ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের পর কী বিচার হয়? এফডিসিতে শিল্পীদের প্রশ্ন

ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে আজ সোমবার বিকেলে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা।ছবি : সংগৃহীত

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি  ক্ষুব্ধ শিল্পীরাও। ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে শিল্পীরা। আজ সোমবার বিকেলে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির উদ্যোগে এই মানববন্ধনে বক্তব্য দেন অভিনেত্রী রোজিনা, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরসহ অনেকে।

চিত্রনায়িকা রোজিনা বলেন, ‘...ছোট একটি মেয়ে, তার সঙ্গে যে অন্যায় করা হয়েছে, এই কাজটি যারা করেছে, তারা মানুষ নয়। তারা মানুষ নামের ভয়ংকর পশু। আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই, তাদের জনসমক্ষে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমরা দেখতে পাই, দেশে শিশু থেকে বৃদ্ধা—কেউই ধর্ষকদের হাত থেকে রেহাই পায় না। ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করার পর তাদের কী বিচার হয়? তাদের কী ধরনের বিচার হয় আমরা জানতে পারি না, তাদের ফাঁসি হয় কি না, তা–ও জানতে পারি না। আবার দেখা যায়, ধর্ষণকারীরা জামিনে বের হয়ে অবাধে চলাফেরা করে। ধর্ষকদের শাস্তি সংবিধানে থাকলেও তা আমরা বাস্তবায়ন হতে দেখি না। প্রকাশ্যে ফাঁসি না দিলে আমরা শান্ত হব না। এই প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।’

ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে আজ সোমবার বিকেলে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
ছবি : সংগৃহীত

মানববন্ধনে মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমরা সবাই অবগত, কী হয়েছে? কী ঘটেছে? আমরা সবাই এ ব্যাপারে সোচ্চার যে আমরা কী করতে চাই, কী বলতে চাই। আমরা চাই শিশু ধর্ষণসহ সব ধর্ষণ ও নারীদের প্রতি সহিংসতার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হোক। অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক; যাতে অন্যরা এ ধরনের অপরাধ করার আগে একবার না, দশবার ভাবে। একই সঙ্গে, প্রমাণ সংগ্রহ ও তদন্তপ্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে অপরাধীরা কোনোভাবেই রেহাই না পায়। শুধু কঠোর শাস্তিই যথেষ্ট নয়, সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করাও অপরিহার্য বলে আমরা মনে করি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে শিশুরা নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে।’

ধর্ষণের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে মিশা বলেন, ‘আমরা সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগের কাছে আহ্বান জানাই, অনুরোধ জানাই—শিশু ধর্ষণের বিরুদ্ধে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করুন।’

শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে সবশেষে মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমরা যারা, যাদের ভেতর মানবিকতাবোধ আছে, তারা যেন জাগ্রত থাকি। বিএফডিসিতে অনুষ্ঠিত ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশে মিশা সওদাগর ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রোজিনা, ডিএ তায়েব, শিপন মিত্র, জয় চৌধুরী, রুমানা ইসলাম মুক্তি, কমল সরকার প্রমুখ।