নেপালে শুভর অন্য রকম ১০টি দিন

আরিফিন শুভ

গত ৩১ মার্চ নেপালে যান ঢাকাই ছবির নায়ক আরিফিন শুভ। যাওয়ার এক দিন পর ফোন, ফেসবুক—সব জায়গা থেকেই উধাও। ঘটনা কী? কেউ বলতে না পারলেও প্রায় ১০ দিন পর মঙ্গলবার আরিফিন শুভর হোয়াটসঅ্যাপ খোলা পাওয়া গেল, তাঁকে সরব দেখা গেল ফেসবুকে। জানা গেল ভেতরের খবর।
শুভ জানালেন, ‘বিপাসনা মেডিটেশন’ নামে ১০ দিনের একটি বিশেষ কোর্স সেরেছেন এর মধ্যে। বলেন, ‘মানুষের শরীর ঠিক রাখার জন্য যেমন শরীরচর্চা করতে হয়, তেমনি মন সুস্থ ও সুন্দর রাখতেও মনের চর্চার দরকার হয়। তেমনই এই মেডিটেশন কোর্স। আর এই কোর্স করার সময় বাইরের দুনিয়ায় কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় না। সেই সুযোগও নেই।’
যদিও এই কোর্সে আবেদন করতে কোনো টাকাপয়সা লাগে না। তবে যে কেউ আবেদন করলেই যে সুযোগ পাবেন, তা নয়। আবেদনে তারা সন্তুষ্ট হলেই কোর্স করার সুযোগ দেয়।

এই অভিনেতা জানালেন, নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় এক ঘণ্টা পথ পাড়ি দিয়ে এই মেডিটেশন সেন্টার। এটি প্রায় আড়াই শ বছর আগের মেডিটেশন পদ্ধতি। এখানকার নিয়মকানুন খুব কঠিন।

আরিফিন শুভ

বলেন, ‘ভোর সাড়ে চারটায় উঠে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত টানা চর্চায় থাকতে হয়। সেন্টারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কেউ কারোর সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারবেন না। এমনকি ইশারাতেও নয়। খালি শিক্ষক, সরকারি শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলা যাবে, তা–ও নম্রস্বরে। সঙ্গে একমাত্র পরিধেয় বস্ত্র ছাড়া কোনো কিছুই নেওয়া যায় না সেখানে।’

আরিফিন শুভ

শুভ আরও বলেন, ‘যেদিন সেন্টারে গেলাম, জামাকাপড় ছাড়া মোবাইল থেকে শুরু করে বহন করা সবকিছুই সেন্টারের প্রবেশদ্বারে জমা দিতে হয়েছিল। তা ছাড়া ওখানে অবস্থান করা পুরো সময়টিতে নিজের সব কাজ নিজেই করতে হয়েছে। দারুণ এক অভিজ্ঞতা।’

মেডিটেশনের দিনগুলো কেমন ছিল জানতে চাইলে শুভ বলেন, ‘আমরা তো কমবেশি মোবাইল ফোনে আসক্ত। মানুষের জীবনে এটি এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া ১০টা দিন পৃথিবীর কোনো কিছুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। এমনকি কারোর সঙ্গে কথাও বলা যায়নি। বিষয়টি একবার ভাবেন, নিজের কাছে নিজেকে স্রেফ পাগলের মতো লাগে। অনেকে কোর্সে ঢুকেই না পেরে বেরিয়ে যেতে চায়।’

আরিফিন শুভ

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই সেন্টার আছে। শুভর বেশ কয়েকজন বন্ধু আগে সেখানে গিয়ে এই মেডিটেশন কোর্সটি করেছেন।

শুভ বলেন, ‘প্রায় সাত বছর আগে থেকেই আমার কয়েকজন বন্ধু এই মেডিটেশন কোর্স করতে বলে আসছিল। কিন্তু সময় পাইনি। এবার সেই সুযোগ হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ এই মেডিটেশন কোর্স করতে আসেন। আমাদের টিমে বিভিন্ন দেশের ৪০ জনের মতো ছিলাম। বাংলাদেশের আমি একাই।’

আরিফিন শুভ

কোর্সটি করার পর নিজেকে বেশ ফুরফুরে লাগছে, জানালেন শুভ। বলেন, ‘১০ দিন পার্থিব কোনো যোগাযোগ ছিল না। একধরনের রুটিনের মধ্যে ছিলাম। সব ধরনের মানসিক চাপ বা চিন্তা থেকে দূরে ছিলাম। এখন নিজের কাছে খুব ভালো লাগছে। নিজেকে ফ্রেশ লাগছে। মনে হচ্ছে নিজেকে নতুন করে তৈরি করলাম। নতুন উদ্যমে আগামীর কাজ শুরু করতে পারব।’ ১৪ এপ্রিল দেশে ফিরবেন এই নায়ক।