‘কী রে মন্দিরা, অভিনয়টা শিখে গেলি’

বিরতি পর আবার হলো ‘কাজলরেখা’র শুটিং শুরু। গত বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের তাহেরপুর উপজেলায় ছবিটির শুটিং শুরু হয়। শুটিংয়ের জন্য টাঙ্গুয়া হাওর ও যাদুকাটা নদীর ধার ঘেঁষে সেট তৈরি করা হয়েছে। কাজ করছে প্রায় ১০০ জনের ইউনিট। ‘কাজলরেখা’র  শুটিং লোকেশন থেকে প্রথম আলোকে ছবির পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম জানালেন, এই কিস্তিতে টানা পাঁচ দিন কাজ হবে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটি রূপকথার গল্পের ছবি, তাই হাওর ও নদীর ধারে সেট ফেলে সেই আবহ তৈরির চেষ্টা করেছি। এই ধাপে গল্পের সুচ কুমার ও কাজলরেখার দেশ ভ্রমণের দৃশ্যগুলো করছি।’
পরিচালক আরও জানালেন, এরপর নেত্রকোনোর সুসং দুর্গাপুরে আরও পাঁচ দিন কাজ করলে ছবির শুটিং শেষ হবে। সেলিম বলেন, ‘৩ অক্টোবরের মধ্যে পুরোপুরি কাজ শেষ করব। শুটিং শুরুর আগে ছবিটির জন্য ৪০ দিন শিডিউল ঠিক করেছিলাম। এখন পর্যন্ত ঠিকমতোই এগোচ্ছি।’
‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে ‘কাজলরেখা’। এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রস্তুতি নিয়ে শুটিং শুরু করেন পরিচালক।

প্রস্তুতি অনুযায়ী লোকেশনের সেট থেকে শুরু করে গল্পের উপস্থাপনা ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘চেষ্টা তো করে যাচ্ছি। ৪০০ বছর আগের রূপকথার গল্প বর্তমান সময়ে তুলে আনা সহজ নয়। দৃশ্যায়নে সেট থেকে শুরু করে পারিপার্শ্বিক পরিবেশে খাপ খাওয়ানো জটিল ব্যাপার। আমরা শতভাগ মেলানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। যতটুকু কাজ হয়েছে, প্রত্যাশা অনুযায়ী করতে পেরেছি। এখানে পালার গল্পকে সিনেমার বাস্তবতায় তুলে আনার চেষ্টা করছি।’

পরিচালক জানান, প্রথম ধাপে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ২৫ দিন শুটিং হয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে মাওয়ার পদ্মা, খুলনা ও কক্সবাজারে হয়েছে শুটিং।
ছবিতে কাজলরেখা চরিত্রে অভিনয় করছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। সিনেমায় এটি তাঁর প্রথম কাজ। কেমন হচ্ছে কাজ, জানতে চাইলে মন্দিরা বলেন, ‘শুটিংয়ের আগে অনেকদিন গ্রুমিং করেছি। ফলে ক্যামেরার সামনে গিয়ে নিজেকে নতুন মনে হয়নি। তবে গ্রুমিং না করলে এই চরিত্র করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।’

শুটিংয়ে যাওয়ার আগে অনেক নার্ভাস ছিলেন বলেও জানালেন এই নবাগত অভিনেত্রী, ‘সিনিয়র অনেক আর্টিস্ট আমার সহশিল্পী। মনে মনে ভাবতাম, ক্যামেরার সামনে অভিনয় পারব না, সব ভুলে যাব। পরিচালকের কাছে বকা খাব। প্রথম দিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সেই ভয় চলে যায়। এত দিন ধরে শুটিং করছি, সমস্যা হয়নি। কয়েক দিন আগে সেলিম ভাই বলেছেন, “কী রে মন্দিরা, অভিনয়টা শিখে গেলি।” সেলিম ভাইয়ের কথাটি আমার কানে বাজে। কথাটি আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

পরিচালক জানান, শুটিং শেষে অক্টোবর থেকে ছবির পোস্ট প্রোডাকশন শুরু হবে। মুক্তি পাবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে।  
ছবিতে আরও অভিনয় করছেন আজাদ আবুল কালাম, সাহানা সুমি, শরীফুল রাজ, মিথিলা, খাইরুল বাশার, সাদিয়া প্রমুখ।