গুলশান আপনাদেরকে চায় না: বাপ্পারাজ

আকবর হোসেন পাঠান ফারুক ও বাপ্পারাজকোলাজ

২৬ মাস সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত সোমবার সকালে মারা যান মুক্তিযোদ্ধা, সংসদ সদস্য ও অভিনয়শিল্পী আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। বরেণ্য এই অভিনয়শিল্পী ও সংসদ সদস্যের মৃত্যুর পরপরই তাঁর সংসদীয় আসন ঢাকা ১৭–তে প্রার্থী হতে একাধিক অভিনয়শিল্পীর তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ফারুকের আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে অন্য কাউকে দেখার ইচ্ছা পোষণও করেছেন কেউ কেউ। এ নিয়ে অনেকে ফেসবুকে সরব বলেছেন। বিষয়গুলো নজরে এসেছে বরেণ্য অভিনেতা রাজ্জাকপুত্র অভিনয়শিল্পী বাপ্পারাজের। গুলশানের বাসিন্দা বাপ্পারাজ স্পষ্ট ভাষায় তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গুলশান আপনাদের চায় না।’

ফারুকের মৃত্যুর পর ঢাকা ১৭ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। ফারুকের মৃত্যুর এক দিন পরই এই আসনে তাঁর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার কথা বলে প্রার্থী হওয়ার আকাঙ্ক্ষার কথা জানান অভিনেতা সিদ্দিক। অন্যদিকে ফারুকের আসনে এমপি হতে চিত্রনায়ক ওমর সানী প্রস্তাব করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নাম। আবার চিত্রনায়িকা অঞ্জনা প্রস্তাব করেছেন আলমগীরের নাম। এসব বিষয়ে একেবারে ভিন্নমত প্রকাশ করলেন বাপ্পারাজ। বিষয়গুলো মনে করে তাঁর ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে জানালেন, সদ্য প্রয়াত নায়কের ইমোশন ব্যবহার করে নির্বাচনী ফায়দা নিতে চাইছেন অনেকেই।

চিত্রনায়ক ফারুক
ছবি: ফেসবুক

বাপ্পারাজ বলেন, ‘ঢাকা উত্তরের যাঁরা মেয়র হয়ে আসেন, তাঁরা এতটাই যোগ্য যে কোনো কাজ অসমাপ্ত রাখেন না, যেটা এসে কোনো এমপি সাহেবকে সমাপ্ত করতে হবে। একজন মৃত মানুষের ইমোশনকে ক্যাশ করে যাঁরা ফায়দা লুটতে চাচ্ছেন, তাঁরা অফ যেতে পারেন, গুলশান আপনাদের চায় না।’

বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে যাঁরা সরাসরি রাজনীতিতে নাম লেখান, তাদের মধ্যে অন্যতম নায়ক ফারুক। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে তিনি মানুষের কাছে নায়ক ফারুক হিসেবেই বেশি পরিচিত বলে তাঁর সহকর্মীরা মনে করেন।

বাপ্পারাজ
ছবি : প্রথম আলো

চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং পরিচালকেরা বলেছেন, গ্রামীণ প্রতিবাদী চরিত্রে অভিনয়ে নায়ক ফারুক ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং সেটাই ছিল তাঁর জনপ্রিয়তার বড় ভিত্তি। অভিনেতা ফারুক দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আট বছর ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন অভিনয়শিল্পী ও রাজনীতিবিদ। সর্বশেষ ২০২১ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরীক্ষায় রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরে নিজের পরিচিত চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হাসপাতালে ভর্তির কয় দিন পর তাঁর মস্তিষ্কেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যর্থ হয়। গত সোমবার সিঙ্গাপুর স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।