অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
জন্মদিনে দেশে নেই দেশবরেণ্য অভিনয়শিল্পী ববিতা। তিনি এখন আছেন কানাডায়, একমাত্র ছেলে অনিকের কাছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ছেলের কাছে উড়াল দিয়েছেন ববিতা। থাকবেন আগামী নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর দেশবরেণ্যে এই অভিনয়শিল্পীর ঢাকায় ফেরার কথা। আজ বুধবার কানাডার স্থানীয় সময় সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে কথা প্রসঙ্গে জানালেন ববিতা।
আজ ৩০ জুলাই ববিতার জন্মদিন। কয়েক বছর ধরে এই দিনে ঢাকায় থাকলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে গুলশানের বাসায় গান শোনা, আড্ডা দেওয়া, খাওয়াদাওয়া হয়। এর বাইরে পরিচিতজনেরা শুভেচ্ছা জানান। এবার ওসব নেই, যেহেতু কানাডায় আছেন তিনি। ববিতা প্রথম আলোকে জানান, জন্মদিন নিয়ে সেভাবে কোনো ধরনের পরিকল্পনা নেই। কখনো এটা থাকেও না। বললেন, ‘আমার ছেলের আজকে অফিস আছে। বিকেল পাঁচটায় ওর অফিস শেষ হবে। এরপর মা–ছেলে দুজন মিলে ঘুরতে যাব। ছবি তুলব। রাতের খাবার খাব। কেক কাটব। তারপর দুজন মিলে বাসায় ফিরব। ছেলের কাছে আছি, এটাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার।’
তবে জন্মদিনে অভিনেত্রী মা ববিতাকে উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন ছেলে অনিক। ববিতা বললেন, ‘এই উপহার পেতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। কারণ, আমাকে নিয়ে একটা সুন্দর জায়গায় ঘুরতে যাবে, মা–ছেলে কয়েকটা দিন নিজেদের মতো করে কাটিয়ে আসব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে একটা নতুন জায়গায় নিয়ে যাবে, দুই ঘণ্টার বিমানভ্রমণ। আশা করছি, নতুন জায়গা থেকে সুন্দর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরব।’
একটা সময় অভিনয়ে অনেকটা সময় কাটত ববিতার। অন্য কিছু চাইলেও ভাবতে পারতেন না। তাই এখন জীবন নিয়ে নানা রকম উপলব্ধি আসে বলে জানালেন। তাঁর মতে, যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়।
ববিতা বললেন, ‘মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না। তবে এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে, অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ—বছর দুয়েক আগে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে “ববিতা ডে” ঘোষণা করেছেন। এর মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদ্যাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারও বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।’
বয়স বাড়ার সঙ্গে মানুষ নানা ধরনের অসুখবিসুখে আক্রান্ত হন। কেউ আবার দীর্ঘ সময় শয্যাশায়ী থাকেন। চেনা–পরিচিত এবং আত্মীয়স্বজনের মধ্যে অনেককে এমন অবস্থায় দেখেছেন। এমন জীবন চান না ববিতা। বললেন, ‘চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যাঁরা একা থাকেন, তাঁদের জন্য এই কষ্ট যেন আরও বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।’