দেশের সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল দৃশ্যশিল্প এগিয়ে নিতে আট দাবি উত্থাপন করেছে ফিল্ম অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ (ফ্যাব)। এর দাবিগুলোতে প্রথমে উঠে এসেছে গল্প বলার স্বাধীনতার কথা। বাধাহীনভাবে দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতারা কাজ করে যেতে চান। ফ্যাব মনে করে, সৃজনশীল এ কাজের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা সম্ভব। এ জন্য একটি পেশাগত অবকাঠামো দরকার। যেখানে চলচ্চিত্র প্রযোজনা কর্মকাণ্ডে সব সুবিধা পাবেন নির্মাতা, প্রযোজক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
দাবিতে বলা হয়, অবিলম্বে একটি ফিল্ম কমিশন গঠনের পদক্ষেপ দরকার। যেখানে চিন্তা থেকে নির্মাণ হয়ে প্রদর্শনী পর্যন্ত ওয়ান–স্টপ সল্যুশন রূপরেখা হবে। কারণ, বাংলাদেশে একটি সিনেমা নির্মাণ করতে গেলে পরিচালক ও প্রযোজকদের নাম নিবন্ধন, নির্মাণপ্রক্রিয়া, পোস্টপ্রোডাকশন, প্রচারণা, ডিস্ট্রিবিউশন, প্রদর্শন পর্যন্ত নানা ধরনের বাধার মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যেতে হয়।
ফ্যাবের আয়োজনে সাতটি সেশনের প্রতিটিতে নির্মাতা, প্রযোজক ও কলাকুশলীদের কণ্ঠে উঠে আসে গল্প বলার স্বাধীনতা প্রসঙ্গ। যেখানে আমলাতান্ত্রিক কোনো জটিলতা থাকবে না। এ বাধা দূর করতে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করবে ফ্যাব। আট দফা পেশ করেন তারিক আনাম খান। প্রতিটি দফা পেশ করার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত দর্শকেরা করতালি দিয়ে স্বাগত জানান।
এ দফাগুলোতে আরও উল্লেখ করা হয়, সার্টিফিকেশন অ্যাক্ট, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, পর্নোগ্রাফ অ্যাক্ট রিভিউ করতে হবে। এ জন্য একটি কমিটি গঠনের কথা প্রস্তাবে বলা হয়। যারা সমসাময়িক সিনেমা ও কনটেন্টের সম্ভাবনার কথা বিবেচনায় রেখে আগামী ২০ বছরের জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন।
বর্তমানে দেখা যায়, সিনেমায় দিন দিন লগ্নিকারকের সংখ্যা কমছে। এখানে হল না থাকায় প্রযোজকেরা বিনিয়োগ করতে ভরসা পাচ্ছেন না। এ জন্য চলচ্চিত্রশিল্পকে বিনিয়োগবান্ধব করতে হবে। বিভিন্ন সময় নির্মাতা, প্রযোজক ও শিল্পীদের নানা অনুভূতিতে আঘাতের কথা বলে গ্রেপ্তার ও নিপীড়ন করা হয়। এ ধরনের আইনি অভিযোগে কমিটি গঠন করে ডিস্পিউট ম্যানেজমেন্ট করতে হবে। তা ছাড়া কোনো শিল্পীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, সেন্সর বোর্ড চলচ্চিত্রকে ছাড়পত্র না দিয়ে দিনের পর দিন আটকে রাখে, যা অযৌক্তিক। এতে স্বাধীনভাবে গল্প বলা যায় না। ‘শনিবার বিকেল’সহ সব চলচ্চিত্রের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।