মায়া আছে বলেই তো রাজকে বাসায় ঢুকতে দিয়েছি: পরীমনি

শরীফুল রাজ ও পরীমনিকোলাজ

নতুন ওয়েব সিরিজ ‘রঙিলা কিতাব’-এ  অভিনয় করছেন পরীমনি। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে বান্দরবানে সিরিজটি শুটিং শুরু হয়। সেখান থেকে বরিশাল হয়ে দুয়েক দিনের মধ্যেই ঢাকার লোকেশনে শুটিং শেষ হবে সিরিজটির। আলাপে আলাপে নতুন কাজ ছাড়াও শরীফুল রাজ প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন পরী।

অনম বিশ্বাসের ‘রঙিলা কিতাব’-এ অন্য রকমের একটি চরিত্রে অভিনয় করছেন পরীমনি। সিরিজে নিজের চরিত্রের বিষয়ে বিস্তারিত না জানালেনও শুধু জানিয়েছেন, তাঁর নিজের জীবনের সঙ্গে অনেকটাই মিল আছে চরিত্রটির। পরীমনি বলেন, ‘আমার ভেতরের চরিত্রের সঙ্গে “রঙিলা কিতাব”-এ আমার চরিত্রের অনেকটাই মিল আছে। ফলে চরিত্রের বোঝাপড়াটা সহজ হয়েছে আমার জন্য। কাজটি করে আরাম পাচ্ছি।’

আরও পড়ুন

রাজের সঙ্গে পরীমনির বিচ্ছেদ হয়েছে প্রায় এক বছর। বিচ্ছেদর পর থেকে ছেলে পুণ্য পরীমনির কাছেই বড় হচ্ছে। বিচ্ছেদের পর থেকে তাঁদের দুজনের মুখ দেখা দেখিও বন্ধ ছিল। এত দিনে সন্তানকেও দেখার সুযোগ হয়নি রাজের। এই সময়ে রাজ চুপচাপ থাকলেও, অনেকবারই ব্যক্তিজীবন নিয়ে কথা বলেছেন পরী। ছেলের প্রতি দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগ তুলে বেশ কয়েকবার দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে রাজের সমালোচনা করেছেন। মাস দেড় আগেও এক সাক্ষাৎকারে পরী বলেছেন, ‘রাজ আমার কাছে মৃত, ডেড।’

রাজ ও পরীমনি
প্রথম আলো
আরও পড়ুন

কিন্তু হঠাৎ করে তাঁদের দুজনকে ঘিরে দৃশ্যপট যেন পাল্টাচ্ছে, এমন খবরই পাওয়া যাচ্ছে। চলচ্চিত্র পাড়ার এক ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, মাসখানেক হলো রাজ নাকি পরীর বাসায় যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি অনুষ্ঠানেও দুজনের দেখা হয়েছে। সন্তানকে দেখার জন্য এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার পরীমনির বাসায় গিয়েছেন রাজ।
রাজের তাঁর বাসায় যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন পরীমনি। তিনি বলেন, ‘অন্য একটি বিষয়ের জন্য সে (রাজ) বাসায় এসেছিল। বিচ্ছেদ হওয়ার পর আমার সঙ্গে দেখা হয়নি। আমি দেখা করতেও চাইনি। বাসায়ও আসা মানা ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ করেই কিছুদিন আগে আমার বাসায় এসেছিল। সেই সময় বাসা থেকে যাওয়ার আগে তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আমার বাসায় রয়ে গিয়েছিল। কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় এসেছিল। কাগজপত্রগুলো আমি যত্ন করেই রেখে দিয়েছিলাম। এসে নিয়ে গিয়েছে। বেশ অনেকক্ষণই ছিল। এলে তো আর বের করে দিতে পারি না।’

