রাজ–পরীর সম্পর্ক কোন দিকে যাচ্ছে?

পরী ও রাজ

২০ জানুয়ারি মুক্তি পাবে পরীমনি অভিনীত নতুন সিনেমা অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন। তবে সিনেমা নয়, এখন স্বামী চিত্রনায়ক শরীফুল রাজের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনায় এ অভিনেত্রী। সপ্তাহখানেক আগে পরীর ফেসবুক স্ট্যাটাস কেন্দ্র করে যার শুরু, এরপর ছয় দিন গড়ালেও এর অবসান হয়নি। গত বুধবার রাতে চিত্রনায়িকা শিরিন শিলা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন, মান-অভিমান ভুলে এক হয়েছেন রাজ-পরী। তবে একসঙ্গে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তাঁদের মধ্যে সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে, এটা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারেননি পরী। অবশ্য রাজের দাবি, তাঁদের মধ্যে আর কোনো সমস্যা নেই।
গত শুক্রবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে রাজকে নিয়ে পরীমনির স্ট্যাটাস অন্তর্জালে আসে বজ্রপাতের মতোই। ‘হ্যাপি থার্টি ফার্স্ট এভরিওয়ান! আমি আজ রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম এবং নিজেকেও মুক্ত করলাম একটা অসুস্থ সম্পর্ক থেকে,’ পরীমনির এমন স্ট্যাটাস স্বভাবতই ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। তবে তখনো আরও কিছু বাকি ছিল। বছরের প্রথম দিন গত রোববার ভোরে বালিশে ছোপ ছোপ রক্তের দাগের ছবি শেয়ার করে লিখেছিলেন, ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার। সংবাদ সম্মেলন, লোডিং...।’

পরে অবশ্য সংবাদ সম্মেলন করেননি তিনি, একই দিন বিকেলে দেওয়া দীর্ঘ স্ট্যাটাসে রাজের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ করেন। অভিনেত্রী নিজের পোস্টে রাজকে ‘প্রাক্তন’ বলেও অভিহিত করেন, জানান শিগগিরই ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেবেন।
অন্যদিকে শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত পরীর অভিযোগের উত্তর দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেননি রাজ। প্রথম আলোকে তিনি বলেছিলেন, এসব ইস্যুতে কিছুই বলতে চান না তিনি।

সমুদ্রে রাজ ও পরীমনি

দুজনের সম্পর্ক শেষ—এমনটি যখন ধরে নিয়েছেন অনেকেই, তখন নতুন চমক শিরিন শিলার পোস্ট। বুধবার রাতেই মান-অভিমান ভুলে এক হয়েছেন রাজ ও পরী—তাঁর এই দাবি কতটা সত্যি?
জানা গেছে, শুক্রবার পরী বসুন্ধরার বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই রাজও বেরিয়ে যান। পরদিনই সেই বাসায় ফেরেন পরী। এরপর গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টায় একই বাসায় ফেরেন রাজ। একসঙ্গে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে পরীমনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত দুই দিন হলো রাজ ও আমি এক বাসায়, একসঙ্গেই আছি।’ তবে কি তাঁদের সম্পর্কের ফাটল জোড়া লেগেছে? ‘ভবিষ্যতে আমাদের সম্পর্কের কী হবে, তা এখনো সঠিকভাবে বলতে পারছি না,’ বলেন পরীমনি।

সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে কেন এই অনিশ্চয়তা, জানতে চাইলে পরীমনি বলেন, ‘ছেলে রাজ্যকে মাঝে রেখে আমি ও রাজ সুন্দর একটা জীবন চেয়েছি। কিন্তু কিছুদিন ধরে সেটার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। রাজ বাসায় ফেরার পর তাকে সুন্দর একটা জীবন যাপনের জন্য বোঝাচ্ছি। তার কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করার কথা বলেছি, বলছি। বিয়ে, বাচ্চার জন্মের পর আমিও তো আমার জীবনটাকে অনেক পরিবর্তন করেছি। সেটা আপনারা দেখেছেন। আমি পারলে সে পারবে না কেন? আমি তাকে জানপ্রাণ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছি, বাচ্চার কথা ভেবে হলেও ঠিকঠাকভাবে যেন সে চলে। জীবন যাপন করে। যাতে করে বাচ্চাকে নিয়ে যেন আমরা পৃথিবীতে সুন্দর করে বাঁচতে পারি।’

পরীমনি ও রাজ

বোঝানোর পর রাজের বক্তব্য কী? পরী বলেন, ‘তার আচরণে এখনো বুঝে উঠতে পারছি না। সত্যি কথা বলি, তাকে পরিবর্তন হতেই হবে। তা না হলে তার ভবিষ্যৎ জীবন অনেক কষ্টের হবে। আমি হয়তো আমার সন্তানকে বুকে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারব। কিন্তু তার কী হবে? এসব ভাবলে আমার হাউমাউ করে কাঁদতে ইচ্ছা করে।’

কিন্তু আপনি যে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেছেন, তাঁকে ‘প্রাক্তন’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন, সেটি নিয়ে কী বলবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে পরীমনি বলেন, ‘রাজ্য পৃথিবীতে আসার আগে আমার চিন্তাভাবনা একধরনের ছিল, আসার পর অন্য ধরনের। মান–অভিমান, রাগে–ক্ষোভে অনেক কিছুই হয়। বিশ্বাস করেন, যখন রাজ সামনে আসে, তখন সব ভুলে যাই। ও বাসায় ফেরার পর তেমনটিই হয়েছে। বলতে পারেন, এটি আমার দুর্বলতা। সন্তান, স্বামী নিয়ে একটা ভালোবাসার সংসার চেয়েছি আমি। দেখা যাক কী হয়।’
তবে সম্পর্ক যদি না–ই টেকে, তাহলে কী হবে, সে বিষয়েও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে রাখলেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত এই নায়িকা, ‘যদি শেষ পর্যন্ত সম্পর্ক না–ই টেকে, তাহলে চাইব, রাজ যে পথেই হাঁটুক, যেখানেই থাকুক, সে যেন সুন্দরভাবে বাঁচে, সুন্দরভাবে চলে। কারণ, সে আমার সন্তানের বাবা। যাতে বাবার কারণে সন্তানের দিকে কেউ আঙুল তুলতে না পারে।’

পরীমনি
ফেসবুক থেকে

পরীমনির সঙ্গে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজও। হাসতে হাসতে তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে তো আছি, বিন্দাস আছি। খাচ্ছিদাচ্ছি, ঘুমাচ্ছি। পরী অনেক কথা বলছে, শুনছি। আমাদের মধ্যে এখন আর কোনো সমস্যা নেই। রাজ্যকে নিয়ে আমরা ভালো আছি।’

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন