কোন গডফাদারদের চিনতে চেয়েছেন রাজ

শরীফুল রাজ

পরীমনি ও শরীফুল রাজ ইস্যু যেন থেমেও থামছে না। দুজন দুজনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন। কাগজ–কলমে সম্পর্ক ছিন্নের ব্যাপারটা এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। দুজনের কারও সঙ্গে কারও কোনো কথা হচ্ছে না। তাই বলে থেমেও থাকছেন না দুজন। একে অপরকে ইঙ্গিত করে বলছেন নানা কথা। ফেসবুক হয়ে তা পৌঁছে যাচ্ছে ভক্ত–শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে শুরু করে আমজনতার কাছে।

এক বছরের ব্যবধানে প্রেম, বিয়ে, সন্তান এবং বিচ্ছেদও দেখে ফেলেছেন তাঁরা। বাকি আছে শুধু আনুষ্ঠানিকতা। শুরুতে নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক ভাঙার ইঙ্গিত এসেছিল পরীমনির কাছ থেকে। চুপচাপ ছিলেন শরীফুল রাজ। কথা বলেননি কোথাও। তবে এটুকু বলে রেখেছিলেন, ‘এখন কোনো কথা বলতে চাই না। পরে এসব নিয়ে কথা বলব।’ সেই পরে যে এত তাড়াতাড়ি এসে পড়বে, তা ভাবা যায়নি। রাজ ভাঙলেন নীরবতা। তাঁর সেসব কথায় আছে প্রচণ্ড ক্ষোভ, আছে হতাশাও।

শরিফুল রাজ ও পরীমনি
ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে ২ জানুয়ারি শরীফুল রাজ বলেন, ‘মাই বেডরুম ইজ প্রাইভেট, ভেরি প্রাইভেট। নট ফর পাবলিক। বাট আমার বেডরুম নিয়ে সবাই মজা নিচ্ছে এখন। পরী এখন যা করছে বা তার যা মন চায় করুক। তবে এটুকু স্পষ্ট করি, আমি কোনো ভুল করিনি এবং আমাদের আর এক হওয়া হবে না।’

এ কথার পর সম্ভবত পরীর কাছ থেকেও ভালো জবাব পাননি রাজ। আর সে কারণেই হয়তো আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টা ৪৮ মিনিটের দিকে শরীফুল রাজ তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছেন, ‘হ্যালো গডফাদারস অ্যান্ড গং, আই ওয়ান্ট টু নো ইউ গাইজ। আই লিভ ইন ঢাকা, আই উড লাভ টু চিয়ার্স।’ রাজের পোস্ট দেখে যে কারোরই মনে হতে পারে, তিনি হয়তো হুমকি পেয়েছেন বা পাচ্ছেন। এসবের জবাবে তিনি এসব কথা লিখেছেন। রাজও দমে যাওয়ার মানুষ নন। তাই তো হুমকিদাতাদের সরাসরি দেখে নেওয়ার কথা বলতে ফেসবুক পোস্টের আশ্রয় নিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে রাজের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার সকালে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

শরীফুল রাজ ও পরীমনি

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর গোপনে বিয়ে করেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমনি ও অভিনেতা শরীফুল রাজ। চরকি প্রযোজিত ‘গুণিন’ চলচ্চিত্রের শুটিং করতে গিয়ে তাঁদের পরিচয়। মাত্র সাত দিনের পরিচয়ে তাঁরা বিয়ে করেন। ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি সেই খবর প্রকাশ্যে আনেন তাঁরা। একই দিনে নিজেরা মা–বাবা হওয়ার খবরটিও সবাইকে জানান। এরপর ২২ জানুয়ারি পারিবারিক আয়োজনে বিয়ে সারেন। একই বছরের ১০ আগস্ট তাঁদের ঘর আলো করে এসেছে পুত্রসন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য।

সমুদ্রে রাজ ও পরীমনি

পরীমনির ফেসবুক প্রোফাইলে এখন আর লেখা নেই ‘ম্যারিড উইথ শরীফুল রাজ’। একই অবস্থা শরীফুল রাজের বেলায়ও। অথচ দিন কয়েক আগেও এই দুই তারকাকে ঘিরে চর্চিত হয়েছে নানা গল্প। দুজনকে কেউ কেউ আবার বিনোদন অঙ্গনের ‘আদর্শ স্বামী-স্ত্রী’র তকমা দেওয়াও শুরু করেন। মাত্র এক বছরের দাম্পত্যজীবনে ফেসবুকে তাঁদের পোস্ট করা বিভিন্ন মুহূর্তের স্থিরচিত্র, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মনে ভালো লাগা এনে দেয়। সবই এখন অতীত। গত দুই দিনে তাঁদের দুজনের বক্তব্যে এটা পরিষ্কার, তাঁরা এখন দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা।

রাজ ও পরীমনি
কোলাজ

পরীমনি ও শরীফুল রাজ দুজনের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরেছে কয়েক মাস আগে। সন্তান পৃথিবীতে আসার পরও কয়েক মাস ভালো ছিলেন। এরপর টুকটাক কথা-কাটাকাটি হতো। তারপর সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কমে যাওয়ার কারণে দুজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। দুজনের প্রতি অবিশ্বাসও তৈরি হয়। সন্দেহ করা শুরু করেন একে অপরকে। তারপরও বারবার চেষ্টা চলে সম্পর্ক চালিয়ে নেওয়ার। কিন্তু একেবারেই যখন সম্ভব হচ্ছিল না, তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, এ ধরনের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার চেয়ে আলাদা থাকা ভালো।

পরীমনির ফেসবুকে দেওয়া পোস্টের পাশাপাশি শরীফুল রাজের কথায়ও স্পষ্ট, এই সম্পর্ক আর জোড়া লাগবে না। সম্পর্ক জোড়া লাগবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, আর হবে না।’

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন