খালেদা আক্তার কল্পনার অন্য রকম প্রতিবাদ

খালেদা আক্তার কল্পনা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী খালেদা আক্তার কল্পনা। প্রায় ৫০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর দীর্ঘদিনের অভ্যাস, অভিনয়ের পাশাপাশি নাটকের চিত্রনাট্য লেখা। সেসব চিত্রনাট্য তিনি বেশ কজন নির্মাতার কাছে পাঠান। সেসব গল্প পারিবারিক, ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁকে শুনতে হতো, পরিবার নিয়ে নাটক আজকাল কেউ দেখে না। এসব প্রচার হয় না। এসব কথায় ভীষণ কষ্ট পেয়ে প্রতিবাদস্বরূপ পারিবারিক গল্পের নাটক লেখেন তিনি। প্রতিবাদ করে সফলও হয়েছেন তিনি।
এই অভিনেত্রীর লেখা নাটক ‘বেকার’। পারিবারিক গল্পের নাটকটি ঢাকা বেতারে প্রচারিত হবে শিগগিরই। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এবারই তিনি নিজের লেখা বেতার নাটকে প্রথম কণ্ঠ দিলেন। তিনি বলেন, ‘পারিবারিক নাটকটি একটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে লিখেছি। এ ধরনের পারিবারিক নাটক লিখে যেসব সিনিয়র নির্মাতার কাছে গল্প দিতাম, তাঁরা সেটা নিয়ে বিভিন্ন রকম কথা বলতেন। আমার নিজের কানে শোনা, তাঁরা বলতেন, এসব পারিবারিক গল্প নাকি কেউ খায় না।

আজকাল এগুলো অচল। এগুলোর মার্কেট নাই। তাঁদের এসব কথা শুনে আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলাম। সেই জায়গা থেকে আমি প্রতিবাদ হিসাবে “বেকার” নাটকটি লিখেছি।’

একটি নাটকের দৃশ্যে হিল্লোল ও খালেদা আক্তার কল্পনা
সংগৃহীত

কয়েক বছর ধরে কিছুটা অসুস্থ ছিলেন খালেদা আক্তার কল্পনা। এই বছরের শুরুতেই প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা নিতে বছরে দুইবার তাঁকে ভারত যেতে হয়। সে সময় তিনি আর্থিকভাবে অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন। পরে তিনি সুস্থ হয়ে অনেককে কাজের জন্য ফোন করেছেন, কিন্তু কাজে ডাক পাচ্ছিলেন না। ভেবেছিলেন আর্থিক সংকট উত্তরণের জন্য নাটক লিখে কিছু টাকা রোজগার করবেন। তাঁর অনেক চিত্রনাট্য ও গল্প লেখা রয়েছে। নির্মাতাদের সেসব চিত্রনাট্য পাঠিয়েছিলেন তিনি। তাতে খুব একটা সাড়া পাননি।

তিনি বলেন, ‘অনেককে চিত্রনাট্য পাঠিয়েছি। কিন্তু কেউ মূল্যয়ন করেননি। যাঁরা জুনিয়র, অবুঝ, লেখাপড়া কম জানা, নাটক নিয়ে অভিজ্ঞতা নেই, অজ্ঞ কোনো লোক কিছু বললে কষ্ট পেতাম না। কিন্তু সিনিয়রদের কাছ থেকে আমি এগুলো শুনেছি। এ জন্যই পারিবারিক নাটক লিখেই প্রতিবাদ করলাম।’

খালেদা আক্তার কল্পনা। ছবি: সংগৃহীত

বেতারের জন্য লেখা নাটক এবং কণ্ঠ দেওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি জানান, আরও আগে বেতারের নাটকের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে তিনি ভুল করেছেন। নাটকটির গল্প পরিবারের বিভিন্ন সংকটকে কেন্দ্র করে। খালেদা আক্তার কল্পনা বলেন, ‘প্রথমবার আমি বেতারের জন্য অভিনয় করলাম। এখানে কণ্ঠটাই প্রধান। করোনার সময়ে সাজগোজ নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হয়নি। নতুন এই মাধ্যমে কাজ করে অনেক ভালো লেগেছে। অভিনয় করার সময় বারবার মনে হয়েছে আরও আগে বেতারে না এসে ভুল করেছি।’ এই অভিনেত্রী এখন থেকে নিয়মিত বেতারে অভিনয় করতে চান। নাটকটি আগামী শুক্রবার বেলা ৩টায় ঢাকা বেতারে প্রচারিত হবে।

খালেদা আক্তার কল্পনা
সংগৃহীত