১৪ বছর পর অপু–নিরবের দ্বিতীয় সিনেমা

মডেল হিসেবে ২০০৭ সালের দিকে পরিচিতি পেয়েছিলেন নিরব। এরপর অভিনয় শুরু করেন টেলিভিশন নাটকে, তারপর চলচ্চিত্রে। জীবনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’—ঢাকার গুলশানে তৎকালীন ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কে ছবির গানের শুটিং দিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান অপু বিশ্বাস ও নিরব। ত্রিভুজ প্রেমের সেই ছবির প্রধান চরিত্রে ছিলেন শাকিব খান। ছবিটি মুক্তির পর একাধিক প্রস্তাব পেলেও শেষ পর্যন্ত অপু–নিরবকে আর বড় পর্দায় এক ফ্রেমে পাওয়া যায়নি। ২০২০ সালে আবার অপু ও নিরব ছবিতে জুটিবদ্ধ হন। ‘ছায়াবৃক্ষ’ নামের সেই ছবি মুক্তির অপেক্ষায়। ছবিটি মুক্তির মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৪ বছর পর প্রক্ষাগৃহে দেখা মিলবে অপু ও নিরবের।

‘ছায়াবৃক্ষ’ ছবির সংবাদ সম্মেলনে অপু বিশ্বাস ও নিরব
ছবি : প্রথম আলো

২০২০ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার একটি চা-বাগানে ‘ছায়াবৃক্ষ’ ছবির শুটিং শুরু হয়। পরের বছরের জুনে শ্রীমঙ্গলে ছবিটির শুটিং শেষ হয়। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ১৬ ফ্রেব্রুয়ারি ছবিটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। পরিচালক জানান, ছবির গল্পে দেশের একটি অঞ্চলের চা–শ্রমিকদের জীবনযাপনের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ‘ছায়াবৃক্ষ’ ছবির মুক্তি উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে অপু বিশ্বাস, নিরব, ছবির পরিচালক বন্ধন বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

‘ছায়াবৃক্ষ’ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে (বাম থেকে) ছবির প্রযোজক অনুপ কুমার বড়ুয়া, পরিচালক বন্ধন বিশ্বাস, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও চিত্রনায়ক নিরব
ছবি : ছবি : প্রথম আলো

সংবাদ সম্মেলন শেষে ছবিটি নিয়ে কথা হয় নিরবের সঙ্গে। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে প্রথম ছবি ২০০৯ সালে, এত বছর পর দ্বিতীয় ছবি—এমন প্রসঙ্গ উঠতেই নিরব বলেন, ‘আসলেই তো। দ্বিতীয় সিনেমার জন্য কত সময় পার হয়ে গেল। এর উত্তর আমিও জানি না। কেন যে এত দিন আমাদের একসঙ্গে ছবি হয়নি, আসলেই ভাববার বিষয়।’ তবে কথায় কথায় নিরব জানান, প্রস্তাব পেয়েছিলেন একাধিক চলচ্চিত্রের। কিন্তু গল্প, পরিচালক, প্রযোজক—সবকিছু মিলে শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। ২০২০ সালে এসে ‘ছায়াবৃক্ষ’ হয়েছে। সবকিছু ব্যাটে–বলে মিলেছে, তাই সম্ভব হয়েছে।

‘ছায়াবৃক্ষ’ ছবির পরিচালক বন্ধন বিশ্বাস। ছবিটিতে অপুর সঙ্গে কাজ হওয়া প্রসঙ্গে নিরব বলেন, ‘প্রথমত এই ছবির পরিচালক ও আমার হোম ডিস্ট্রিক রাজবাড়ী। আমাদের বোঝাপড়াও বেশ ভালো। বন্ধনের সঙ্গে কাজ করা নিয়ে তাই দ্বিমত ছিল না। ওর বাড়ি যেহেতু রাজবাড়ীতে, আমারও আলাদা আবেগ কাজ করত। তারপর গল্প নিয়ে। একটা চা–বাগানের শ্রমিকদের ভিন্নধর্মী একটা প্লট। আমার সঙ্গে যখন ভাবনা শেয়ার করছিল, মনে হয়েছিল, অন্য আর দশটা অনুদানের ছবির মতো হবে না। ছবির গানের পরিকল্পনাও আমাকে মুগ্ধ করেছিল। এরপর শুনলাম, নায়িকা অপু বিশ্বাস। মনে হলো, গল্পের সঙ্গে দারুণ মাননসই, পাশাপাশি আমাদেরও একসঙ্গে কাজ হবে। এসব ভেবেই কাজ করা।’

‘ছায়াবৃক্ষ’ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে (বাম থেকে) ছবির প্রযোজক অনুপ কুমার বড়ুয়া, পরিচালক বন্ধন বিশ্বাস, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, চিত্রনায়ক নিরব ও অভিনয়শিল্পী নওশাবা আহমেদ
ছবি : প্রথম আলো

নিরব এ–ও বলেন, ‘“মন যেখানে হৃদয় সেখানে” ছবি মুক্তির পর আমরা একসঙ্গে স্টেজ শো, বিভিন্ন পণ্যের প্রতিষ্ঠান ওপেনিং ও করপোরেট শো করেছি। শুধু ছবিটাই হচ্ছিল না। তবে এত বছর পর যখন শুটিং করেছি, তখন ভীষণ আন্তরিক ছিল অপু। আমি ও অপু মিলে গল্প আর চরিত্র নিয়ে নিজেদের মধ্যে অনেক আলোচনা করেছি। অপু আমাকে নানাভাবে সাপোর্ট করেছে। সাধারণত অপু ভীষণ ফ্রেন্ডলি। সবার সঙ্গে সুন্দরভাবে মেশে। সেই জায়গা থেকে বেশ সহযোগিতা করেছে। দীর্ঘদিন পর যে আমরা ছবিতে কাজ করছি, এটা বুঝতে দেয়নি।’

‘ছায়াবৃক্ষ’ সিনেমার শুটিংয়ের ফাঁকে নিরব ও অপু বিশ্বাস
ছবি : পরিচালকের সৌজন্যে

সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক বন্ধন বিশ্বাস বলেন, “‘ছায়াবৃক্ষ”–এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের শ্রম দর্শকের সামনে আসতে যাচ্ছে। সিনেমাটিতে ১০ জনের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী কাজ করেছেন। আমার বিশ্বাস, সিনেমার মাধ্যমে দর্শক নতুন এক গল্পের সঙ্গে পরিচিত হবেন।’

অনুপম কথাচিত্রের ব্যানারে নির্মিত ‘ছায়াবৃক্ষ’–এর প্রযোজক অনুপ কুমার বলেন, “‘ছায়াবৃক্ষ”–এর জন্য ৫০ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পেয়েছিলাম। সঠিকভাবে সিনেমাটি করার জন্য আরও ২০ লাখ টাকা নিজ থেকে খরচ করেছি। সব মিলিয়ে ছবিটির বাজেট ৭০ লাখ টাকা।’ নিরব, অপু বিশ্বাস ছাড়া ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন নওশাবা, সুমিত সেনগুপ্ত, শতাব্দী ওয়াদুদ, ডন, এলিনা শাম্মি, বড়দা মিঠু, আজম খান প্রমুখ।