পরিচালিত আরেকটি ছবি ‘এখনো ভালোবাসি’তেও অভিনয় করবেন শাবনূর। কাছাকাছি সময়ে জানা যায়, চয়নিকা চৌধুরীর ‘মাতাল হাওয়া’ ছবিতেও অভিনয় করবেন। ঘোষণা ও শুটিং শুরুর পর বছর পার হলেও ছবি তিনটির সেই অর্থে কোনো অগ্রগতি নেই। এদিকে শাবনূরও এখন দেশে নেই। মাঝখানে আট ঘণ্টার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। এসেই অসুস্থ মাকে নিয়ে উড়াল দেন এই নায়িকা। এদিকে চলচ্চিত্র অঙ্গনের কেউ কেউ বলছেন, শাবনূরের তিন ছবির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এমনটা মানতে নারাজ তিন ছবির দুই পরিচালক।