‘মেঘ রোদ্দুর খেলা’ দেখতে ছোটদের ভিড়

মন ভালো করে দেওয়া এক দৃশ্য। শিশু–কিশোরদের কলকাকলিতে মুখর রাজধানীর সীমান্ত স্কয়ার স্টার সিনেপ্লেক্স। তাদের কেউ এসেছে মা–বাবার হাত ধরে, কেউ এসেছে বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে। সবাই মিলেছিল একদল কিশোর-কিশোরীর অ্যাডভেঞ্চার গল্প নিয়ে আউয়াল রেজা পরিচালিত ‘মেঘ রোদ্দুর খেলা’র প্রিমিয়ার শোতে। ছবি দেখে, গল্প করে, ঘুরে বেড়িয়ে দারুণ সময় কাটাল তাদের।
মঙ্গলবার অনুদান পাওয়া ছবি ‘মেঘ রোদ্দুর খেলা’র  প্রিমিয়ার শোতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তিনি নতুন প্রজন্মভিত্তিক এ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য এর নির্মাতাসহ অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, দাপ্তরিক ব্যস্ততায় সশরীর হাজিরা দিতে না পারলেও এক ভিডিও বার্তায় ‘মেঘ রোদ্দুর খেলা’র সাফল্য কামনার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের সবাইকে অভিভাবকদের সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহে এসে ছবিটি উপভোগের আহ্বান জানান।

শো-পূর্ব সংক্ষিপ্ত আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল ও ইস্পাহানি টি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক ওমর হান্নান। এ ছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।

‘মেঘ রোদ্দুর খেলা’ সিনেমার একটি দৃশ্য
ছবি : সংগৃহীত

ছবির কাহিনিতে দেখা যায়, ১৫ বছরের রোমাঞ্চপ্রিয় কিশোর রায়ান একদিন এক ওয়েবসাইটে খুঁজে পায় এক দারুণ তথ্য। বাংলাদেশের দক্ষিণে এক গহিন দ্বীপে গবেষকেরা নতুন এক প্রজাতির শামুক খুঁজে পেয়েছেন, যার খোলসের মধ্যে রয়েছে ইউরেনিয়াম। রায়ান স্থির করে ইউরেনিয়ামবাহী আশ্চর্য শামুকের সন্ধানে দুর্গম দ্বীপের গহিন জঙ্গলে অভিযানে যাবে। এরপর নিজেরাই একটা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দাঁড় করিয়ে ফেলবে। ছুটে আসে প্রাণের বন্ধু সানজিনাসহ দুঃসাহসী আরও ছয় কিশোর-কিশোরী। নতুন প্রজন্মের সাত খুদে যোদ্ধা একের পর এক বাধাবিপত্তি কাটিয়ে ছুটে যায় গহিন দ্বীপে আশ্চর্য শামুকের সন্ধানে। কিন্তু সহজে কি দেখা মেলে তার? কী হবে শেষমেশ? রায়ান ও বন্ধুরা কি খুঁজে পাবে সেই আশ্চর্য শামুক?

জোগাড় হবে কি দুর্লভ ইউরেনিয়াম? রহস্যঘেরা জমজমাট সেই গল্পই জানা যাবে সরকারি অনুদানে ইস্পাহানি নিবেদিত আউয়াল রেজা নির্মিত ‘মেঘ রোদ্দুর খেলা’ ছবি থেকে। পরিচালক আউয়াল রেজা জানালেন, এটি ১৪ থেকে ১৬ বছরের কিশোর-কিশোরীর এই সময়ের গল্প। তাঁর দাবি, কিশোরদের এ ধরনের গল্প নিয়ে আগে কাজ হয়নি। পরিচালক বললেন, ‘এই গল্প নিয়ে ছবি বানানোর প্রধান কারণ, আজকের কিশোর-কিশোরীরাই ভবিষ্যতে দেশের নেতৃত্ব দেবে। এ ছাড়া আমাদের এখানে “হাওয়া” ও “পরাণ” প্রেক্ষাগৃহে নতুন দর্শক নিয়ে এসেছে। আবার কিছু ছবির কারণে দর্শক প্রেক্ষাগৃহবিমুখও হয়েছেন। আমি পুরোনো দর্শক ফেরাতে চাই না। বাংলা ছবির নতুন দর্শক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ছবিটি করেছি। ছবিটি দেখতে কিশোর-কিশোরীরা আসবে। তারা আগামী ১৫-২০ বছর সিনেমার নিয়মিত দর্শক হিসেবে তৈরি হবে।’

‘মেঘ রোদ্দুর খেলা’ কিশোর চলচ্চিত্রটি আগামী শুক্রবার রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সব কটি সিনেপ্লেক্সে একযোগে মুক্তি পাচ্ছে। ছবিতে অভিনয় করেছেন টইটই হেলালি, অর্নিমা তাবাসসুম, রাফিদ স্মরণ, কিংবদন্তি চৌধুরী, নাফিস জাবীর, আনোয়ারুল রাজিত, জহুরাতুল তায়েবা, মাহমুদা মাহা। এ ছাড়া আছেন নাজনীন চুমকী, প্রাণ রায়, মিলি বাশার, মাজনুন মিজান প্রমুখ।