‘চেহারা খারাপ, স্মার্ট না, এটাই আমার অপরাধ’

কথা বলার সময় কিছুটা ভেঙে পড়েন হিরো আলম। তাঁর গলার স্বর নেমে আসে, ‘আমার চেহারা খারাপ, আমি স্মার্ট না, ভালো করে কথা বলতে পারি না, এটাই আমার অপরাধ। ভাই, চেহারা আল্লার দান। আপনারা ভাবেন তো, আমার মতো খারাপ চেহারা যদি আপনাদের হতো?

হিরো আলম।
ছবি:সংগৃহীত

‘আমাকে অনেক মানুষ দেখতে পারে না। সেই তাঁরাই আবার আমার পেছনে লাগলেন। আপনারা কেউ কি বলতে পারবেন, আমার দোষ কী? কেন আমার সব কাজে বাধা দেন? কেন বারবার আমার পেছনে লাগছেন? আপনাদের কী ক্ষতি করলাম, একবার বলবেন?’—সম্প্রতি ফেসবুক আইডি হ্যাকড হওয়ায় মনে কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বললেন হিরো আলম। এবার নিয়ে চারবার তাঁর আইডি হ্যাকড হলো। এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু ফেসবুক আইডি হ্যাকড কেন, একের পর এক তাঁর ওপর যতই হামলা, হুমকি বা মানহানির চেষ্টা করা হোক না কেন, তিনি কিছুতেই পিছপা হবেন না। প্রতিবাদ করেই সামনে এগোবেন।

হিরো আলম
ছবি: ফেসবুক

হিরো আলম মনে করেন, কিছু মানুষ ইচ্ছা করে তাঁর ক্ষতি করে। জীবনে যারা কিছু করতে পারেনি, তারাই তাঁর উত্থানে বাধা দেয়।

হিরো আলমের ভাষায়, ‘চারবার তারা আমার ফেসবুক আইডি গায়েব করল। কয়েক দিন আগে আমার শত্রুপক্ষ ফেসবুক পেজ রিপোর্ট করে বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। একের পর এক ঝামেলা কেন করছেন, ভাই? মানুষকে দুই টাকা যদি দান করতে যাই, সেখানেও বাধা! আপনাদের কাছে অনুরোধ, আমার পেছনে আঠার মতো লাগবেন না।’

হিরো আলম
ছবি:সংগৃহীত

প্রায় সাত মাস পর শর্ত সাপেক্ষে ১৬ অক্টোবর সিনেমা হল খোলার অনুমতি পেয়েছে। অনেক প্রযোজকের নতুন ছবি প্রস্তুত থাকলেও কেউ ঝুঁকি নিয়ে ছবি মুক্তি দেননি। এ অবস্থায় একমাত্র নতুন ছবি হিসেবে প্রথম সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে ‘সাহসী হিরো আলম’। ছবিটি দেশের ৩৯টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। হিরো আলমের দাবি, বেশির ভাগ সিনেমা হলেই তাঁর ছবি মোটামুটি ব্যবসা করেছে। এটি নিয়ে অনেকে গুজব ছড়াচ্ছেন, বাজে মন্তব্য করছেন। এসব মন্তব্য ও গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার চেহারা ভালো না, আমি সুন্দর করে কথা বলতে পারি না, আমি অভিনয় করতে পারি না। আরিফিন শুভ, ইমন, বাপ্পি, সাইমন—তাঁদের চেহারা ভালো, তাঁদের অনেক ছবিও কোয়ালিটিফুল, দেখার মতো। তারপরও তাঁদের ছবি ফ্লপ হচ্ছে না? তাঁদের পেছনে তো কেউ লাগেন না। তাহলে আমার অপরাধ কী? আমি কি সবকিছু জানি? আমার ভুলগুলো আপনার ধরিয়ে দিন। আমি সামনে ভালো কাজ করতে চেষ্টা করব।’

ক্রমাগত এসব আক্রমণের কথা বলার সময় কিছুটা ভেঙে পড়েন হিরো আলম। তাঁর গলার স্বর নেমে আসে, ‘আমার চেহারা খারাপ, আমি স্মার্ট না, ভালো করে কথা বলতে পারি না, এটাই আমার অপরাধ। ভাই, চেহারা আল্লার দান। আপনারা ভাবেন তো, আমার মতো খারাপ চেহারা যদি আপনাদের হতো? আর আমি ভালো করে কথা বলব কীভাবে? আমি ছোটবেলায় লেখাপড়ার সুযোগ পাইনি। আমাদের সাহায্য করার মতো কেউ ছিল না। সবাই যখন স্কুলে যায়, তখন আমাকে উপার্জন করে পরিবার চালাতে হয়েছে। আপনারা যদি আমার জায়গায় থাকতেন, তাহলে আপনারাও আমার মতো মূর্খ হতেন। আমার জায়গায় আপনাকে তখন মূর্খ, কুৎসিত বলে গালিগালাজ করলে কেমন লাগত?’

ভারতের গণমাধ্যমেও হিরো আলমকে নিয়ে সংবাদ প্রচার করেছে।
ছবি:সংগৃহীত

যে যা-ই বলুক, সেগুলোকে আমলে নেন না হিরো আলম। জানালেন, ফেসবুক আইডি ফিরে পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ করেছেন। নিজেই নিজের পথ তৈরি করে হাঁটতে চান হিরো আলম। জানালেন, গতকালই তিনি ‘মোহাম্মদ আশরাফুল হোসেন আলম’ নামে একটি নতুন আইডি খুলেছেন। খুব শিগগির তিনি আরও দুটি ছবির কাজ শুরু করবেন। সেগুলোর প্রস্তুতি নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁর।

চলচ্চিত্রের দৃশ্যে হিরো আলম
ছবি:সংগৃহীত