নিজের জন্য কিছুই কেনেননি সুনেরা

সুনেরা বিনতে কামাল। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

বড় হয়ে যাওয়ায় ঈদটা এখন আর আগের মতো নেই। তবে এখনো আগের মতোই শৈশবের ঈদকে ফিরে পেতে চান অভিনেত্রী সুনেরা বিনতে কামাল। কিন্তু বাস্তবতা সেই অবসর দেয় না। ২৬ মার্চ পর্যন্ত টানা ব্যস্ততা ছিল ঈদুল আজহার একটি সিনেমার শুটিং ঘিরে। শুটিং শেষে এখন সুনেরা ব্যস্ত ঈদুল ফিতরের সিনেমা ‘দাগি’ নিয়ে। সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে এই অভিনেত্রীকে। এর মধ্যেই ঈদের কেনাকাটা, ঈদ সালামিসহ নানা প্রসঙ্গে কথা বললেন এই অভিনেত্রী।

সুনেরা বিনতে কামাল জানালেন, কাজের ভারে ক্লান্ত। ঠিকমতো নাকি ঘুমও হচ্ছে না। অথচ কয়েক বছর আগেও এই সময়ে ব্যস্ত থাকতেন ঈদের কেনাকাটা নিয়ে, বাড়তি কোনো চিন্তা ছিল না।। ঈদ ঘিরেই থাকত পুরো পরিকল্পনা।

সুনেরা বিনতে কামাল। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

সুনেরা বলেন, ‘এবার অন্য বছরের তুলনায় ব্যস্ততা বেশি। ব্যস্ততা এটাই মনে করিয়ে দেয়, এখন দায়িত্ব বাড়ছে। পরিবারের কে কোথায় ঈদ করছে সেটা খেয়াল করতে হচ্ছে। বাবা দাদাবাড়ি রয়েছে। সেখানে বাবার জন্য পোশাক কিনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদের টাকা পাঠিয়ে দিয়েছি। এর মধ্যে শিগগিরই মায়ের জন্য কেনাকাটা করব।’
কেনাকাটার এই ভিড়ে নিজের জন্য এখনো কিছু কিনতে পারেননি। সুনেরা জানালেন, এখন অন্যদের জন্য কিছু কিনতেই ভালো লাগে। নিজেকে নিয়ে খুব বেশি ভাবার সময় পান না। ‘পরিবারের সবাইকে কিছু না কিছু দিতে হয়। সবার জন্য এখন কিছু করতে পারলেই নিজের জন্য করা মনে হয়। আমি এখনো জানি না আমার জন্য কিছু কেনা হবে কি না। এখনো আমি কিছু নিজের জন্য কিনিনি। কেনা হবে কি না জানি না। কিছু পোশাক উপহার পেয়েছি, সেগুলো দিয়েই হয়তো ঈদ কাটিয়ে দেব।’

সুনেরা বিনতে কামাল। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

ঈদ এলেই মিস করেন সালামির কথা। পরিবারের বড়রা নামাজ পড়তে গেলে দ্রুত ঘুম থেকে উঠে তৈরি হতেন সালামি নেওয়ার জন্য। সুনেরা বলেন, ‘গোসল করে নতুন পোশাক পরে অপেক্ষায় থাকতাম কখন নামাজ শেষ হবে। তারপর সবার কাছ থেকে লাইন ধরে সালামি নিতাম। মামাবাড়িতে আমরা বেশি ঈদ করেছি। মামাবাড়ি থেকে সবচেয়ে বেশি সালামি পেয়েছি। সব সালামি জমিয়ে আম্মুর কাছে রাখতাম। কিন্তু সেই সালামি আর কখনোই পেতাম না (হাসি)। দেখা যেত বিভিন্নভাবে খরচ হয়ে যেত, হাওয়া হয়ে যেত। এ নিয়ে মন খারাপ করতাম। এগুলো নিয়ে এখন অনেক মজা হয়।’

সুনেরা বিনতে কামাল। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

শৈশবে নিজের মতো করে চলার সেই স্বাধীনতা এখনো খুব মিস করেন সুনেরা। তখন কোনো দায়িত্ব ছিল না। অল্পতে খুশি থাকতেন। মন খুলে কাজিনদের সঙ্গে ছুটে চলার সেই দিন খুব মিস করেন। শৈশবের ঈদের স্মৃতি নিয়ে এই নায়িকা আরও বলেন, ‘শৈশবে আমার জন্য সবকিছুই দেখা যেত মা কিনতেন। পরে আমি সেগুলো বাসায় এনে মাকেও দেখাতাম না। বাসায় এনে লুকিয়ে রাখতাম। তখন মনে হতো, মায়ের কাছে রাখলে যদি মা অন্য কাজিনদের দেখায় তাহলে সবাই আমার ম্যাচিং করে কেনা নিয়ে জেনে যাবে। এ জন্য শুধু নিজেই দেখতাম।’

সুনেরা বিনতে কামাল। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

ঈদে মুক্তি পাচ্ছে সুনেরার সিনেমা ‘দাগি’। আফরান নিশো, তমা মির্জার সঙ্গে পর্দায় তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে। এখন টানা সিনেমাটির প্রচারণা চালিয়ে যেতে চান সুনেরা। এর কারণ, ‘দাগি’র প্রতি তাঁর অন্য রকম ভালোবাসা জন্মেছে। এই সিনেমায় অভিনয় না করলেও চাইতেন সিনেমাটি সফল হোক। সুনেরা বলেন, ‘“দাগি” এত ভালো গল্পের ছবি যে আমি এতে অভিনয় না করলেও সবার আগে গিয়ে এই সিনেমা দেখতাম। আমি ঈদের দিন আগে “দাগি” দেখব। সিনেমাটি দর্শক গ্রহণ করবেন।’

‘দাগি’র প্রচারে সহশিল্পীদের সঙ্গে সুনেরা বিনতে কামাল। ছবি: ফেসবুক থেকে