প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নিন্দা
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি। সংগঠনটির সভাপতি আওলাদ হোসেনের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের হামলা মুক্ত গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে স্বাধীন ও নির্ভীক গণমাধ্যম রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। সেখানে হামলা, ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগ শুধু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নয়, বরং পুরো সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির মতে, এ ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা দেশের সামগ্রিক সাংস্কৃতিক ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
সমিতি অবিলম্বে হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে গণমাধ্যমকর্মী ও সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ কামনা করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় দেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো। একই সঙ্গে হামলার শিকার হয়েছে শীর্ষ ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারও। এদিন রাতে সন্ত্রাসীরা কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো ও কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে ডেইলি স্টার-এর কার্যালয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। পরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় কার্যালয় দুটি। হামলা শুরু হলে প্রথম আলোর সাংবাদিক ও কর্মীরা প্রাণ বাঁচাতে দ্রুত কার্যালয় ত্যাগ করেন। হামলার কারণে কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায় গতকাল শুক্রবারের প্রথম আলো প্রকাশিত হয়নি। প্রতিষ্ঠার ২৭ বছরে প্রথমবারের মতো সংবাদপত্রের ছুটি বাদে এক দিনের জন্য প্রথম আলোর প্রকাশনা বন্ধ থাকল। প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণের কার্যক্রম বন্ধ ছিল প্রায় ১৭ ঘণ্টা। ঢাকার বাইরে কুষ্টিয়া, খুলনা ও সিলেটে প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে। চট্টগ্রাম, বগুড়া ও বরিশাল কার্যালয়েও হামলার চেষ্টা হয়েছে।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক সমাজসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও নাগরিক সমাজের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি মনে করে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় গণমাধ্যমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব।