তিন বছর রোগে ভুগে অবশেষে মারা গেলেন পরিচালক তমিজ উদ্দিন

তমিজ উদ্দিন রিজভী

কবরী, শাবানা, ফারুক, অঞ্জনা, জসিম, জাফর ইকবাল, ইলিয়াস কাঞ্চন, শাবনাজ, সালমান শাহ ও শাবনূর কে অভিনয় করেননি তাঁর পরিচালনায়! ঢালিউডের এ নায়ক-নায়িকাদের নিয়ে যিনি চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নাম তাঁর পরিচালক তমিজ উদ্দিন রিজভী। তিন বছর ধরে এই পরিচালক কিডনি রোগে ভুগছিলেন। নিয়মিত ডায়ালাইসিস চলছিল। গতকাল সোমবার রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এ পরিচালক। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন )। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। প্রথম আলোকে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের এ পরিচালকের মৃত্যু খবরটি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছোট ছেলে শুভ রিজভী।

তমিজ উদ্দিন রিজভী পরিচালিত ‘ছোট মা’ চলচ্চিত্রের পোস্টার

ঢাকার হাসপাতালের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে মুক্তিযোদ্ধা ও চলচ্চিত্র পরিচালক তমিজ উদ্দিন রিজভীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। সেখানে বাদ জোহর হাসপাতালে জানাজা শেষে নারায়ণগঞ্জ পাইকপাড়া বড় কবরস্থানে সমাহিত করা হবে। সমাহিত করার আগে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে বলে জানালেন ছেলে শুভ রিজভী। তিনি বলেন, ‘আব্বু অনেক দিন ধরে কষ্ট পাচ্ছিলেন। শেষের দিকে কিডনি রোগ ছাড়া অন্য রোগে আক্রান্ত হন। সবার কাছে আমার আব্বুর জন্য দোয়া চাই।’

তমিজ উদ্দিন রিজভী পরিচালিত ‘আশীর্বাদ’ চলচ্চিত্রের পোস্টার

ঢালিউডের ক্ষণজন্মা নায়ক সালমান তাঁর অভিনয়জীবনের দ্বিতীয় ছবিটি করেছিলেন তমিজ উদ্দিন রিজভীর পরিচালনায়। ২৭টি চলচ্চিত্রের মধ্যে দুটিতে সালমান শাহ পরিচালক হিসেবে পেয়েছিলেন তাঁকে। এ পরিচালকের প্রথম চলচ্চিত্র ছোট মা, যেটির নায়িকা ছিলেন অঞ্জনা। এ চলচ্চিত্রের দুটি গান ‘মনে বড় আশা ছিল তোমাকে শোনাব গান’, ‘ও রানা আমার রানা তুই যে খাঁটি সোনা’, শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। রিজভী পরিচালিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘আশীর্বাদ’-এও নায়িকা ছিলেন অঞ্জনা। এই চলচ্চিত্রের ‘চাঁদের সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা’ গানটি দর্শক-শ্রোতাদের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের শিল্পীদেরও ভীষণ প্রিয়।

তমিজ উদ্দিন রিজভী পরিচালিত ‘জিদ্দি’ চলচ্চিত্রের পোস্টার

ছেলে শুভ রিজভী জানালেন, তাঁর বাবার পরিচালিত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১১টি। এসব চলচ্চিত্রের মধ্যে আছে ‘ছোট মা’, ‘জিদ্দি’, ‘তুমি আমার’, ‘আশা ভালোবাসা’, ‘জেলের মেয়ে’, ‘জবাবদিহি’ ও ‘আশীর্বাদ’এর মতো ছবি তিনি উপহার দিয়েছেন। মৃত্যুকালে তমিজ উদ্দিন রিজভী স্ত্রী, এক মেয়ে, তিন ছেলে, নাতি–নাতনিসহ আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।