শেষমেশ এফডিসির বাইরে পরিচালক সমিতির ভোট, কারা জিতলেন
অবশেষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত হয়েছে। দিনব্যাপী ভোট গ্রহণ শেষে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল লতিফ। এতে দেখা যায়, সভাপতি পদে পরিচালক শাহীন সুমন ১৬৬ ভোট পেয়ে হারিয়েছেন মুশফিকুর রহমানকে। অন্যদিকে মহাসচিব পদে ১৮০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শাহীন কবির, তিনি হারিয়েছেন সাফি উদ্দিনকে। এর বাইরে নির্বাচিত অন্যরা হলেন সহসভাপতি আবুল খায়ের; উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম; কোষাধ্যক্ষ সায়মন তারিক; প্রচার-প্রকাশনা ও দপ্তর সচিব ওয়াজেদ আলী; আন্তর্জাতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি সচিব বন্ধন বিশ্বাস; সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর মেয়াদি পরিচালক সমিতির নেতৃত্বে নির্বাচিত সদস্যরা হলেন ছটকু আহমেদ, শাহাদাৎ হোসেন, পল্লী মালেক, জাকির হোসেন, বজলুর রাশেদ চৌধুরী, সাইদুর রহমান, হাবিবুল ইসলাম, জয় সরকার, গাজী মাহবুব ও বুলবুল বিশ্বাস।
কয়েক দফা পিছিয়ে যাওয়ার পর আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির দুই বছর মেয়াদি নির্বাচন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে আগামী দুই বছরের জন্য পরিচালক সমিতির নতুন নেত্বত্ব নির্বাচিত হয়। সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচিত উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, সকাল ১০টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলে।
কবিরুল ইসলাম এ–ও জানান, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৫৯ জন পরিচালকের ভোট গ্রহণ হয়। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৩৯১। উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হওয়া এ ভোট গ্রহণে ৩৪ জন তাঁদের ভোট প্রদান করতে পারেননি। কারণ, তাঁরা দেশের বাইরে আছেন। তা ছাড়া জ্যেষ্ঠ পরিচালকদের মধ্যে ১৪ জন অসুস্থ। এই নির্মাতার ভাষ্য, ‘এবারের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ এফডিসির বাইরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই অপেক্ষাকৃত জ্যেষ্ঠ পরিচালকদের কয়েকজন আসতে পারেননি। তা ছাড়া যাঁরাই এসেছেন, তাতে উৎসবমুখর একটা পরিবেশ ছিল। ভোট প্রদানের ফাঁকে দিনব্যাপী পরিচালকেরা আড্ডা দিয়েছেন।’
এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন আবদুল লতিফ। বাকি দুজন নির্বাচন কমিশনার হলেন এ জে রানা ও বি এইচ নিশান।
গত বছরের শেষ দিকে এফডিসিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালকদের সংগঠনটির ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণে সেদিন আর তা হয়নি। এরপর এ নির্বাচন নিয়ে ছিল নানা জল্পনাকল্পনা। অদৌ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় কি না, এ নিয়েও ছিল সংশয়। একটি পক্ষের দাবি, কেপিআইভুক্ত এলাকা বলে বিএফডিসিতে নির্বাচনের অনুমতি পাওয়া যায়নি। আরেকটি পক্ষ বলে অন্য কথা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চলচ্চিত্র পরিচালক বলেন, নির্বাচন হতে দিতে চায় না একটি পক্ষ। কারণ, দুই প্যানেলেই আওয়ামী লীগের সমর্থক পরিচালকেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ কারণেই বারবার নির্বাচন স্থগিত হচ্ছে। অবশেষে আজ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে দুটি প্যানেল। এর মধ্যে মুশফিকুর রহমান গুলজার-সাফি উদ্দিন সাফি প্যানেলে সভাপতি ও মহাসচিব পদপ্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীরা হলেন আবুল খায়ের বুলবুল (সহসভাপতি), সালাউদ্দিন (উপমহাসচিব), সায়মন তারিক (কোষাধ্যক্ষ), আবদুর রহিম বাবু (সাংগঠনিক সম্পাদক), রফিক শিকদার (প্রচার, প্রকাশনা ও দপ্তর সচিব), এস ডি রুবেল (আন্তর্জাতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি), মুস্তাফিজুর রহমান মানিক (সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া)। এই প্যানেলে কার্যকরী সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে শাহ আলম কিরণ, ইফতেখার জাহান, মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, বজলুর রাশেদ চৌধুরী, বদিউল আলম খোকন (সাবেক মহাসচিব), গাজী মাহাবুব, আনোয়ার সিরাজী, দেওয়ান নাজমুল, জয়নাল আবেদীন ও আতিকুর রহমান লাভলু।
অন্য প্যানেলে চলতি দায়িত্বে থাকা টানা দুবারের মহাসচিব শাহীন সুমন এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সভাপতি পদে। তিনি প্যানেল গড়েছেন শাহীন কবির টুটুলকে নিয়ে। এ প্যানেলের বিভিন্ন পদে প্রার্থী হয়েছেন মনতাজুর রহমান আকবর (সহসভাপতি), কবিরুল ইসলাম রানা (উপমহাসচিব), সেলিম আজম (কোষাধক্ষ), ওয়াজেদ আলী বাবুল (প্রচার, প্রকাশনা ও দপ্তর সচিব), বন্ধন বিশ্বাস (আন্তর্জাতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি), সাইফ চন্দন (সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া)।