‘শপথ পড়াতে ডাকা হয়নি, অপমানিত হয়ে চলে গিয়েছি'

খোরশেদ আলম। সংগৃহীত

চলচ্চিত্র শিল্প সমিতি এমন একটি সংগঠন, যা অলাভজনক। শিল্পীদের কল্যাণে কাজ করাই এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য। এখানে মারামারি-ঝগড়াঝাঁটি কিংবা রেষারেষি—কোনোটিই থাকার কথা নয়। কিন্তু এই অলাভজনক সংগঠনের নির্বাচন নিয়েও বহু জলঘোলা আর কাদা-ছোড়াছুড়ির মতো ঘটনা ঘটছে। এমন মন্তব্য চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।

আরও পড়ুন

এবারের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ, ফল ঘোষণা—সবই ছিল শান্তিপূর্ণ। ঝামেলা শুরু হয় গত মঙ্গলবার, শপথ অনুষ্ঠানের দিন। এদিন বিকেলে অনুষ্ঠিত এই শপথে নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথ পড়িয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, যে কাজ তাঁর করার কথা ছিল না। সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী শপথ পড়ানোর কথা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা খোরশেদ আলম।

উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও শপথ পড়াতে ডাকা হয়নি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে। কাজী হায়াৎ যখন শপথ পড়াচ্ছিলেন, সেই ঘটনা দেখে সেখানে আর উপস্থিত থাকতে পারেননি খোরশেদ আলম। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়ে দ্রুতই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথাও বলেছেন তিনি।

দেশ টেলিভিশনকে দেওয়া অডিও বার্তায় খোরশেদ আলম বলেন, ‘শপথের দিন আমি উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু আমাকে ডাকেনি। এটা সংগঠনগুলোর এটা একটি নিয়ম, যিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার, তিনি শপথবাক্য পাঠ করান। সেখানে আমি থাকা অবস্থায় যখন দেখলাম, তারা আমাকে কিছু বলছে না, ডাকছে না। যখন কাজী হায়াৎ সাহেবের নাম ঘোষণা দিল, তখন আমি চলে এলাম, কিছুটা অপমানিত বোধ করে চলে এলাম। আমার মেয়াদকাল ছিল। কাজী হায়াতের কি মেয়াদ আছে?

খোরশেদ আলম। সংগৃহীত

এটা সংকীর্ণ মনমানসিকতার পরিচয় ছাড়া কিছুই নয়। হয়তো ইশারা-ইঙ্গিতে হয়েছে। কারণ, আগের দিনই সভাপতি বলেছে, শপথ আমিই পড়াব। তারপর সেখান থেকে সরে আসছে। ওনার কথামতো আমি উপস্থিত ছিলাম। এটা তো নিয়ম। নির্বাচন কমিশন অপারগতা প্রকাশ করলে আগের মেয়াদের সভাপতি দিয়ে পড়ানোর কথা। তখন ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেব পড়াতেন। এটাই নীতি। কিন্তু তারা যা খুশি তা-ই করল।’

এ সময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হওয়া প্রসঙ্গে এই প্রযোজকনেতা বলেন, ‘নির্বাচিত সব সদস্যরা কীভাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাল? এটা সম্পূর্ণই অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। এটা হওয়া উচিত ছিল না। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবশ্যই ধৈর্যশীল হওয়া উচিত ছিল। একজন সাংবাদিকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সবার রক্ত ঝরাবে, সেটা হতে পারে না। প্রয়োজনে ওই সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে বোঝাতে পারত, তাঁকে নিয়ে বসতে পারত। সেটাও করেনি। তা না করে বিষয়টা মারামারির পর্যায়ে গেল, এটা খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা।’

মঙ্গলবার শপথ অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের ওপর শিল্পী সমিতির সদস্যরা হামলে পড়েন। বাগ্‌বিতণ্ডা গড়ায় মারামারি পর্যন্ত। বিষয়টি নিয়ে সরগরম মিডিয়াপাড়া। এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছেন সাংবাদিক থেকে শুরু করে শিল্পীরাও। প্রতিবাদে মানববন্ধনও করেছেন সাংবাদিকেরা।