ছেলের সঙ্গে দেখা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে পরী বলেন, ‘হ্যাঁ, দেখা তো হবেই। তারও তো সন্তান পুণ্য। আমি রান্না করেছিলাম। সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছি। এই আরকি।’
তাহলে দুজনের মধ্যে সম্পর্কের জায়গাটা উষ্ণ হয়েছে, বলা যাবে কি, এমন প্রশ্নে পরীমনি বলেন, ‘উষ্ণের কী আছে। আর উষ্ণ তো হতেই পারত, কিন্তু সেটি মেইনটেইন করেনি রাজ। এই শহরে অনেকেরই তো বিচ্ছেদ হয়েছে, হয়। সন্তানকে ঘিরে কি বিচ্ছেদ বাবা-মায়ের দেখা-সাক্ষাৎ হয় না? কথা হয় না? সন্তানকে ঘিরে সুন্দর সময়ও কাটে না বাবা-মায়ের? কিন্তু রাজের বিষয়টি ভিন্ন। ও বাচ্চাকে সময় দেয়নি। সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়নি। শখ করেও কোনো দিন সন্তানকে খেলনা পর্যন্ত কিনে দিতে দেখলাম না। ঠিকমতো খবরই তো রাখেনি। আমার মনে হয়, সন্তানের মর্মই ও বোঝে না।’

আরও পড়ুন
পরীমনি। প্রথম আলো

পরীমনি আরও বলেন, ‘কয়েক দিন তো দেখলাম। রাজ পুণ্যকে কোলে নিতে চাইলে ওভাবে রাজকে বাবা হিসেবে চিনতে পারে না এখন। অথচ আগে রাজ ছাড়া পুণ্য কিছুই বুঝত না। এটি রাজের জন্য নির্মম।’ এই নায়িকার মন্তব্য, ‘সব কথার শেষ কথা, রাজের সাফল্যেও আমার যায় আসে না, ব্যর্থতাতেও নয়। সে তো আমার জীবনে অতীত। সে এখন আমার কাছে ঘৃণার পাত্র।’

এদিকে ঘৃণা করলেও রাজকে সঠিকভাবে জীবনযাপনের পরামর্শ দিয়েছেন পরীমনি। কারণ, সন্তানের বাবা হিসেবে তাঁর কার্যকলাপের বিষয়টিও সন্তানের ওপর পড়ে। বলেন, ‘অনেক কিছুই তো শুনি রাজকে নিয়ে। এমন কোনো কাজ যেন বাবা হিসেবে রাজ না করে, যাতে বড় হয়ে সবার কাছে ছোট হয় সন্তান। কারণ, সন্তানের বাবা হিসেবে রাজকে তো আর অস্বীকার করতে পারব না।’

শরীফুল রাজ
ছবি : সংগৃহীত

কিন্তু পরীর এত সব মন্তব্যের পরও সম্প্রতি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানে পাশাপাশি দেখা গেছে রাজ-পরীকে। এ ব্যাপারে কী বলবেন, জানতে চাইলে পরী বলেন, ‘আমি তো তাকে কাছে ডাকিনি। সে-ই নিজ থেকে এসেছিল। ওখানে মিশা ভাইসহ কয়েকজন সিনিয়রও ছিলেন। তার আচরণে আমি বিব্রত হয়েছি। সে নাকি ছেলেকে দেখার জন্য আমার কাছে এসেছিল।’

সন্তান রাজ্যসহ শরিফুল রাজ ও পরীমনি
ছবি : ফেসবুক

কিন্তু কেউ কেউ বলেন, আগে একই অনুষ্ঠানে দুজনের আমন্ত্রণ থাকলে পরস্পর জানতে পারলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতেন না পরী। কিন্তু ইদানীং সেই চিত্র পাল্টেছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে তাঁদের দেখা গেছে। এসব কারণে কেউ কেউ বলছেন, রাজের প্রতি পরীর মায়া তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে পরী বলেন, ‘মায়া আছে বলেই তো বাসায় ঢুকতে দিয়েছি। হাজার হলেও সে আমার সন্তানের বাবা। তাই বলে সে চাইলেই সব সময় বাসায় আসতে পারবে না। তার প্রতি আমার ঘৃণা থাকতেই পারে। তবে সে যেখানেই থাকুক, ভালো ভালো কাজ করুক, ভালো থাকুক। কারণ, সন্তানের সুন্দর জীবনের জন্য বাবাকেও ভালো থাকতে হয়।’

আরও পড়ুন