শেষবার এফডিসিতে প্রবীর মিত্র, ঘুমাবেন আজিমপুরে

সোমবার শেষবারের মতো এফডিসিতে এলেনকোলাজ

পাঁচ দশকের বেশি সময়ের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার। এ সময়ে চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন প্রবীর মিত্র। এফডিসিতে কত শুটিং, আড্ডায় কেটেছে তাঁর সময়। সোমবার শেষবারের মতো এলেন সেখানে। তবে লাশবাহী ফ্রিজার ভ্যানে, নিথর মরদেহ। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে শেষবারের মতো এফডিসি ছেড়ে যান এ খ্যাতিমান অভিনেতা।
এদিন শেষবারের মতো প্রবীর মিত্রকে দেখতে এফডিসিতে আসেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী থেকে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন পেশার মানুষ। চিত্রনায়ক আলমগীর, উজ্জ্বল, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিশা সওদাগর থেকে এ সময়ের ইমন, বাপ্পীরা। জানাজার আগে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় কফিনে।
জানাজার আগে পরিবারের পক্ষ থেকে কথা বলেন প্রবীর মিত্রের বড় ছেলে মিথুন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবার কোনো কথা বা আচরণে যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাহলে মাফ করে দেবেন।’ তিনি জানান, তাঁর বাবা বিয়ের আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁর মুসলিম নাম হাসান ইমাম।
শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘দাদা আমাদের মুরব্বি। তাঁর কাছ থেকে আমরা শিখেছি কীভাবে সিনিয়রদের সম্মান করতে হয়। তাঁর জন্য সবাই দোয়া করবেন।’

আরও পড়ুন

জানাজা শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘নিরহংকারী মানুষ ছিলেন তিনি। কখনো কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে দেখিনি তাঁকে। খুবই নরম ভাষায় কথা বলতেন। তাঁকে হারানোর ক্ষত পূরণ হওয়ার নয়। সবাই তাঁর জন্য দোয়া করবেন। এখনো সিনিয়র যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের জন্যও দোয়া রাখবেন।’

প্রবীর মিত্রকে দেখতে এফডিসিতে আসেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী থেকে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন পেশার মানুষ
প্রথম আলো
আরও পড়ুন

এদিন সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়েন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী। এই নায়ক বলেন, ‘আজ এত মানুষ, মিডিয়া, শোবিজের মানুষ দেখে আমি অবাক হচ্ছি। উনি থাকাকালীন জন্মদিন কিংবা বিশেষ দিনগুলোতে যদি সবাই তাঁর খোঁজ করতেন। আমরা কতজন তাঁর খবর নিয়েছি। এই যে আমরা বলি না চলচ্চিত্র পরিবার—আমি তা বিশ্বাস করি না।

আরও পড়ুন

পরিবার হলে গত এক বছরে কতজন প্রবীরদার খোঁজ নিয়েছি, দেখা করেছি? এভাবে একজন একজন করে আমাদের পথপ্রদর্শকেরা চলে যাচ্ছেন। দেশবাসীসহ চলচ্চিত্রের সবার প্রতি আহ্বান, এখনো অগ্রজদের মধ্যে যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁরা যেন প্রাপ্য সম্মানটা পান।’

নায়িকা রোমানা মুক্তি বলেন, ‘আমাদের শিল্পীদের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্কটা আরও শক্ত হওয়া উচিত। আমরা যখন একসঙ্গে কাজ করি, তখন সবাই সবার সঙ্গে থাকি, পাশে থাকি। কিন্তু কেউ অসুস্থ হলে অনেক সময় আর খোঁজ রাখি না। এমন হওয়া উচিত নয়।’
এফডিসির পর প্রবীর মিত্রের দ্বিতীয় জানাজা হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে এ অভিনেতাকে। সেখান থেকে আজিমপুর কবরস্থানে নেয়া হয়। বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে তাঁর দাফন হয়। আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত বাংলা চলচ্চিত্রের গুণী এই শিল্পী।