অপু বিশ্বাস-সাইমন শোনালেন ‘লাল শাড়ি’র গল্প

সাইমন সাদিক ও অপু বিশ্বাসপ্রথম আলো

‘ঈদ শেষ হলেও রয়ে গেছে ঈদের আমেজ। কারণ, টেলিভিশনে তো ঈদের আমেজ থাকে সাত দিন পর্যন্ত। আর এবারের ঈদে দেশের সিনেমা হলগুলোতে আমার মনে হয় মাসব্যাপী এ আমেজ থাকবে। আজ আমি লাল শাড়ি পরেছি, আমার সঙ্গে দুজন অতিথির একজনকে লাল শাড়ি জড়িয়ে, ঘোমটা পরিয়ে নিয়ে এসেছি। ঘোমটাটা যদিও এখন নেই, কিন্তু প্রেক্ষাগ্রহে যখন যাবেন, ঘোমটাটা অবশ্যই দর্শকেরা দেখতে পাবেন। আর সেই ঘোমটা পরাবেন সাইমন সাদিক, পরবেন অপু বিশ্বাস।’

কথাগুলো বলছিলেন উপস্থাপক সারা ফ্যায়রুজ যাইমা। উপস্থাপকের এমন ভূমিকা, সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা দিয়ে শুরু হয় ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা নিয়ে প্রথম আলো ডটকম আয়োজিত বিশেষ আনন্দ আড্ডা ‘ওয়ালটন ফ্যান তারার ঈদ’-এর তৃতীয় পর্ব।
উপস্থাপক ‘লাল শাড়ি’ নিয়ে এত প্রশংসা কেন করলেন? ওই যে আড্ডা যেহেতু ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা নিয়ে, তাই এবারের ঈদে বন্ধন বিশ্বাসের পরিচালনায় ‘লাল শাড়ি’ সিনেমার নায়ক সাইমন সাদিক ও নায়িকা অপু বিশ্বাস অংশ নিয়েছিলেন বিশেষ এই অনুষ্ঠানে। পর্বটি আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় একযোগে প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম, প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে।

এ সিনেমার মাধ্যমে অপু বিশ্বাস নতুন এক পরিচয়ে দর্শকের সামনে হাজির হয়েছেন। সরকারি অনুদানে তৈরি সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে অপু বিশ্বাসের প্রযোজনা সংস্থা ‘অপু-জয় চলচ্চিত্র’-এর ব্যানারে। মফস্‌সলের একটি তাঁতপল্লি ঘিরে সাজানো হয়েছে ‘লাল শাড়ি’র গল্প।

একই সঙ্গে প্রযোজক এবং নায়িকা—বেশ চাপে ছিলেন কি? সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের উত্তরে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘চাপ আসলেই অনেকখানি ছিল। কারণ, ঈদে বাসাভর্তি মেহমান, পাশাপাশি ছেলের যত্ন। সঙ্গে যোগ হয়েছে দর্শকদের বাড়তি দায়িত্ব এবং কৌতূহল। দর্শক যেন সিনেমাটাকে সত্যি ভালো বলেন। এবার প্রযোজক ও নায়িকা অপু বিশ্বাস হিসেবে দুটার সাফল্য একসঙ্গে নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।’
কিন্তু এমন একটি গল্প বেছে নেওয়ার পেছনের গল্প কী ছিল? তারই উত্তর দিলেন প্রযোজক অপু বিশ্বাস। তাঁর ভাষ্যমতে, টাঙ্গাইলে গিয়েছিলেন অন্য একটা সিনেমার শুটিংয়ে। সেখানে গিয়েই তিনি প্রথমবারের মতো তাঁতশিল্পের সঙ্গে পরিচিত হন। তাঁতশ্রমিকদের একটা শাড়ি বুননে পরিশ্রমের গল্প তিনি বুঝতে পারেন। এর আগে অবশ্যই পরিচালক বন্ধন বিশ্বাসের সঙ্গে কী গল্প নিয়ে কাজ করা, সে বিষয়ে কথা চলছিল। সরকারি অনুদানের সিনেমায় যেহেতু বিভিন্ন কোটায় গল্প নির্বাচন হয়, তাই তিনি বাঙালি সংস্কৃতির একটা গল্প বাছাই করলেন। এমনই গল্প মিলে গেল তানভির সিডনির ‘শাড়ি’ গল্পে।

গল্পটি পড়ার পরই পছন্দ হলো অপু বিশ্বাসের, যুক্ত করলেন ‘লাল’ শব্দটি। সিনেমার নাম হলো ‘লাল শাড়ি’। এই চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বড় পর্দায় জুটি হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান অপু বিশ্বাস ও সাইমন সাদিক।

ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা বাজারের কৌড়ি গ্রামে শুটিং হয় ‘লাল শাড়ি’ চলচ্চিত্রের। টানা শুটিংয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সিনেমাটির কাজ।
শুটিংয়ের সময়টায় প্রথম প্রথম ভক্তরা বুঝতে না পারলেও, পরবর্তী সময়ে বুঝতে পেরেছিলেন এখানে অপু-সাইমন শুটিং করছেন। এমন অবস্থা হয়েছে, দুদিন পুলিশের নিরাপত্তায় শুটিং করতে হয়েছে, বলেন সাইমন সাদিক।
শুধু ভক্তদের চাপ ছিল তা নয়, শুটিংয়ে ভক্তদের সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদানও তৈরি হয়েছে। যুক্ত করেছেন অপু বিশ্বাস, ‘রোমান্টিক দুটি দৃশ্যের শুটিং ছিল। একটা দৃশ্য শুটিং করার পর আমি রুমে চলে আসি। পরের লোকেশনে আগেই নায়ক সাইমন সাদিক চলে যান। তৈরি হয়ে সেটে গিয়ে দেখি, সেখানকার গ্রামবাসীর ঘর থেকে আনা মাংস-ভাত পেটপুরে খেয়েছেন ইউনিটের সবাই। ভক্তদের বাড়ি থেকে এসেছে দুপুরের খাবার।’

সঞ্চালক সারা বলেন, ‘আমরা অপু বিশ্বাসের বড়শি দিয়ে মাছ ধরার গল্পও কিন্তু শুনেছি।’ সঙ্গে সঙ্গে অপুর অট্টহাসিতে মিলে গেল ঘটনার সত্যতা।      
ঈদে মুক্তি পাওয়া এত সিনেমার মধ্যে ‘লাল শাড়ি’ই কেন দেখবেন দর্শক? উত্তরে সাইমন বলেন, ‘আমরা যাঁরা দেশকে ভালোবাসি এবং আমাদের বাঙালিয়ানা বিশ্বের দরবারে বলতে চাই, তাঁদের জন্য এ সিনেমায় একটি মেসেজ আছে।’
অপু বিশ্বাস বলেন, এটা একটা নারীদের গল্প। শাড়ি বুননের পেছনে তাঁতিদের অজানা গল্পটা জানার জন্য সিনেমাটা দেখতে হবে। সর্বোপরি প্রথমবারের মতো অপু-সাইমন জুটির রসায়নটা দেখার জন্যও হলে আসতে হবে দর্শকদের।