এটা দর্শকের সঙ্গে স্রেফ প্রতারণা

গত মাসে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় চলচ্চিত্র ‘কাগজের বউ’। চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মামনুন ইমন। সিনেমা, নতুন কাজসহ নানা প্রসঙ্গে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে ‘বিনোদন’

প্রথম আলো :

‘কাগজের বউ’-এর প্রচারে আপনাকে দেখা যায়নি?

‘কাগজের বউ’ কীভাবে চলচ্চিত্র হিসেবে মুক্তি পেয়েছে, এটাই বুঝিনি। শুটিং শুরুর আগে পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী একদিন আমাকে ফোন করে বললেন, ‘ইমন আমি একটা ওয়েব ফিল্ম বানাব, গল্পটা হচ্ছে এ রকম।’ বললাম, ‘অন্য আর্টিস্ট কে কে থাকবেন?’ তখন তিনি বললেন, ‘পরীমনি।’ ডি এ তায়েবের কথাও বলেছিলেন। তারপর গল্পটা শুনে রাজি হয়েছি। শুটিং করলাম। কী কারণে যেন আমার কিছু অংশের তো শুটিংই হয়নি। একটা সময় শুনি, এটার প্রযোজক ডি এ তায়েব ভাই। পরে অবশ্য এত কিছু আর ভাবিনি। যেহেতু পরীমনির সঙ্গে কাজই হয়নি, গল্পটাও ভালো। ভাবলাম, ওয়েব ফিল্ম হিসেবে একটা কাজ হোক। পরিচালক থেকে শুরু করে আমরা শিল্পীরা সবাই জানি, এটা ওয়েব ফিল্ম। কিন্তু পরে শুনি, ফুটেজ দেখার পর প্রযোজকের মনে হয়েছে, এটা ফিল্ম হয়ে যেতে পারে।

মামনুন ইমন। ছবি: অভিনেতার ফেসবুক থেকে
প্রথম আলো:

আপনি কিছু বলেননি?

আমি তখন বলেছি, এটা কীভাবে ওয়েব ফিল্ম হয়! এরপর নানা কথাবার্তা হয়। কিন্তু তিনি বলেই গেলেন, এটা ছবি! অনেক দিন পর একদিন এ-ও বললেন, ‘আমরা ছবি হিসেবে সেন্সর সার্টিফিকেট নিয়েছি।’ তারপর আমি আর আগ্রহই দেখাইনি। আমি যখন ডাবিং করেছি, তখনো জানি এটা ওয়েব ফিল্ম। শুটিংও করেছি মাত্র তিন দিন। যেখানে একটা ছবির শুটিং করি ২০ থেকে ২৫ দিন। অনেকে বলেন, দেশে বিদেশি ছবি আসবে কেন? কিন্তু এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তো বিদেশি ছবি আসবেই।

প্রথম আলো:

শুটিংয়ের সময় আপনি বললেন, এটা ওয়েব ফিল্ম। ভক্তরাও তা-ই জানলেন। অথচ মুক্তির সময় প্রযোজক বলছেন, চলচ্চিত্র। এটা আপনার ভক্তরা কীভাবে নিয়েছেন?

আরও পড়ুন

ওয়েব ফিল্মকে সিনেমা বলে চালিয়ে দেওয়া—এটা দর্শকের সঙ্গে স্রেফ প্রতারণা। এভাবে চললে তো ভবিষ্যতে আমি কাজও করব না। কেউ বলবেন এটা ওয়েব ফিল্ম, অথচ পরে শুনব যে সিনেমা! এগুলো খুবই খারাপ উদাহরণ। কারণ, ওয়েব এক জিনিস, চলচ্চিত্র আরেক জিনিস। সব মিলিয়ে বিষয়টা মোটেও ভালো হলো না।

প্রথম আলো:

আপনার নতুন সিনেমা মুক্তি কবে পাবে?

মামনুন ইমন। ছবি: অভিনেতার ফেসবুক থেকে

খুব শিগগির। সিনেমা মুক্তির আগে আমার অসাধারণ একটা ওয়েব ফিল্ম দর্শক দেখতে পাবেন। অনেক দিন থেকে আমি একটা ভালো ওয়েব ফিল্মে কাজ করতে চেয়েছিলাম। সেটা আমার জীবনে ঘটেছে। পরিচালকের নাম এখনই বলতে চাই না। তবে এটা বলব, তিনি বাংলাদেশের এই সময়ের নাম্বার ওয়ান পরিচালক। এই ওয়েব ফিল্মে কাজ করে আমি খুবই সন্তুষ্ট। এদিকে এ বছর অঞ্জন আইচ, লুবনা শারমিন ও সাদেক সিদ্দিকী পরিচালিত তিনটি ছবি মুক্তি পাবে। আরও দুটি ছবি তৈরি আছে। কবে মুক্তি পাবে, তা বলতে পারছি না।

প্রথম আলো:

নতুন কাজের খবর বলুন?

‘অপারেশন জ্যাকপট’ ছবির শুটিং চলছে। এর বাইরে নতুন ছবিতে অভিনয়ের ব্যাপারে কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে কথাও হয়েছে। চাইলেই আমি বেশ কয়েকটি ছবির কাজ শুরু করতেও পারতাম। আমি যেহেতু এখন অভিনয়-নির্ভর ছবিতে কাজ করতে চাই, ভালো গল্প আর পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে চাই—বিশেষ করে ‘পাসওয়ার্ড’ মুক্তির পর থেকে এমনটা ভেবেছি। ছবিটা আমার অভিনয়জীবনের বড় সাফল্য এনে দিয়েছে। ওই ছবির পর মনে হয়েছে, কেবল হিরো ইমেজ থাকবে এমন নয়, অভিনয়-নির্ভর কাজও করতে হবে।

প্রথম আলো:

নতুন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন?

আমি যে প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক, সেই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শাকিব খান। তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা বড় ভাই-ছোট ভাইয়ের মতো। আগে দেখা হলেই চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কথা বলতাম, এখন দেশ-বিদেশের ব্যবসা নিয়ে আলাপ করি, যখনই দেখা হয়। এই যে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে গেলাম; লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে শাকিব ভাইয়ের নিউইয়র্কের বাসায় ছুটে গিয়েছিলাম। কয়েক দিন একসঙ্গে থেকেছি, আড্ডা দিয়েছি, ঘুরে বেড়িয়েছি। তাঁর সঙ্গে থেকে কাজ করছি—এটা সত্যিই অন্য রকম অনুভূতি। আমার বিশ্বাস, শাকিব খান ব্যবসাতে সেরা হবেন।