কোন দুজন পাচ্ছেন আজীবন সম্মাননা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ এ আজীবন সম্মাননা প্রদানের বিষয়ে সুচন্দা ও সোহেল রানার নাম বেশি শোনা যাচ্ছেপ্রথম আলো।

কয়েক বছর ধরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে দুজন শিল্পীকে। সেই ধারাবাহিকতা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯–এও থাকছে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। তবে কেউই বিষয়টি সম্পর্কে সরাসরি কিছুই বলতে চাইছেন না। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বেশ কয়েকটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোটামুটি নিশ্চিত করেছে, এবার আজীবন সম্মাননা পেতে যাচ্ছেন কোহিনুর আক্তার সুচন্দা ও সোহেল রানা।

সোহেল রানা
প্রথম আলো

কয়েক দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে এ সিদ্ধান্ত প্রজ্ঞাপন আকারে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা। এদিকে আজীবন সম্মাননায় যে দুজন বরেণ্য অভিনয়শিল্পীর নাম শোনা যাচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, এ বিষয়ে তাঁরা এখনো কিছুই জানেন না।

সুচন্দা
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে যুগ্মভাবে সেরা ছবি হিসেবে ‘ফাগুন হাওয়ায়’ এর নাম শোনা যাচ্ছে
সংগৃহীত।

কথা হয় সুচন্দার সঙ্গে। ১০ মাসের বেশি সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। মাস দেড়েক আগে বাংলাদেশে ফিরেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এসবের কিছুই জানি না। যতক্ষণ সবকিছু চূড়ান্ত না হয়, তার আগে আমি এসব বিষয়ে কিছুই বলতে চাই না। কারণ, গতবারও এমনটা শুনেছিলাম। তাই বলছি, প্রজ্ঞাপন হোক, তারপর বিশ্বাস করব।’
সুচন্দা আরও বলেন, ‘দীর্ঘ অভিনয়জীবনে যথেষ্ট পেয়েছি, এই সম্মাননা যদি পাই, তাহলে প্রাপ্তির খাতায় আরেকটি যোগ হবে—এই আরকি।’ সুচন্দা এখন ঢাকার পুরোনো ডিওএইচএসের বাড়িতে আছেন। তিনি বলেন, ‘এক জীবনে মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি, তা পুরস্কারের চেয়ে অনেক বড়। মানুষের এই ভালোবাসাই একজন শিল্পীর জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার।’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে যুগ্মভাবে সেরা ছবি হিসেবে ‘ন ডরাই’ এর নাম শোনা যাচ্ছে
সংগৃহীত।

আজীবন সম্মাননার বিষয়ে কথা হয় সোহেল রানার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি এখনো কারও কাছ থেকে কিছুই শুনিনি, কিছুই জানি না। যদি সত্যি হয়, প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়, তখন এ বিষয়ে কিছু কথা বলব। তার আগে কিছু বলতে চাই না।’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭ ও ২০১৮ আসরে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় এ টি এম শামসুজ্জামান, প্রবীর মিত্র, সুজাতা ও আলমগীরকে
সংগৃহীত।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে গেল পাঁচ বছরে যাঁরা আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন,তাঁরা হলেন আলমগীর ও প্রবীর মিত্র (২০১৮), এ টি এম শামসুজ্জামান ও সুজাতা (২০১৭), ববিতা ও ফারুক (২০১৬), শাবানা ও ফেরদৌসি রহমান (২০১৫) এবং সৈয়দ হাসান ইমাম ও রানী সরকার (২০১৪)।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ আসরে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় ফারুক ও ববিতাকে।
সংগৃহীত।

এদিকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯–এ প্রধান চরিত্রের সেরা অভিনেতা হিসেবে তারিক আনাম খান (আবার বসন্ত) এবং সেরা অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামালের (ন ডরাই) নাম জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। যুগ্মভাবে সেরা ছবির জন্য ফরিদুর রেজা সাগরের ফাগুন হাওয়ায় ও মাহবুর উর রহমানের ন ডরাই ছবির নাম শোনা যাচ্ছে। মুক্তির দিক দিয়ে দ্বিতীয় সিনেমা ন ডরাই পরিচালনার জন্য সেরা পরিচালক হতে পারেন তানিম রহমান অংশু।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ আসরে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় শাবানা ও ফেরদৌসি রহমানকে।
সংগৃহীত।

শোনা যাচ্ছে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯-এ সবচেয়ে বেশি পুরস্কার ঘরে তুলতে যাচ্ছে মাসুদ পথিক পরিচালিত মায়া দ্য লস্ট মাদার ছবিটি। একটি সূত্র বলছে, এই ছবি আটটি বিভাগে পুরস্কার পেতে পারে। ছয়টি বিভাগে সেরার পুরস্কার অর্জনের খবর শোনা যাচ্ছে ন ডরাই ছবির। তিনটি করে পুরস্কার পাওয়ার খবর রয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ফাগুন হাওয়ায় ও দেশ বাংলা মাল্টিমিডিয়ার মনের মতো মানুষ পাইলাম না ছবির।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৫ আসরে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় রানী সরকার ও সৈয়দ হাসান ইমামকে।
সংগৃহীত।

শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী হিসেবে আফরীন আক্তার ও নাইমুর রহমান এবং সেরা সংগীত পরিচালক হিসেবে শুরু থেকেই চিরকুট ব্যান্ডের ইমন চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে সুরকার তানভীর তারেক ও প্লাবন কোরেশী (আবদুল কাদির), গীতিকার কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও নির্মলেন্দু গুণের নাম শোনা যাচ্ছে। এবার পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে ফজলুর রহমান বাবু পুরস্কার পেতে পারেন।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ এ খল চরিত্রের সেরা অভিনয়শিল্পী হিসেবে জাহিদ হাসানের নাম শোনা যাচ্ছে।
ছবি: সংগৃহীত

পুরস্কারের তালিকায় এসব নাম শোনা গেলেও বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। কেননা, এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি, তাই শেষ মুহূর্তে কিছু বদলে গেলেও যেতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
এদিকে গত ১৭ নভেম্বর তথ্য মন্ত্রণালয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য মনোনীত ৩৩ শিল্পী ও কলাকুশলীর পুরস্কার প্রদানে দরপত্র আহ্বান করেছে। দরপত্রে মনোগ্রামসহ ৩৩টি পাটের ব্যাগ, চেক ও সনদ ফোল্ডার তৈরির কথা উল্লেখ করা হয়।