ঈদের সিনেমা নিয়ে আলোচনা

নেত্রী: দ্য লিডার, ওমর এবং রাজকুমার—ঈদে তিনটি সিনেমা মুক্তি পেতে পারে। পোস্টারকোলাজ

ঈদুল ফিতরের বাকি আরও তিন মাস। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য দিনক্ষণ হলেও এখনই মুক্তিপ্রতীক্ষিত সিনেমা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। ইতিমধ্যে একাধিক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ঘোষণা করেছে তাদের সম্ভাব্য সিনেমার নাম। তালিকায় আধা ডজন সিনেমার কথা শোনা যাচ্ছে। এ তালিকায় ‘রাজকুমার’, ‘ওমর’, ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’, ‘জামদানী’, ‘নেত্রী: দ্য লিডার’ সিনেমার নাম জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, হাঁকডাক থাকলেও শেষ মুহূর্তে অনেকে সিনেমা মুক্তি থেকে সরেও যেতে পারেন। আবার এ–ও শোনা যাচ্ছে, প্রত্যাশিত প্রেক্ষাগৃহ পেলে ছবি মুক্তি দিতে বাধা নেই। কেউ আবার ঈদ লক্ষ্য করেই সিনেমা বানাচ্ছেন। কোনোভাবেই তাঁরা ঈদের মতো বড় উৎসব থেকে সরবেন না বলেও জানিয়েছেন।

ঈদ উৎসব মানেই যেন শাকিব খানের সিনেমা। একটা সময় এক ঈদেই এই তারকার পাঁচটি ছবিও মুক্তি পেত। এদিকে গত এক দশকের ঈদে হল বুকিংয়ের তথ্য থেকে জানা যায়, ঈদে ৮০ ভাগ সিনেমা হলে শাকিব খান অভিনীত সিনেমার দাপট থাকে।

এবারও ঢালিউডে ঈদের সিনেমা ঘিরে আলোচনা বাড়লেও শেষ মুহূর্তে আগের পরিস্থিতি দেখতে হয় কি না, সেটা নিয়েই চিন্তিত অনেকে। এদিকে ঈদের সিনেমার শুটিং নিয়ে এখন টানা ব্যস্ত শাকিব খান। ডিসেম্বরের শেষের দিকে এই তারকা পাবনা জেলায় ‘রাজকুমার’ সিনেমার শুটিং শুরু করেন। পরিচালক হিমেল আশরাফ জানান, প্রথম ধাপে ১০ দিনের মতো শুটিং হয়েছে। এরপরে সিনেমাটির শুটিং হবে ভারতের হায়দরাবাদে। সেখান থেকে সিনেমাটির তৃতীয় অংশের শুটিং হবে যুক্তরাষ্ট্রে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই টানা সিনেমাটির শুটিং শেষ করতে চায় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভার্সেটাইল মিডিয়া।

বছরের শেষ দিনে ‘ওমর’ সিনেমার পোস্টার মুক্তি পায়। এর পর থেকে আলোচনায় আসে সিনেমাটি। এই সিনেমায় মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন শরীফুল রাজ। সঙ্গে আছেন ফজলুর রহমান বাবু, শহীদুজ্জামান সেলিম, নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ। ঈদে মুক্তি দেওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে এই সিনেমা। টানা ২৫ দিনে ছবিটির শুটিং শেষ হয়। এর মধ্যে ডাবিংও শেষ। শুটিং–পরবর্তী অন্যান্য কাজ চলছে ভারতে। এই সিনেমার পরিচালক মোস্তফা কামাল রাজ বলেন, ‘আমাদের সিনেমার সব কাজ শেষের দিকে। আমরা পুরো প্রস্তুত সিনেমাটি হলে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে প্রচার শুরু করব। তবে ঈদের সিনেমা নিয়ে একটা চাপ সব সময় থাকে।

এসব বিষয় মাথায় নিয়ে আমরা অনেক আগেই ঈদ লক্ষ্য করে সিনেমা বানিয়েছি।’
২০০৯ সালে ঢাকার আজিমপুরে একটি চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটে। সে সময় ঘটনাটি আলোড়ন সৃষ্টি করে। সেই ঘটনা নিয়ে পাঁচ বছর ধরে চিত্রনাট্য তৈরি করেন সানী সানোয়ার। গত বছরের নভেম্বরে ঘোষণা দেন আজিমপুরের ঘটনা নিয়েই ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’ নামে সিনেমা বানাচ্ছেন। ঘোষণার পরের মাস ডিসেম্বরে সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়। সিনেমায় পুলিশ কর্মকর্তা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। সিনেমাটি ঈদে মুক্তি দিতে চায় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। পরিচালক সানী সানোয়ার বলেন, ‘আমরা ঈদে সিনেমাটি মুক্তি দেব। দুই ধাপের শুটিং শেষ করেছি। প্রায় ৬০ ভাগ শুটিং শেষ। সেগুলো নিয়ে পোস্টের কাজ এগিয়ে নিচ্ছি। এই মাসের শেষের দিকে আমরা তৃতীয় ধাপের শুটিং করব। এর মধ্যে নিয়মিত আমরা প্রচারে থাকব।’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সিনেমা মুক্তির জন্য পরিচালক ও প্রযোজকদের অনেকেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁরা জানান, এত আগে ঈদের সিনেমা নিয়ে মাতামাতি আগে দেখিনি। সিনেমার জন্য এটাকে ভালো বলছেন কেউ কেউ। প্রদর্শক সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ‘ঈদের সিনেমা নিয়ে আলোচনা হবেই। অনেকেই কথা বলবেন। কেউ কেউ মুক্তি থেকে পিছিয়ে যাবেন। এগুলো কোনো সমস্যা নয়। আমাদের সিনেমা হলের যে সংকট, সেটাই বড় সমস্যা।’ এদিকে প্রযোজক সমিতির অফিস সূত্রে জানা যায়, ঈদুল ফিতরের জন্য এখনো কোনো সিনেমার নাম কেউ নিবন্ধন করেননি।