হৃদিতার কথা ছড়িয়ে পড়বে ...

‘হৃদিতা’ ছবিতে পূজা চেরি

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর। অনেক দূরে দূরে আলাদা আলাদা দ্বীপের মতো ভেসে আছে গ্রাম। তীব্র রোদ। জলের সঙ্গে রোদের লুকোচুরি খেলা। এর মধ্যেই হাওরের মাঝখানে একটি নৌকা ঘিরে চলছে শুটিং। ‘হৃদিতা’র গানের শুটিং। সুরে সুরে প্রেমের গল্প বুনছেন দুজন। রোদের তীব্রতাকেও হার মানিয়েছে তাঁদের ভালোবাসার গল্প। সুরে সুরে প্রেমের গল্প বোনা মেয়েটি পূজা চেরি, ছেলেটি এ বি এম সুমন।
চার-পাঁচ মাস আগে হাওরে হয়েছিল এই শুটিং। ছবিটি মুক্তির আগে সে সময়ের স্মৃতিচারণা করে পূজা চেরি বললেন, ‘শুটিংয়ে অনেক কষ্ট হয়েছিল। তবে সেই কষ্টের মধ্যেও ছবিটি নিয়ে আনন্দ ছিল। হাওরের মাঝখানে শুটিং হয়েছে। চাইলেও যে শুটিংয়ের ফাঁকে ডাঙায় গিয়ে একটু বিশ্রাম নেব, সে সুযোগ ছিল না। মাথার ওপর তীব্র রোদ, প্রচণ্ড গরম। দেখতে খুব সমস্যা হচ্ছিল। একটা সময় চোখ ব্যথা শুরু করে। কিন্তু শুটিং তো শেষ করতে হবে। পানিতে শুটিং শিল্পীদের জন্য যেমন কষ্টের, তেমন ক্যামেরা চালানোও ঝামেলা। কারণ, ঠিকঠাক দৃশ্য ধারণের জন্য একই দৃশ্য অনেকবার নিতে হয়।’ পূজা জানান, হাওরে টানা দুই দিন সেই গানের শুটিং করে ঢাকায় ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

কষ্ট হলেও ছবিটিতে কাজ করতে পারাটা ছিল পূজার জন্য আনন্দের। কেন? কারণ, এটি আনিসুল হকের গল্পের ছবি। ছোটবেলা থেকেই আনিসুল হকের লেখা তাঁর পছন্দ, জানালেন ‘হৃদিতা’ পূজা চেরি, ‘যখন প্রস্তাব আসে আর জানতে পারি চিত্রনাট্যটি আনিসুল হকের উপন্যাসের থেকে লেখা হয়েছে, আর কোনো চিন্তা করিনি। রাজি হয়ে গেছি। কারণ, যখন ছোট ছিলাম, কিশোর আলোর অনেক অনুষ্ঠানে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই স্যারের সঙ্গে আমার পরিচয়, তাঁর গল্পের প্রতি ভালো লাগা।’
ছবিটি নিয়ে পূজার দারুণ প্রত্যাশা, ‘ছবিটির শুটিংয়ের আগে আগে আনিসুল হক স্যারের মুখ থেকে শুনেছিলাম, যখন গল্পটি লেখেন, তখন তিনি কেঁদেছেন। কেন কেঁদেছেন, শুটিংয়ের সময় টের পেয়েছি। ডাব করতে বসে আমার চোখেও জল এসেছিল।’

হৃদিতা’ ছবিতে এ বি এম ও পূজা চেরি

হৃদিতা সম্পর্কে এই অভিনেত্রীর মন্তব্য, ‘এটি একটি বিশুদ্ধ প্রেমের ছবি। তরুণ–তরুণীদের ছবি। সব শ্রেণির দর্শকের পছন্দ হবে। তবে তরুণদের বেশি পছন্দ হবে। তরুণেরা হলে ছবিটি দেখতে এলেই হৃদিতার কথা চারপাশে ছড়িয়ে পড়বে। ছবিটিতে কাজ করে সেই বিশ্বাস আমার হয়েছে।’

ছবির কাহিনিকার ও সংলাপ রচয়িতা আনিসুল হক মনে করেন, সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ছবি দর্শকের কাছে আলোচিত হয়েছে বা হচ্ছে, সেগুলোর কোনো কোনো অংশে মাদক, সাইকো, গালাগালি—এসব ব্যাপার আছে। সেসব থেকে বেরিয়ে এটি একেবারেই নিটোল প্রেমের ছবি। এখন আমরা এ ধরনের ভালোবাসার ছবি দেখি না।  কিন্তু একসময় তো প্রচুর চিরায়ত প্রেমের ছবি আমরা দেখেছি। ভালো লেগেছে। সেই ধরনের ছবি ‘হৃদিতা’।
ছবিটি নিয়ে আনিসুল হক আরও বলেন, ‘এটি সরল এবং সুন্দর একটা ছবি। এর মধ্যে কোনো আলগা বাহাদুরি নেই। সরলভাবে বলা গল্প। কোনো পুরস্কারে বা উৎসবের  ছবি এটি নয়। এটি দর্শকের ছবি। দেখে কান ও চোখের আরাম হবে, প্রশান্তি পাবেন দর্শক। আমার বিশ্বাস, ছবিটি দেখে অশ্রুভেজা চোখে দর্শক হল থেকে বের হবেন। সেটা হলে নব্বই ভাগ সার্থক হবে ছবিটি।’

কেন ছবিটি দর্শক দেখবেন—এ ব্যাপারে ছবির পরিচালক ইস্পাহানি আরিফ জাহান বলেন, ‘প্রথমত, আনিসুল হকের লেখা ভালো গল্পের ছবি। আনিসুল হকের গল্প ঘিরে তরুণদের আলাদা আগ্রহ আছে। এটি পুরোপুরি রোমান্টিক একটি ছবি। তরুণেরা বেশি পছন্দ করেন এসব গল্প। দ্বিতীয়ত, সময়কে ধরে ছবিটি নির্মাণের একটা ব্যাপার আছে।’
হৃদিতায় দুটি গান আছে—‘ঠিকানাবিহীন’ ও ‘শুধু একবার ছোঁব’। গান দুটি  লিখেছেন কবির বকুল। কণ্ঠ দিয়েছেন চন্দন সিনহা ও সিঁথি সাহা। এরই মধ্যে চন্দন সিনহার একক  কণ্ঠে ‘ঠিকানাবিহীন’ বেশ আলোচিত হয়েছে। গান দুটির সুর ও সংগীত করেছেন ইমরান মাহমুদুল ও অমিত ইশান।

চার-পাঁচ মাস আগে হাওরে হয়েছিল এই শুটিং

হৃদিতা ছবিতে পূজা চেরি, এ বি এম সুমন ছাড়া আরও অভিনয় করেছেন সাবেরী আলম, আঞ্জুমান আরা, মানস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
আজ শুক্রবার মাল্টিপ্লেক্সসহ দেশের ২১টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে হৃদিতা।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন