‘চন্দ্রাবতী কথা’ কবে মুক্তি পাবে, জানালেন পরিচালক
ফেব্রুয়ারির শেষ দিনে আনকাট সেন্সর সার্টিফিকেট পেল ‘চন্দ্রাবতী কথা’। এই ছবির পরিচালক এন রাশেদ চৌধুরী, অভিনয়শিল্পী দিলরুবা দোয়েল, নওশাবা আহমেদ ও ইমতিয়াজ বর্ষণ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন।
মধ্যযুগের উল্লেখযোগ্য তিন নারী কবির অন্যতম চন্দ্রাবতী। ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’র ‘জয়-চন্দ্রাবতী’ উপাখ্যানের নায়িকা হিসেবে তিনি অমর হয়ে আছেন। মধ্যযুগে রচিত ‘মনসামঙ্গল’-এর অন্যতম কবি দ্বিজ বংশীদাসের কন্যা চন্দ্রবতী। ‘মলুয়া’, ‘দস্যু কেনারামের পালা’, ‘রামায়ণ গীতিকা’ তাঁর লেখা। কিশোরগঞ্জের পাঠবাড়ি বা পাতুয়ারিয়া ছিল তাঁদের নিবাস। বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারীবাদী কবি চন্দ্রাবতীর জীবনকাহিনি নিয়ে নির্মিত ‘চন্দ্রাবতী কথা’।
এন রাশেদ চৌধুরী ফেসবুকে লেখেন, ‘অবশেষে আমাদের ছবি “চন্দ্রাবতী কথা” কোনো কর্তন ছাড়াই সেন্সর বোর্ডের সার্টিফিকেট পেল। আমি এই ছবির সমস্ত পরিচালক, সমন্বয়ক, শুভাকাঙ্ক্ষী, শিল্পী ও কলাকুশলীর প্রতি মন থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাদের নিরবচ্ছিন্ন সমর্থনে আমার স্বপ্ন সত্যি করতে পেরেছি।’ কবে মুক্তি পাবে এই ছবি? এর উত্তরে এই পরিচালক বলেন, ‘এখন তো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ। এপ্রিলের ১৪ তারিখ থেকে শুরু হয়ে যাবে রমজান মাস শুরু। এই সময়টুকু আমরা ছবির প্রচার প্রচারণার জন্য রাখতে চাই। ঈদের পর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলে ছবি মুক্তি দেব।’
স্বাধীন ধারার এই ছবিগুলোর দিকে সরকারের আরেকটু মনোযোগী হওয়া উচিত বলেও মনে করেন এই নির্মাতা। বললেন, ‘এখন অনুদানের ছবির ক্ষেত্রে একটি ধারা যুক্ত হয়েছে যে এই ছবিগুলো অন্তত ১০টি হলে মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু আমাদের ছবিগুলোয় তো তথাকথিত বাণিজ্যিক উপাদান থাকে না। তাই হলমালিকেরাও আমাদের ছবিগুলো নিতে চায় না। আমি আতিক ভাই (নুরুল আলম আতিক), সাইমন (কামার আহমাদ সাইমন) বিষয়টা নিয়ে আলাপ করছিলাম। এ ক্ষেত্রে সরকারিভাবে এই স্বাধীন ধরনের ছবিগুলোকে মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। হলমালিকদের উদ্দেশ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা যেতে পারে।’
‘চন্দ্রাবতী কথা’ ছবিটির প্রিমিয়ার হয় ২৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে। ১৫৫০ থেকে ১৬০০ সালের সময়কার চন্দ্রাবতী ‘জীবন্ত’ হয়েছেন দিলরুবা দোয়েলের শরীরে। এই ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মিতা রহমান, গাজী রাকায়েত, আরমান পারভেজ মুরাদ, কাজী নওশাবা আহমেদসহ অনেকে। ২০১৫ সালের সরকারি অনুদান, ম্যানগ্রোভ পিকচার্স ও বেঙ্গল ক্রিয়েশন্সের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে এই চলচ্চিত্র। এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডসের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে এই ছবি।
২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চন্দ্রাবতীর জন্মস্থান কিশোরগঞ্জ ছাড়াও ময়মনসিংহ, নেত্রকোনার অন্যান্য এলাকায় বিভিন্ন ঋতুতে শুটিং হয়। পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ হয়েছে ভারতে। সংগীত পরিচালনা করেছেন কলকাতার সাত্যকি ব্যানার্জি।