নারী ফুটবলারদের নিয়ে ভাবনার অন্যরকম সকাল

আশনা হাবিব ভাবনা ও অধিনায়ক সাবিনা খাতুন
ছবি: সংগৃহীত

অপেক্ষায় ছিলেন ভাবনা। এই অপেক্ষা বাংলাদেশের জন্য সম্মান বয়ে আনা নারী ফুটবলারদের জন্য। অবশেষে আজ সকালে এ অভিনেত্রী ভালোবাসা জানানোর জন্য ছুটে গেলেন মতিঝিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন অফিসে। কেক কাটলেন নারী ফুটবল খেলোয়াড়দের সঙ্গে। এ সময় একসঙ্গে মেতে উঠেছিলেন স্লোগানে, ‘আমাদের আর কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না।’

নারী ফুটবলারদের সঙ্গে ভাবনা
ছবি: সংগৃহীত

ভাবনা জানান, আজ সকালে একসঙ্গে কেক কেটেছেন। সময়টা তাঁর জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত হয়ে থাকবে। কারণ, এই বিজয় দেশের নারীদের জন্য শক্তি বাড়িয়ে দেবে, সাহস দেবে—নারীদের পথ চলায়। ভাবনা বলেন, ‘আমার অপেক্ষার কারণ ছিল চিৎকার করে মেয়েগুলোর সঙ্গে বলব, আমরাও পারি। কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবা না। মেয়েরা সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী হয়েছেন। এ শুধু একটি টুর্নামেন্টে বিজয় নয়, নারীর প্রতি অবমাননা, নারীকে হেয় করার প্রবণতা, পুরুষতান্ত্রিক নৃশংসতা—এসবেরই জবাব বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই বিজয়।’

ফুটবলার তহুরা, আশনা হাবিব ভাবনা ও আরেক ফুটবলার ঋতুপর্ণা
ছবি: সংগৃহীত

বাফুফেতে যাওয়ার পর থেকেই নারী ফুটবলাররা তাঁর সঙ্গে ছবি উঠাতে চাইছিলেন। তখন ভাবনা উল্টো তাঁদের সঙ্গে ছবি তোলেন। ভাবনার মতে, তাঁরাই সমাজের আসল তারকা। তাঁদের এখানে আসতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। পদে পদে বাধা পেরিয়ে আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘শুনেছি ক্রীড়াঙ্গনে পা ফেলতে হলে নারীদের পদে পদে নানা দিক থেকে বাধা আসে। প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হয়। বাধার প্রাচীর দুমড়েমুচড়ে নারী খেলোয়াড়দের এগিয়ে যেতে হয়, এগুলো আমাদের এখন সবার জানা। রক্ষণশীল, পশ্চাৎপদ পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা ভাবনাজগৎকে গ্রাস করতে থাকলে মুক্তি মেলে না। আমরা এখন সেই মানসিকতার বিরুদ্ধে একটু একটু করে জয়ী হতে চলেছি। তাঁদের এই পথ চলার শুরুটা খালি চোখে দেখা যাবে না। এটা মনের চোখ দিয়ে দেখতে হবে।’

দেশের জন্য এমন সম্মান বয়ে আনায় গর্বে এক সময় অধিনায়ককে চুমু দেন ভাবনা
ছবি: সংগৃহীত

এই সময় একসঙ্গে কেক কেটে সবাইকে কেক খাওয়ান ভাবনা। পরে সবার সঙ্গে কিছুটা সময় কথাও বলেছেন। নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের কাছে অনুভূতি জানতে চান ভাবনা। তখন সাবিনা জানান, ‘সবাই এত ভালোবাসা জানাচ্ছে, এত সাপোর্ট দিচ্ছে, এটা তাঁদের চলার পথে অসাধারণ প্রত্যয় জোগাবে। এই সহযোগিতাই তাঁরা চেয়েছিলেন।’ ভাবনা আরও বলেন, ‘নায়িকা, গায়িকা বা পরিবারের গৃহিণী এসব নারীরা একটু সাপোর্ট পেলে জীবনটাই অন্যরকম হতো। তাঁদের সঙ্গে দেখা করে আমি খুবই এক্সসাইটেড। আমার কাছে মনে হলো অন্যরকম একটা শক্তি নিয়ে বাসায় ফিরলাম। সবার জন্য শুভ কামনা।’

নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নারীদের সাফ শিরোপা অর্জন করে বাংলাদেশ। পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ২৩ গোল করে। টুর্নামেন্টে অপরাজিত বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপ, পাকিস্তান ও ভারতকে হারায়। গত বুধবার দেশে ফেরার পর সাফ চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের উষ্ণ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।