রাজ্জাকের সঙ্গে প্রথম দেখায় তাঁদের কী কথা হয়েছিল

কেউ তাঁকে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ‘রাজা’ বলেন, কেউবা ভালোবেসে বলেন নায়করাজ রাজ্জাক। দেশীয় চলচ্চিত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য এই নায়কের প্রস্থান হয়েছে আজ থেকে ঠিক পাঁচ বছর আগে। আজকের এই দিনে তিনি চলে যান তাঁর প্রিয় ঢাকা, প্রিয় ঢালিউড ছেড়ে পরপারে। তাঁর স্মৃতি অবশ্য ভোলেনি ঢালিউড। এই দিনে দেশের চলচ্চিত্রের তিন বরেণ্য নায়িকার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তাঁদের সঙ্গে রাজ্জাকের প্রথম দিন কী কথা হয়েছিল? তারা মনে করতে চাইলেন কখন, কোথায় কীভাবে দেখা হয়েছিল তাঁদের।
প্রথম জীবনে বরেণ্য নির্মাতা জহির রায়হানের সহকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন রাজ্জাক। ষাটের দশকে সুচন্দা তখন সুভাষ দত্তের ‘কাগজের ফুল’ ছবিতে অভিনয় করছিলেন। দ্বিতীয় ছবি জহির রায়হানের ‘বেহুলা’র পোশাকের নকশা দেখতে যান প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জহির রায়হানসহ আরও কয়েকজন।

সুচন্দা বলেন, ‘আমিও তখন নতুন। পোশাকের নকশা দেখে বাসায় ফিরব। জহির রায়হান সাহেবও বের হলেন। দেখলাম, গেঞ্জি পরা একটা ছেলে বেঞ্চের ওপর বসা।

‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিতে রাজ্জাক ও সুচন্দা

জহির সাহেবকে দেখে ছেলেটি উঠে দাঁড়াল। কাছে গিয়ে ছেলেটির পিঠ চাপড়ে তিনি বললেন, “আপনি তো অভিনয় করতে চেয়েছিলেন। যান, আপনাকে হিরো বানিয়ে দিলাম। বেহুলা ছবির নায়ক লখিন্দর চরিত্রে অভিনয় করবেন। আর ইনিই আপনার নায়িকা।” রাজ্জাক হঠাৎ চুপ হয়ে গেলেন। চোখ ছলছল করে উঠল। পা ছুঁয়ে সালাম করলেন।’ বেহুলা মুক্তির পর পরিচালক জহির রায়হানের সঙ্গে বিয়ে হয় সুচন্দার। বিয়ের পরও দুই পরিবারের বাসায় যাতায়াত ছিল রাজ্জাকের।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের আলোচিত জুটি রাজ্জাক-কবরী। এই দুই তারকার প্রথম দেখা হয় যোগাযোগ নামের একটি চলচ্চিত্রের সূত্র ধরে।

জুটি হিসেবে সবচেয়ে আলোচিত ছিল রাজ্জাক-কবরী।

কবরী বেঁচে থাকতে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘যোগাযোগ’ সিনেমার সূত্রে গাজী মাজহারুল আনোয়ারদের মগবাজারের বাসায় দেখা হয় রাজ্জাকের সঙ্গে। সেদিনই প্রথম সামনাসামনি কথা হয়। খাওয়াদাওয়া আর আড্ডাও চলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের সেই ছবিটি হয়নি।

আমাদের ঘরে একটা ফ্রিজ ছিল। সেটার দরজা খুলে আমি প্রায়ই ভেতরে ঢুকে থাকতাম। একদিন রাজ্জাক ভাইয়ের সামনে পড়ে যাই। ফ্রিজের দরজা খুলে উঁকি মারতেই তিনি দেখে ফেলেন। বলে ওঠেন, ‘ওমা, তুমি ফ্রিজের মধ্যে কী করছ?
ববিতা

ববিতার সঙ্গে রাজ্জাকের প্রথম দেখা হয় তখন, যখন তাঁর ৯ কি ১০ বছর বয়স। সেই সময়ের কথা মনে করতে গিয়ে ববিতা বললেন, ‘বেহুলা, আনোয়ারাসহ রাজ্জাক ভাইয়ের আরও কী কী ছবি যেন মুক্তি পেয়েছে। সুচন্দা আপার সঙ্গে কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন।

ববিতা-রাজ্জাক

সেই সুবাদে আমাদের বাসায় তাঁর যাতায়াত ছিল। জহির রায়হান ভাইও ছিলেন। আমাদের ঘরে একটা ফ্রিজ ছিল। সেটার দরজা খুলে আমি প্রায়ই ভেতরে ঢুকে থাকতাম। একদিন রাজ্জাক ভাইয়ের সামনে পড়ে যাই। ফ্রিজের দরজা খুলে উঁকি মারতেই তিনি দেখে ফেলেন। বলে ওঠেন, ‘ওমা, তুমি ফ্রিজের মধ্যে কী করছ?’