নির্বাক ছবিতে ধর্ষণের শিকার নারীর জীবন

‘পিতৃসত্তা’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের দৃশ্য
সংগৃহীত

একটি পরিবারে জন্ম নেয় একটি মেয়ে। বড় হওয়ার পর পদে পদে সে টের পায়, সমাজে নারী হয়ে জীবন কাটানো সহজ নয়। স্কুলে পড়ার সময় ইভ টিজিং তাঁর নিত্যসঙ্গী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একদিন টিউশনি থেকে ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার হয় সে। মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। তবে তাতে কোনো ফল আসে না। লোকে অভিযোগের আঙুল তোলে তার দিকেই। অভিযোগ আসে, তার পোশাক, চলাফেরা ঠিক ছিল না। কাছের মানুষেরা উপদেশের ভঙ্গিতে বাতলে দেয় সমাধান। প্রতিবেশীরা বলে বেড়ায়, ‘মেয়েকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে দিয়ে দাও। যেনতেন একটা ছেলে পেলেও বিদায় করো।’

ফারজানা ছবি
সংগৃহীত

উপদেশ মেনে মেয়েকে তড়িঘড়ি করে বিয়ে দেন মা-বাবা। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে জেনে যায় ধর্ষণে শিকার হওয়ার ঘটনাটি। এরপর শ্বশুরবাড়িতে শুরু হয় নানাভাবে নির্যাতন। একপর্যায়ে মেয়েটিকে পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে মেরে ফেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এভাবেই একটি মেয়ের জন্ম থেকে মৃত্যু দেখানো হয়েছে ‘পিতৃসত্তা’ নামের আট মিনিটের স্বল্পদৈর্ঘ্য একটি চলচ্চিত্রে। সিনেমার গল্প উপস্থাপিত হয়েছে একজন বাবার দৃষ্টিভঙ্গিতে। ছবিতে মেয়েটির মা আর বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারজানা ছবি ও শাহেদ শরীফ খান।

সিনেমাটির চিত্রনাট্য লেখা ও পরিচালনা করেছেন নাদিয়া আফরিন। পরিচালককে ধন্যবাদ জানিয়ে এই ছবির অভিনেত্রী ফারজানা ছবি বলেন, ‘সমাজের সত্যিকারের সমস্যা নিয়ে আমাদের গল্পে, অভিনয়ে, ক্যামেরায় উঠে না আসে, তবে আর কবে? এই ধরনের একটি দায়িত্বশীল চরিত্রে অভিনয় আমার মেরুদণ্ড সোজা করে।’
শাহেদ শরীফ খান বলেন, ‘আমার অভিনয়জীবনের অন্যতম সেরা চরিত্র এটি। সেটে বারবার আমার নিজের মেয়েটার কথা মনে পড়েছে।’


তিন দিন উত্তরার বিভিন্ন স্থানে শুটিং হয়েছে। পুরো সিনেমায় নেই একটি সংলাপও।