নায়িকা কেন পরিচালকের সহকারী

শাহনূর ও ছটকু আহমেদ

ঢাকার উত্তরায় গতকাল রোববার শুরু হয়েছে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র ‘আহারে জীবন’–এর শুটিং। এ যাত্রায় টানা চার দিন শুটিং হবে। ছটকু আহমেদ পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি ক্যামেরার পেছনেও কাজ করছেন চিত্রনায়িকা শাহনূর। হঠাৎ শাহনূরকে পরিচালকের সহকারী হিসেবে দেখে শুটিং স্পটের অন্যরাও সারপ্রাইজড। তবে অভিনয়ের পাশাপাশি ক্যামেরার পেছনের কাজটা ভীষণ উপভোগ করছেন এই নায়িকা। প্রথম আলোকে আজ সোমবার সকালে তেমনটাই জানালেন শাহনূর।

শাহনূর
ছবি : সংগৃহীত

‘আহারে জীবন’ চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপট করোনার সময়ের গল্প। ২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে করোনা মহামারির প্রকোপ শুরু হয়। তখন অফিস–আদালত, স্কুল–কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক কিছু বন্ধ হয়ে যায়। স্থবির হয়ে পড়ে চারপাশ। এমনকি মানুষজনও ঘর থেকে বের হচ্ছিল না। সেই সময়কার পরিস্থিতি নিয়েই ‘আহারে জীবন’ ছবির গল্প। ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারি অনুদানে তৈরি এ ছবিতে পূর্ণিমার বিপরীতে অভিনয় করছেন ফেরদৌস। ছবিতে আরও আছেন জয় চৌধুরী, মিশা সওদাগর, তুষার খান প্রমুখ। ছবিটির কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য পরিচালকের।

২৩ বছরের অভিনয়জীবন শাহনূরের। অভিনয় করতে গিয়ে একটা সময় তাঁর মনে হয়, ক্যামেরার পেছনে কাজ করতে পারলে ভালো লাগবে। এরপর ভাবতে থাকেন, কার সঙ্গে কাজ করলে তিনি ভালোভাবে পরিচালনার কৌশল শিখতে পারবেন। সিদ্ধান্ত নেন ছটকু আহমেদই হতে পারেন সেই পরিচালক, যাঁর সহকারী হিসেবে তিনি কাজ করবেন।

‘আহারে জীবন’ চলচ্চিত্রে পরিচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করার পেছনে কী ভাবনা কাজ করেছে জানতে চাইলে বলেন, ‘অভিনয় তো লম্বা সময় ধরে করছি। শতাধিক চলচ্চিত্রে নানান চরিত্রে নিজেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু এই অভিনয়টা তো আর সারা জীবন চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। অভিনয় করতে করতে একটা সময় আমার পরিচালক হওয়ার স্বপ্ন মনে জাগে। চাইলেই তো আর হয় না। তার আগে ঠিকভাবে সব জানতে হবে, শিখতে হবে। কোনো পরিচালকের সহকারী হিসেবেও কাজ করতে হবে। আমার কাছে তখন মনে হলো, ওস্তাদ হিসেবে ছটকু আহমেদের সঙ্গে কাজ করলে অনেক কিছু শিখতে পারব। এরপর তাঁর সঙ্গে কথা বললাম। তিনিও আমাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান। গতকাল থেকে সহকারী হিসেবে কাজও শুরু করে দিলাম। ইউনিটের অন্য সবাইও আমাকে নানা টেকনিক শিখিয়ে দিচ্ছেন। ভালো লাগছে।’

ছটকু আহমেদের পরিচালনায় তিনটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন শাহনূর। এর মধ্যে দুটি বাংলাদেশি প্রযোজকের ‘শেষ যুদ্ধ’ ও ‘মহাতাণ্ডব’ এবং একটি যৌথ প্রযোজনার ‘এরই নাম ভালোবাসা’। বড় পর্দায় শাহনূর সহকারী হিসেবে মাত্র কাজ শুরু করলেও ছোট পর্দার জন্য এরই মধ্যে তিনটি নাটক বানিয়েছেন। ‘সংসার’ শিরোনামের প্রথম নাটকটি পরিচালনার পাশাপাশি লেখা ও প্রযোজনা ছিল শাহনূরের। এর বাইরে কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও বানিয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে নিজেকে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে দেখার স্বপ্ন থেকে ছটুকু আহমেদের মতো পরিচালকের সহকারী হিসেবে যাত্রা শুরু করলেন তিনি।