‘চলচ্চিত্র সময়কে তুলে ধরে, ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়’

চলচ্চিত্র শুধু বিনোদন নয়, এটি দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও আজীবন সম্মাননা পাওয়া শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠানে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এই আয়োজন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও আজীবন সম্মাননা পাওয়া শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীদের সংবর্ধনার অনুষ্ঠানের শিল্পীদের একাংশ
প্রথম আলো

বিগত বছরগুলোয় যাঁরা সেরা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁদের নিয়ে এই আয়োজন। চমৎকার এ আয়োজনের জন্য তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ধন্যবাদ জানান পরিচালক সমিতিকে। তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র সময়কে তুলে ধরে। ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়। চলচ্চিত্র সময় ও কালকে তুলে এনে মানুষের মন বিকশিত করতে সাহায্য করে। আমি মনে করি, আমাদের দেশের পরিচালক ও শিল্পীরা অনেক মেধাবী।’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও আজীবন সম্মাননা পাওয়া শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীদের সংবর্ধনার অনুষ্ঠানের শিল্পীরা
প্রথম আলো

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আমাদের চলচ্চিত্রের অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের একটি ফান্ড গঠন করেছেন। বন্ধ হল খুলতে ও চালু হলগুলোর আধুনিকায়নের জন্য স্বল্প সুদে এই টাকা হল মালিকদের দেওয়া হবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনাও জারি করেছে। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এফডিসির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাদা একটা আবেগ আছে।’

রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অভিনয়শিল্পী ও পরিচালকেরা
প্রথম আলো

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির আয়োজনে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালকদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ও কলাকুশলীদেরও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও আজীবন সম্মাননা পাওয়া শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীদের সংবর্ধনার অনুষ্ঠানের একটি ছবি
প্রথম আলো

অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিল্পীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় স্মারক। যাঁরা উপস্থিত হতে পারেননি, তাঁদের স্মারক বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান আয়োজকেরা। চলচ্চিত্রে অবদান রাখার জন্য ২০১৮ সালে আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত অভিনেতা আলমগীর বলেন, ‘এটি মার্চ মাস। এই মাসের ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে আমাদের কাছে। ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ ও ২৬ মার্চ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন, আমরা সবাই মিলে দেশকে ভালোবাসি, দেশকে গড়ে তুলি।’

উপস্থিত ছিলেন ফেরদৌস ও প্রযোজক খোরশেদ আলম
প্রথম আলো

২০১৯ সালে চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা পান সোহেল রানা। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এফডিসিতে যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাঁদের যেন দ্রুত বদলি না করা হয়। গত ৫০ বছরে অনেকবার এফডিসির প্রধান কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এতে এফডিসির উন্নয়ন ব্যহত হয়েছে। কাজ করার সময় পান না তাঁরা। এভাবে এফডিসির উন্নয়ন সম্ভব নয়। চলচ্চিত্রের মানুষকে এফডিসিতে বসান। এমন কাউকে বসালে এফডিসিকে বোঝা সহজ হবে তাঁর জন্য।’ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অভিনয়শিল্পী জাহিদ হাসান, মেহের আফরোজ শাওন প্রমুখ।

মৌসুমির হাতে স্মারক তুলে দিচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী
প্রথম আলো

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্মারক গ্রহণ করেন সুজাতা, সুচরিতা, এস আই টুটুল, মৌসুমী, রুনা খান, তানিয়া আহমেদ, আঁখি আলমগীর, ফেরদৌস, চঞ্চল চৌধুরী, শাহাদত হোসেন, কুসুম সিকদার প্রমুখ। পরিচালকদের মধ্যে হারুনর রশীদ, গাজী রাকায়েত, আবু সাঈদ, অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, মুরাদ পারভেজ, বদরুল আনাম সৌদ, তানিম রহমান ও মতিন রহমানের পক্ষে তাঁর স্ত্রী।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার।