কানের পথে সাদ–বাঁধনরা
করোনা মহামারির কারণে ফ্রান্সের ভিসা হয় কি না, তা নিয়ে ছিল সংশয়। অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠা ছিল, আদৌ কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেওয়া যাবে কি না। অপেক্ষার পালা শেষ। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, আজমেরী হক বাঁধনসহ রেহানা মরিয়ম নূর চলচ্চিত্রের আট সদস্যই পেয়েছেন ভিসা। কাতার এয়ারওয়েজের বিমানে চড়ে আজ শুক্রবার ভোরের ফ্লাইটে প্যারিসের উদ্দেশে তাঁদের উড়াল দেওয়ার কথা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ভিসা হাতে পান রেহানা মরিয়ম নূর চলচ্চিত্রের আট সদস্য। এরপর তড়িঘড়ি শুরু হয় ব্যাগ গোছানো। ভিসা হাতে পেয়ে ছবির অন্যতম অভিনয়শিল্পী বাঁধন বলেন, ‘এমন একটি ঐতিহাসিক ট্রিপের অংশ হতে পেরে আমি ভীষণ আনন্দিত। এটা জীবনের কত বড় অর্জন, সত্যি বলতে আমার মতো মানুষের বোঝার ক্ষমতা নেই! তবে ছবির অন্য যাঁরা যেতে পারছেন না, তাঁদের জন্য মনটা খারাপ।’
বাঁধন জানালেন, তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্র এখন পর্যন্ত পুরোটা দেখার সুযোগ তিনি পাননি। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাদ বলত, “তুমি একবারে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারে দেখবে।” সেই কথাই সত্যি হচ্ছে। সত্যিই এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার।’
কিন্তু উৎসব তো শুরু হবে আগামী ৬ জুলাই। আপনারা এত আগে যাচ্ছেন কেন? জবাবে বাঁধন বলেন, ‘প্যারিসে পৌঁছানোর পর ১০ দিন আমাদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।’ ১৮ জুলাই দেশে ফিরবেন তাঁরা। এর আগে প্রথম আলোকে পাঠানো এক বিবৃতিতে সাদ জানিয়েছেন, ‘কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশের প্রথম ছবি হিসেবে রেহানা মরিয়ম নূর আমন্ত্রিত হওয়ায় আমি আনন্দিত এবং সম্মানিত। এ অর্জন পুরোপুরি আমার টিমের। তারা সবাই মিলে অমানুষিক কষ্ট করেছে আর সর্বোচ্চ উদ্যমটা দিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ এই মেধাবী টিম এবং আমার খুব সেনসিটিভ অভিনয়শিল্পীদের কাছে। তাঁরা ছাড়া আমি কখনোই এতটুকু আসতে পারতাম না।’
বিবৃতিতে নিজের সিনেমার গল্প প্রসঙ্গেও জানিয়েছেন সাদ। তিনি বলেন, ‘মধ্যবিত্ত পরিবারে অনেক ভাইবোনের মধ্যে আমি বেড়ে উঠেছি। আমার চিন্তাভাবনায় তাদের অনেক প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে আমার বড় তিন বোনের। রেহানাকে নিয়ে লিখতে শুরু করি সম্ভবত সে রকম একটা জায়গা থেকেই। একটু একটু করে রেহানাকে নিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করতে শুরু করি। তার ভেতরের ক্ষোভ আর অবিশ্বাস নিয়ে ভাবি। তার ভেতরের কমপ্লেক্সিটি এবং কনট্রাডিকটরি আচরণ বোঝার চেষ্টা করি। রেহানা কী চায় এবং কেন চায়, এটা নিয়ে লিখতে লিখতে ক্রমে আরও প্রশ্ন বের হয়ে আসতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ওই প্রশ্নগুলোই আমাকে ইন্সপায়ার করে ছবিটা করতে।’
আঁ সার্তে রিগা বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে ১৫ দেশের ১৮টি সিনেমা। প্রতিভাবান ও প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ পরিচালকদের সঙ্গে বিশ্বকে পরিচয় করিয়ে দিতে ১৯৭৮ সালে বিভাগটি চালু করেন জিল জ্যাকব। এই বিভাগে বিজয়ী সেরা ছবিকে দেওয়া হয় ৩০ হাজার ইউরো। ৬ জুলাই থেকে ফ্রান্সের কানে বসবে উৎসবের ৭৪তম আসর।