গত ২৪ বছরে এমনটি ঘটেনি মিশার জীবনে

মিশা সওদাগর

মন খারাপ মিশা সওদাগরের। প্রতিবছর ঈদে মিশা সওদাগর অভিনীত একাধিক সিনেমা মুক্তি পেত। করোনা কারণে এখন আর ঈদে কোনো সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে না। এ বছর তাঁর অভিনীত চারটি বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তির কথা ছিল। সেসব সিনেমা করোনা পরিস্থিতিতে মুক্তির সম্ভাবনা কম। ঈদে নিজের সিনেমা থাকবে না, এমনটা কখনো কল্পনাও করেননি। এ বিষয়টা তাঁকে ভাবাচ্ছে, মন খারাপ তাঁর। গত ২৪ বছরে এমনটি ঘটেনি তাঁর জীবনে।

মিশা সওদাগর
ছবি : সংগৃহীত

চলচ্চিত্রে মিশার পথচলা তিন দশকের বেশি সময়। অভিনয়জগতে আসার পর থেকেই ভিলেন মিশা আস্থার জায়গা তৈরি করেন। ভিলেন হিসেবে তাঁর নামডাক ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর ওপর নির্মাতা ও প্রযোজকেরা ভরসা পান।

তাঁকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ বাড়তে থাকে। সেগুলো বছরজুড়ে মুক্তি পেত। বিশেষ করে ঈদে থাকত তাঁর সিনেমার চমক। কারণ, দেশের প্রায় প্রতিটি প্রেক্ষাগৃহেই তাঁর ছবি চলত।

মিশা সওদাগর। ছবি: সংগৃহীত

এবার ঈদের মিশার অভিনীত ‘শান’, ‘মিশন এক্সটিম’, ‘বিদ্রোহী’সহ চারটি সিনেমা মুক্তির কথা ছিল। সিনেমাগুলোর মুক্তির সম্ভাবনা দিন দিন কমছে। মিশা জানান, ঈদ সবার কাছে একটু বেশি উৎসবমুখর থাকে। দীর্ঘ একটি সময় পরে সবাই আনন্দে সময় কাটায়। আগে থেকে দর্শক পরিকল্পনা করেন সিনেমা দেখবেন। ঈদের জন্য সেভাবে ভালো সিনেমাকে প্রস্তুত করা হয়। সেই উৎসবের অংশ হতে না পারাটাই তাঁর দুঃখ। তিনি বলেন, ‘অন্য সবার মতো ঈদ আমার জন্য খুবই স্পেশাল। দর্শকদের সঙ্গে এই খুশিটা ভাগাভাগি করে নেওয়াটা অনেক আনন্দের। সেটা এবারও করোনার কারণে এবারও অনিশ্চিত।

একজন অভিনেতার জন্য এটা কষ্টের। কারণ দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ ধরে দেখে আসছি, ঈদের আমার সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। পরিস্থিতি মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। শিগগির আমাদের সুদিন আসবে।’

মিশা সওদাগর

ঈদকে টার্গেট করে প্রতিবছর একাধিক পুরোনো হল চালু হয়। অনেক হল সারা বছরের ক্ষতি এই সময়ে পুষিয়ে নেয়। বড় বাজেটের সিনেমাগুলো ব্যবসা করতে পারে। মিশার মতে, গত বছরের মতো এবারও কোনো সিনেমা মুক্তি না দেওয়ায় দেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি, প্রযোজক, শিল্পী ও কলাকুশলীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন। তিনি বলেন, ‘সবকিছুর একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। বর্তমান কিছু সিনেমা মুক্তি না পেলে দর্শকদের কাছে আবেদন অনেকটাই কমে যেতে পারে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে চাঙা রাখার জন্য এই সময়টা বড় প্রয়োজন। এভাবে সিনেমাহীন ঈদ গেলে ঢালিউড সিনেমা হলের দর্শক কমে যেতে পারে।’

বছরের শুরুতেই আমেরিকা থেকে এসেছেন মিশা। এসেই অভিনয় এবং সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবে তিনি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়েদ খান সাংগঠনিক কাজে সিনিয়র অভিনয়শিল্পীদের প্রশংসা পেয়েছেন। তাঁদের নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সোহেল রানা, রোজিনা, উজ্জল, অঞ্জনাসহ আরও অনেকে। তাঁরা লিখেছেন, করোনাকালে সব তারকার পাশে থাকায় এই দুই নেতা মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। মিশা বলেন, ‘আমরা সংগঠন থেকে সবার পাশে আছি। আমাদের সিনিয়র গুণী অভিনেতা, অন্য সহকর্মীরা কেমন আছেন, সব সময় তাঁদের খবর নিচ্ছি। তাঁরা ভালো থাকলেই আমরা ভালো থাকব।’

মিশা সওদাগর

মিশা জানান, আপাতত তিনি ঝুঁকি নিয়ে শুটিং করছেন না। তাঁর নিজেরও বেশ বয়স হয়েছে। কিছু কাজের ডাবিং বাদ ছিল, সেগুলো শেষ করছেন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটছে। ঈদের পরে তাঁর নতুন দুটি সিনেমায় অভিনয়ের কথা রয়েছে। পরিস্থিতি ভালো থাকলেই তিনি শুটিংয়ে অংশ নেবেন। এখন সিনেমার জন্যই নিজেকে প্রস্তুত করছেন।