এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় মর্মাহত, ক্ষুব্ধ কবরী

নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকার মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় হতবাক নায়িকা কবরী। ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কবরী বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। সেখানকার একজন সাবেক সাংসদ হিসেবে, মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এটা আমার অধিকার। ছয়টা এসি কীভাবে একই সঙ্গে ব্লাস্ট হলো।’

সারাহ বেগম কবরীপ্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকার মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় হতবাক নায়িকা কবরী। ঘটনার খবর জানার পর থেকেই স্বজন হারানো মানুষগুলোর জন্য কষ্ট পাচ্ছেন তিনি। ওই অঞ্চলের সাবেক সাংসদ হিসেবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার মসজিদে এসি বিস্ফোরণে ৫০ জনের বেশি মানুষ গুরুতর আহত হন। তাঁদের মধ্যে ৩৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন ১৯ জন। ঘটনায় শোকাহত নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনের সাবেক সাংসদ সারাহ বেগম কবরী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি মর্মাহত। ভুক্তভোগীদের প্রতি সমবেদনা জানানোর ভাষা আমার নেই। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের সাংসদ ও শিল্পপতিদের অনুরোধ করব, ভুক্তভোগীদের সাহায্যে এগিয়ে আসুন। তাঁরা সবাই মিলে যেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।’

সারাহ বেগম কবরী
প্রথম আলো

ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কবরী বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। সেখানকার একজন সাবেক সাংসদ হিসেবে, মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এটা আমার অধিকার। ছয়টা এসি কীভাবে একই সঙ্গে ব্লাস্ট হলো। কীভাবে আগুন লাগল? সুষ্ঠু তদন্ত হলে এটা বের করা সম্ভব। ঘটনাটি শোনার পর থেকে আমার প্রাণ কাঁদছে। কারণ, আমি তল্লার মানুষের কাছে ভোট চাইতে গিয়েছিলাম। আমি জানি সেখানকার ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত দুর্বল। সেখানে কোনো উন্নয়ন হয়নি। এসব নিয়ে আমাদের এক্ষুনি ভাবতে হবে। বিভিন্ন সময় নানা রকম দুর্ঘটনায় সেখানে মানুষ মারা যাচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না। কোত্থেকে গ্যাস নির্গত হয়েছে, কীভাবে আগুন লেগেছে, সেসবও মনিটরিং করা দরকার। নারায়ণগঞ্জ ব্যবসা-বাণিজ্যের এত বড় একটা জায়গা, অথচ গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই, এত চিপা গলি সেখানে।’

১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘সুতরাং’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন কবরী। পরে তিনি অভিনয় করেছেন ‘হীরামন’, ‘ময়নামতি’, ‘চোরাবালি’, ‘পারুলের সংসার’, ‘বিনিময়’, ‘আগন্তুক’সহ বহু ছবিতে। জহির রায়হানের উর্দু ছবি ‘বাহানা’ এবং ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লা কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুন নির্মিত ‘সারেং বউ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন কবরী। বর্তমানে সরকারি অনুদান নিয়ে ‘এই তুমি সেই তুমি’ নামে একটি চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে ব্যস্ত তিনি।