কাজ খুঁজি না, চাই কাজ আমাকে খুঁজে নিক: মৌসুমী হামিদ

মৌসুমী হামিদছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত নতুন চলচ্চিত্র ‘ট্রাইব্যুনাল’। নারী নির্যাতন, ন্যায়বিচারের লড়াই ও বিচারব্যবস্থার জটিল বাস্তবতা উঠে আসবে ছবিটিতে। ইতিমধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ শুটিং শেষ হয়েছে। নির্মাতা জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী রোজার ঈদে ছবিটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছবিতে অভিনয় করেছে মৌসুমী হামিদ।

মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিনেমার আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন নির্মাতা। ২০১১ সালে চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হচ্ছে ‘ট্রাইব্যুনাল’—এক নারীকে কেরোসিন ছিটিয়ে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল সারা দেশ।

সেই ঘটনার সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানবিক মাত্রা বিচারেই তৈরি হয়েছে ছবির গল্প। নির্মাতার ভাষায়, এটি শুধু একটি সিনেমা নয়, বরং একটি সময়ের দলিল; যেখানে দেখা যাবে মার্ডার কোর্টরুম ড্রামার টানটান উত্তেজনা।

মৌসুমী হামিদ
ছবি: মৌসুমী হামিদের সৌজন্যে

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। গল্প শুনেই তিনি কাজটি করতে রাজি হয়ে যান। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি, যিনি ঘটনাস্থলের নির্মমতা খুব কাছ থেকে দেখেছেন।

নারী নির্যাতন প্রসঙ্গে আবেগঘন কণ্ঠে মৌসুমী বলেন, ‘নারীরা ভালোবাসার মানুষের কাছে, স্বামীর কাছে যে নির্যাতন সহ্য করেন, তা কাউকে বলতে পারেন না। ছোটবেলা থেকেই শেখানো হয়েছে—চুপ থাকো, সহ্য করো। অথচ লজ্জা পাওয়ার কথা সেই নির্যাতনকারীর!’
অভিনয় প্রসঙ্গে নিজের দর্শন তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি কাজ খুঁজি না; আমি চাই, কাজ আমাকে খুঁজে নিক। ভালো গল্প, ভালো চরিত্র—এগুলোই আমাকে আকর্ষণ করে। “ট্রাইব্যুনাল”তেমনই একটি কাজ।’

ছবিতে ব্যারিস্টারের ভূমিকায় দেখা যাবে নুসরাত ফারিয়াকে। চট্টগ্রামের আদালত, তদন্তপ্রক্রিয়া, আইনি লড়াই—সবকিছুই বাস্তবধর্মীভাবে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন নির্মাতা। ফারিয়াও প্রস্তুতি নিয়েছেন বেশ কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথন করে, কোর্টরুমের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করে।

মৌসুমী হামিদ।শিল্পীর সৌজন্যে

ছবির বেশির ভাগ দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে চট্টগ্রামের আসল লোকেশনে—কোর্ট এলাকা, পুরান শহর, বিভিন্ন সড়ক ও ঘনবসতিপূর্ণ মহল্লা। নির্মাতার মতে, ‘বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিনেমা করতে গেলে লোকেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই চট্টগ্রামের আবহ, ভাষা ও পরিবেশকেই গল্পের অংশ করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন

এই চলচ্চিত্রের নির্মাতা রায়হান খান মূলত একজন সিনেমাটোগ্রাফার। ক্যামেরা–দৃষ্টি ও গল্পকথনের মিশেলে তাঁর কাজ সব সময়ই নজর কাড়ে। ২০২১ সালে তাঁর চিত্রনাট্যে মুক্তি পায় ‘মৃধা বনাম মৃধা’, যা বাণিজ্যিকভাবে সফল ও আলোচিত হয়।
পরে হইচইয়ে মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ ‘দৌড়’ তাঁকে নতুন পরিচিতি এনে দেয়। শক্ত গল্প, গতি এবং সিনেমাটিক টোন—এই তিনের সমন্বয়ে তাঁর নির্মাণশৈলী আলাদা জায়গা করে নিয়েছে।