আলমগীরের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানালেন রুনা লায়লা

আলমগীর ও রুনা লায়লা
সংগৃহীত

নায়ক, পরিচালক ও প্রযোজক আলমগীরের করোনায় আক্রান্তের খবরে উদ্বিগ্ন দেশ–বিদেশে থাকা তাঁর ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। হাসপাতালে ভর্তি বরেণ্য এই অভিনয়শিল্পী কেমন আছেন, তা জানতে যোগাযোগ করা হয় তাঁর স্ত্রী উপমহাদেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী রুনা লায়লার সঙ্গে। আজ মঙ্গলবার বিকেল পৌনে চারটায় তিনি জানালেন, দুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হলেও এখন অবস্থা কিছুটা ভালো।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে কোভিড–১৯–এর দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের কিংবদন্তি দম্পতি আলমগীর ও রুনা লায়লা। গত শনিবার সকালে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে তাঁরা করোনার দ্বিতীয় টিকা গ্রহণ করেন। তাঁদের সঙ্গে একই দিনে টিকা গ্রহণ করেন আলমগীরের তিন সন্তান—মেহরুবা আহমেদ, আঁখি আলমগীর, তাসবির আহমেদসহ মোট ১২ জন।

রুনা লায়লা জানালেন, করোনার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আগের দিন থেকে আলমগীর তাঁর খুসখুসে কাশির কথা বলছিলেন। তাই দুজনেই তাঁদের মোহাম্মদপুরের আসাদ অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে করোনার পরীক্ষা করান। ১৮ এপ্রিল সকালে রিপোর্ট হাতে পেলে জানতে পারেন, আলমগীর করোনা পজিটিভ, রুনা লায়লা করোনা নেগেটিভ। এ দিন বিকেলেই ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় আলমগীরকে। রুনা লায়লা বলেন, ‘করোনা পজিটিভ হওয়ার পর আমরা ভাবলাম, বাড়িতে রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেয়ে হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে আলমগীর সাহেবকে রাখা গেলে ভালো হয়। তারপর কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা হয়।’

চিত্রনায়ক আলমগীর
সংগৃহীত

কথায় কথায় রুনা লায়লা এ–ও বললেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আগের দিন থেকে আলমগীর সাহেব বলছিল গলা জ্বলছে। রোজাও ছিল। আমি বললাম, “গারগল করো।” আমাকে বলল, “দিনে গারগল করলে তো রোজা ভেঙে যায়। ইফতারের পর করব।” বলল, শুকনা কাশিও আছে। আমি বললাম, “আমারও তো হচ্ছে।” পরের দিন ১৭ এপ্রিল সকালে সবাই মিলে টিকা নিতে গেলাম। তখন আবার কাশি ছিল না। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে বাসায় ফেরার পর বিশ্রাম নিল। ঘুম থেকে ওঠার পর দেখি কাশির মাত্রা বেড়েছে। এরপর আমরা ভাবলাম, যেহেতু করোনার উপসর্গ আছে, তাই পরীক্ষা করে নেওয়াটাই উত্তম। দুজনে করলাম। আমার নেগেটিভ, ওর হয় পজিটিভ। এরপর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। এই ডাক্তারকে ফোন করি, ওই ডাক্তারকে ফোন করে পরে একটি হাসপাতালে কেবিন পেলাম। এরপর সেখানেই ভর্তি করানো হয়।’

চিত্রনায়ক আলমগীর।
প্রথম আলো।

রুনা বললেন, ‘আলমগীর সাহেবের অক্সিজেন স্যাচুরেশন ঠিকঠাক আছে। হাসপাতালে ভর্তির পরই ফুসফুসের সিটি স্ক্যানও করানো হয়েছে। অবস্থা ঠিকঠাক আছে আলহামদুলিল্লাহ। ১০ দিন চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। শুরুতে খুসখুসে কাশি ও মাথা ধরা থাকলেও এখন তেমন কোনো উপসর্গ নেই। বাসা থেকে খাবার দিয়ে আসা হচ্ছে। স্বাভাবিক সব খাবারই খেতে পারছে। আলমগীর সাহেব মাছ খেতে একটু বেশি পছন্দ করে, সেটাও বেশি দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল থেকেও যেসব খাবার দেওয়া হয়, সেসবও খাচ্ছে। সবাই দোয়া করুন। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সুস্থ রাখুন।’

চিত্রনায়ক আলমগীর।
প্রথম আলো

এদিকে রুনা লায়লার সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হওয়ার আগেই তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। তাতে লিখেছেন, ‘আলমগীর সাহেব কোভিড-১৯ পজিটিভ। ঢাকার একটি স্থানীয় হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। অসাধারণ কয়েকজন দক্ষ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালের সেবিকা ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখছেন। বেশ যত্ন করছেন। আলমগীর সাহেবও এখন মানসিকভাবে শক্ত আছেন এবং ভালো অনুভব করছেন। সবাই তাঁর দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন। আমাদের সবার শুভকামনা এবং দোয়া তাঁকে দ্রুত নিরাময় করবে...।’