অবশেষে ‘যৈবতী কন্যার মন’

‘যৈবতী কন্যার মন’ বানাবেন বলে সরকারের কাছ থেকে অনুদান নেন নার্গিস আক্তার
ছবি: সংগৃহীত

‘যৈবতী কন্যার মন’ বানাবেন বলে সরকারের কাছ থেকে অনুদান নেন নার্গিস আক্তার। সেটা ২০১২-১৩ সালের কথা। নির্ধারিত সময়ে ছবি তো বানাতে পারলেনই না, সময়ক্ষেপণের অপরাধে মামলাও হয় তাঁর নামে। ছবির গল্পের অন্তরালে এটি নির্মাণ করতে গিয়ে আরেক গল্প তৈরি হয়ে যায়। অবশেষে প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত ছবিটি। আজ শুক্রবার থেকে প্রেক্ষাগৃহে দেখাতে আর বাধা নেই যৈবতী কন্যার মন।

‘কালিন্দী’ চরিত্রে দেখা যাবে কলকাতার মডেল সায়ন্তনী দত্তকে
ছবি: ফেসবুক থেকে

নানা কারণে পিছিয়ে গিয়েছিল ছবিটির শুটিং। নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের গল্প থেকে ছবির চিত্রনাট্য লিখতেই কেটে যায় আড়াই বছর। ছবির গল্পের জন্য জুতসই অভিনয়শিল্পী, লোকেশন আর ১০০ বছর আগের আবহ সৃষ্টি করতে বেগ পেতে হয় নির্মাতাকে। একপর্যায়ে বাংলাদেশ ও ভারত থেকে অভিনয়শিল্পী নিয়ে শুরু হয় শুটিং।
যৈবতী কন্যার মন নিয়ে কিছু নোট রেখে গিয়েছিলেন সেলিম আল দীন। সেসব সংগ্রহ করেছেন পরিচালক নার্গিস আক্তার। নোট মিলিয়ে ডাগর কালো চোখের নায়িকা খুঁজে আনতে হয়েছে ভারত থেকে। ছবির সেই ‘কালিন্দী’ চরিত্রে দেখা যাবে কলকাতার মডেল সায়ন্তনী দত্তকে। নির্মাতা মনে করেন, সময় ব্যয় হয়েছে অনেক, কিন্তু গল্পের আবেদন পুরোনো হওয়ার নয়। তিনি বলেন, ‘সন্তান বড় করার মতো সংগ্রাম করে আমরা ছবিটি শেষ করেছি। অবশেষে প্রশংসাসহ আনকাট সেন্সর সনদ পেয়েছে সেটি। ছবিটি এখন দর্শকের কাছে যাওয়া দরকার। এই ছবি চাইলেও কেউ দ্বিতীয়বার আর বানাতে পারবে না। সেলিম আল দীনের স্ত্রী গল্পের কপিরাইট আমার নামে লিখে দিয়ে গেছেন। এই ছবি কতটা পয়সা আনবে, এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। বরং ছবিটার আর্কাইভাল মূল্য আমার কাছে অনেক। একটু সুস্থ হয়ে উঠলেই দর্শকসারিতে বসে ছবিটি দেখব, দর্শকের প্রতিক্রিয়া জানব।’

ছবির অভিনয়শিল্পী সায়ন্তনী দত্ত ও গাজী আবদুন নূর
ছবি: সংগৃহীত

ছবির অভিনেতা গাজী আবদুন নূর পরিচিত মুখ। ভারতীয় বাংলা টিভি চ্যানেলের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’র অন্যতম মুখ্য চরিত্রের অভিনেতা ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে যৈবতী কন্যার মন ছবিতে তাঁর অংশের শুটিং শুরু হয়। ভারত থেকে নিয়ম করে দুই দিনের জন্য ঢাকায় আসতে হতো বাংলাদেশের এই অভিনয়শিল্পীকে। আবদুন নূর বলেন, ‘এটা যে আমার অভিনীত প্রথম ছবি, সেটা দর্শক বুঝবে না। সেলিম আল দীনের “আলাল” হওয়ার জন্য ভারতীয় নাটকের শুটিংয়ের মধ্যেও প্রস্তুতি নিয়েছি। এই ছবি দিয়ে আমি বাংলাদেশের দর্শকের সঙ্গে অন্যভাবে পরিচিত হতে চাই। খুব বেশি প্রত্যাশা আমার নেই, তবে এটুকু চাওয়া, ছবিটি যেন সবাই দেখেন।’

ছবির অভিনয়শিল্পী গাজী আবদুন নূর
ছবি: সংগৃহীত

সায়ন্তনী দত্তেরও ইচ্ছা ছিল দর্শকসারিতে বসে নিজের প্রথম সিনেমাটি দেখবেন। ভিসা-জটিলতার কারণে আপাতত সেটা আর হচ্ছে না। তবে তাঁরও প্রত্যাশা, মানুষ ছবিটি দেখুক। ভারত থেকে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘সেলিম আল দীনের মতো একজন লেখক ও গুণী পরিচালকের ছবি দিয়ে আমার অভিষেক হচ্ছে, এ নিয়ে আমি ভীষণ আনন্দিত। তবে দর্শকদের সঙ্গে হলে গিয়ে ছবিটি দেখতে পারছি না বলে দুঃখ পেয়েছি। বাংলাদেশের দর্শকদের অনুরোধ করব, স্বাস্থ্যসতর্কতা মেনে ছবিটি হলে গিয়ে দেখুন।’
গত বছর মহামারির আগে মুক্তির কথা ছিল যৈবতী কন্যার মন। পরে আবারও পিছিয়ে আজ মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। জানা গেছে, ঢাকার ব্লকবাস্টার সিনেমাস, স্টার সিনেপ্লেক্স ও শ্যামলীতে দেখা যাবে এটি। একই সঙ্গে ঢাকার বাইরের বেশ কয়েকটি হলেও ছবিটি মুক্তির কথা রয়েছে।

ছবির অভিনয়শিল্পী গাজী আবদুন নূর ও সায়ন্তনী দত্ত
ছবি: সংগৃহীত