আমি রাইসুল ইসলাম আসাদ না
বাংলাদেশের নন্দিত অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ–এর আজ ৬৮তম জন্মদিন। মুক্তিযুদ্ধের পরই তিনি মঞ্চ, সিনেমা, টেলিভিশন ও বেতারে অভিনয় শুরু করেন। জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক তাঁর সম্পর্কে কিছু তথ্য।
আসাদ আমার ছোট ভাই
সব সময়ই গল্পের বাছবিচার করে অভিনয় করতেন রাইসুল ইসলাম আসাদ। ৯০ দশক এবং ২০০০ সাল–পরবর্তী সময়ে অভিনীত নাটকের জন্য রাস্তায় বের হলে দর্শকদের কাছে থেকে প্রশংসা পেতেন। কিন্তু নাটকের মান কমে যাওয়ায় একসময় অভিনয় কমিয়ে দেন তিনি। কিন্তু রাস্তায় বের হলে অনেকেই তাঁকে বলতেন, আপনি কেন অভিনয় করছেন না। উত্তরে এক সাক্ষাৎকারে এই অভিনেতা বলেন, ‘কেউ যেন চিনতে না পারে, সেই জন্য প্রায়ই ক্যাপ মাথায় দিয়ে রাস্তায় হাঁটতে বের হতাম। যখন চিনে ফেলত এবং বলত, আপনি কেন অভিনয় করেন না, বলতাম, রাইসুল ইসলাম আসাদ আমি না। তিনি আমার ছোট ভাই।’
ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলা অপছন্দ
মূলত কাজ নিয়েই কথা বলতে চান এই অভিনেতা। তিনি চান কাজ দিয়েই সবাই তাঁকে মূল্যায়ন করুক। তিনি সকালে কী খান, কী পরেন, পরিবারের কী কী করেন, সারা দিন অবসরে কী করলেন—এসব প্রশ্ন এভয়েড করেন। শুনলেও কিছুটা বিরক্ত হন।
ফেলের ভয়ে অডিশন দেননি
গুণী অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ ক্যারিয়ারে বিভিন্ন জায়গায় অভিনয়ে সফল হয়েছেন। কিন্তু তিনি কখনো নাটক, সিনেমায় অভিনয়ের জন্য কোথাও গিয়ে অডিশন দেননি। তিনি মনে করতেন অডিশন মানে পরীক্ষা। তাঁর ধারণা ছিল, এভাবে পরীক্ষা দিয়ে কখনোই তিনি পাস করতে পারবেন না।
একসঙ্গে ১০ চরিত্রে অনুশীলন করতেন
ঢাকা থিয়েটারের শুরুর দিকে নাটকের অনুশীলনে একসঙ্গে ১০টি চরিত্রে অভিনয় করতেন এই অভিনেতা। এভাবে দুই থেকে আড়াই বছর অনুশীলন করার পর নাটকের মঞ্চায়নের ৭ দিন আগে নির্মাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফ একটি চরিত্র করতে দিতেন। অনেক সময় পছন্দের চরিত্র পেতেন না। এ নিয়ে কোনো আফসোস নেই। বেশির ভাগ নাটকের ডায়ালগ তাঁর মুখস্থ থাকত।
আরও কিছু তথ্য
১. ১৯৭১ সালে গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন রাইসুল ইসলাম আসাদ।
২. তিনটি নাটকের দলে কাজ করেছেন আসাদ—বহুবচন, আরণ্যক, ঢাকা থিয়েটার।
৩. ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমানের ‘আবার তোরা মানুষ হ’ দিয়ে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু করেন আসাদ।
৪. চলচ্চিত্রে অভিনয় করে এখন পর্যন্ত ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন।
৫. কলকাতার পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ‘লাল দরজা’ চিত্রনাট্য পছন্দ হওয়ার পরও ছবিটা করতে চাননি আসাদ। কারণ, পুরো সিনেমায় তাঁকে গাড়ি চালাতে হবে। অথচ গাড়ি চালনায় তিনি আনাড়ি।