‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ দিয়ে ছন্দে ফিরেছে মণিহার

ছুটির দিনগুলোয় দর্শকের উপচে পড়া ভিড় থাকেপ্রথম আলো

বছর পাঁচেক আগে ‘আয়নাবাজি’ সিনেমায় উপচে পড়া দর্শক ছিল দেশের ঐতিহ্যবাহী যশোরের মণিহার প্রেক্ষাগৃহে। মাঝের বছরগুলো দর্শক–খরায় ছন্দপতন ঘটে। নতুন চলচ্চিত্র ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ দিয়ে আবার ছন্দে ফিরল মণিহার। ‘পরাণ’ চলচ্চিত্র ১৪ দিন টানা চালানো হয়। ‘পরাণ’–এর পরই হাওয়া লাগে মণিহারে। এটাও টানা দুই সপ্তাহ ধরে চলছে। আরও সপ্তাহখানেক চলবে বলে প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
গতকাল বুধবার মণিহারে হাওয়া চলচ্চিত্রের ১৩তম দিন গেল। বিকেলে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখা গেছে, নিচতলায় দর্শক কম থাকলেও দর্শকসারিতে ভালোসংখ্যক দর্শক আছেন। তবে ছুটির দিনগুলোয় দর্শকের উপচে পড়া ভিড় থাকে। প্রথম সপ্তাহ থেকে গত শনিবার পর্যন্ত দর্শকে ঠাসা ছিল মণিহার প্রেক্ষাগৃহ।

প্রেক্ষাগৃহের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ সিনেমা দিয়ে অভিজাত শ্রেণির দর্শক আবার হলমুখী হয়েছেন, যেসব দর্শক ‘আয়নাবাজি’ সিনেমার পর আর হলে আসেননি। এখানেই এই সিনেমা দুটির সফলতা।

হাওয়া সিনেমায় চান মাঝি চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

অন্তত ১০ হাজারের বেশি দর্শক মণিহারে বসে দুটি সিনেমা উপভোগ করেছেন। এ ধরনের সিনেমা তৈরি হলে আবার জমজমাট হয়ে উঠবে প্রেক্ষাগৃহ।
পরাণ দুই সপ্তাহ চালানো হয়েছে। হাওয়ার দুই সপ্তাহ পূর্ণ হবে আজ বৃহস্পতিবার। আর কত দিন চালানো হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এখনো দর্শকের মধ্যে দেখার আগ্রহ রয়েছে বলে তোফাজ্জেল জানান।

মেজবাউর রহমান সুমনের প্রথম সিনেমা ‘হাওয়া’ ৫ আগস্ট মণিহারে প্রদর্শনীর জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। প্রথম শো থেকেই দর্শক সিনেমা হলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। হল কর্তৃপক্ষ বলছে, গত পাঁচ বছরের মধ্যে দর্শকদের এমন সাড়া আর পাওয়া যায়নি। ভালো মানের সিনেমা বানালে দর্শকদের চাহিদা সব সময় থাকে।

‘পরাণ’ ছবিতে ইয়াশ রোহান ও মিম। ছবি: সংগৃহীত

মণিহার সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৮৩ সালে সোহেল রানা–সুচরিতা অভিনীত ও দেওয়ান নজরুল পরিচালিত ‘জনি’ সিনেমা দিয়ে যাত্রা শুরু করে দেশের সর্ববৃহৎ সিনেমা হল মণিহার।

ছুটির দিনগুলোয় দর্শকের উপচে পড়া ভিড় থাকে
প্রথম আলো

যাত্রার শুরু থেকেই নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত ১ হাজার ৪৩০ সিটের মণিহারে দিনে চারটি শোতেই নামত দর্শকের ঢল। কিন্তু নব্বইয়ের দশকের পর দর্শক–খরার কারণে মন্দা শুরু হয় এই সিনেমা হলের প্রদর্শন ব্যবসায়। গত দুই দশকের মধ্যে ‘মনপুরা’, ‘আয়নাবাজি’, ‘বস-২’ ছাড়া সফল ব্যবসা হয়নি কোনো সিনেমাতে। তবে সেই রেকর্ড ভেঙে দর্শকের ঢল নেমেছে মণিহারে।