কথা ছিল সুচকুমার, হলেন শ্বশুর!

শনিবার সন্ধ্যায় বনানীর একটি রেস্তোরাঁয় শিল্পী ও কলাকুশলীদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়প্রথম আলো

আগামী ঈদুল ফিতরে দেশজুড়ে মুক্তি পাবে সিনেমা ‘কাজলরেখা’। প্রায় পাঁচ বছর আগে ‘মৈমনসিংহ–গীতিকা’ পালা অবলম্বনে এটি পরিচালনা করেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। ছবিটির মুক্তি উপলক্ষে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বনানীর একটি রেস্তোরাঁয় শিল্পী ও কলাকুশলীদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ছবির নামভূমিকায় ‘কাজলরেখা’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। এটি হবে তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমা। সংবাদ সম্মেলনে ছবিটিতে ‘কাজলরেখা’ চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পাওয়ায় নিজের অনুভূতি জানান মন্দিরা। তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ছবিতে কাজ করবেন। পরিচালকের ‘মনপুরা’ দেখে মন্দিরা এই স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর সেই স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। এই নবাগত বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত প্রথমেই সেলিম ভাইয়ের সিনেমায় কাজ করতে পারলাম। তাও আবার “কাজলরেখা”র মত এত নামকরা একটি চরিত্রে। আমার স্বপ্ন পূরণ হলো।’

গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে কাজের সুযোগ পাওয়াতে  দারুণ খুশি মন্দিরা। বলেন, ‘এই কাজটি করার আগে ছোট পর্দায় কিছু কাজ হয়েছে। কিন্তু সেলিম ভাইয়ের মত এমন পরিচালক আমি পাইনি। সে আমার গুরু। শুরু থেকে এত সুন্দর করে অভিনয়টা আমাকে শিখিয়েছেন, মনে হয়েছে  গল্প করতে করতে অভিনয় শিখেছি আমি। এত সুন্দর করে, সহজ করে অভিনয় শেখাতে পারেন, আমার জানা ছিল না। তিনি অসাধারণ একজন মানুষ, বন্ধুর মতো। তাঁর সঙ্গে কাজ করে আমার খুবই ভালো লেগেছে।’

মন্দিরা চক্রবর্তী ও রাজ
প্রথম আলো

তখনো লোকেশনে সেট নির্মাণ চলছিল। শুটিংয়ের আগে আগে পরিচালকের সঙ্গে লোকেশন দেখতে গিয়েছিলেন মন্দিরা। তিনি বলেন, ‘এত বড় জায়গা নিয়ে সেট নির্মাণ হচ্ছিল। সেখানে কাজল রেখার বাড়ি, সুচ কুমারের বাড়ি। রাজার বাড়ি, রাজার বাড়ির মতোই লাগছিল। কাজল রেখার বাড়ি এত অদ্ভুত সুন্দর। এ সব দেখার পর রোমাঞ্চিত ছিলাম, ভাবছিলাম কবে শুটিং শুরু হবে।  খুবই আগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল কাজটির প্রতি।’
ছবিতে সুচ কুমার চরিত্রের শরীফুল রাজ বলেন, ‘এই কাজটি আমার জন্য নতুন এক জার্নি। প্রায় পাঁচ শ বছর আগের গল্পের এক ঐতিহাসিক চরিত্র সুচ কুমার। আমার সিনেমা জীবনে এটি একটি আর্কাইভ হয়ে  থাকবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম
প্রথম আলো

ছবিতে কাজল রেখার বাবা বড় বণিক ধনেশ্বরের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরেশ যাকের। তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে কাজল রেখা ছবির গল্পের সঙ্গে আমার পরিচয়। সেলিম ভাই ছবির গল্পটি নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। আজ শরীফুল রাজ যে চরিত্রটি করেছেন, সেই সুচ কুমার আমার করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা ওই সময় হলে হয়তো করা হতো। এত দিন পরে এসে কাজটি শুরু করার কারণে চরিত্রটি আর করা যায়নি। যে সুচ কুমার আমার করার কথা ছিল,এখন তাঁর শ্বশুরের চরিত্রে করলাম, সময় ও বয়স বড় নিষ্ঠুর।’

এই ঈদে আরও অনেকগুলো বড় ছবি মুক্তি পাবে। ছবির অনুপাতে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা অনেক কম। সেই ক্ষেত্রে এই ছবিটি নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন কি?—এক সংবাদকর্মীর এমন প্রশ্নে পরিচালক সেলিম বলেন, ‘আমাদের সিনেমার অবস্থা তো আগের মতো নেই। হল সংখ্যাও মারাত্বকভাবে কমেছে। এ সময়ে এসে যে কোনো সিনেমা মুক্তি দেওয়া  চ্যালেঞ্জ।আমি মনে করি  ‘কাজল রেখা’ মুক্তির উপযুক্ত সময় ঈদ উৎসব। তা ছাড়া ঈদে মুক্তি দিলে বৈশাখটাও পাচ্ছি। এ কারণেই চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি। দেখা যাক কি হয়।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আজাদ আবুল কালাম, ঝুনা চৌধুরী, সাদিয়া আয়মান প্রমুখ। এই ছবিতে কঙ্কণ দাসীর চরিত্রটি করেছেন মিথিলা।