পাকিস্তানে কেমন কেটেছে শবনমের ঈদ

শবনম
ছবি : সংগৃহীত

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কারণে লম্বা সময় পাকিস্তানে ছিলেন। শুটিংয়ের ব্যস্ততায় বেশ কয়েকবার ঈদের সময়ে সেখানে থাকতে হয়। কিন্তু ঢাকায় স্থায়ীভাবে চলে আসার পর মাঝেমধ্যে যেতেন। তবে ঈদ বা অন্য সময় ঢাকাতেই থাকতেন। এবার পাকিস্তানে গিয়ে করোনার কারণে আটকা পড়েছেন। দেশে আসার কোনো বিমান নেই। তাই বাধ্য হয়ে পাকিস্তানে ঈদ উদ্‌যাপন করতে হয়েছে। পাকিস্তানে কেমন ছিল শবনমের এবারের ঈদ? প্রশ্ন রাখতেই তিনি বললেন, ‘এখানে ঈদের সময়টায় খুব একটা হইচই নেই। করোনার কারণে তো আরও কম।’

করোনা মহামারির এই সময়ে দুবাই হয়ে পাকিস্তানে বেড়াতে গিয়ে বিধিনিষেধে আটকা পড়েছেন তিনি। ঈদের এই সময় তিনি ফয়সালাবাদে সাজিয়া নামের এক ভক্তের বাড়িতে আছেন। শবনম যখন পাকিস্তানে অভিনয় করেন, তখন থেকে এই সাজিয়া তাঁর সিনেমা দেখতেন। ৩০ বছর ধরে তাঁদের যোগাযোগ, কিন্তু কখনো দেখা হয়নি। এবার পাকিস্তানে যাওয়ার পর দেখা হলো এবং তাঁর বাড়িতে মেহমান হিসেবে থাকতে হচ্ছে। এই ভক্তের বাড়িতেই এবারের ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন শবনম।

শবনম
ছবি : সংগৃহীত

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শবনম বলেন, ‘এখানে ঈদ খুব একটা হইচই করে হয় না। সবাই যে যার বাসায় মাংস কাটাকুটি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ঢাকায় যেমন একটা উৎসব উৎসব ব্যাপার, এখানে তেমনটা চোখে পড়েনি। আমি ফয়সালাবাদের যেখানে আছি, সেখানেও কোনো হইচই নেই। করোনা মহামারিও একটা বড় কারণ।’

পাকিস্তানে থাকার খবর শুনে সেখানকার কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল শবনমকে কয়েকটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়। চ্যানেলগুলোর আবদারে এসব অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হয়েছে শবনমকে। বললেন, ‘পাকিস্তানে ৫০টির মতো টেলিভিশন চ্যানেল। আমি আসার খবরে তারা যোগাযোগ করে। অনুরোধ করে। কয়েকটি অনুষ্ঠানে তাই অংশ নিতে হয়েছে।’ পাকিস্তানে থাকায় এবার ঢাকার ঈদ মিস করেছেন বলে জানালেন শবনম। বললেন, ‘যত যা–ই হোক, ঢাকার ঈদটা তো মিস করবই। এবারও করেছি। ঢাকায় আমার সব আত্মীয়স্বজন আছেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন আছে, বন্ধুবান্ধব আছে। আমি তো বিপদে পড়েই আটকে গেছি। তাই ঢাকায় ঈদ উদ্‌যাপন করা হলো না।’

শবনম
ছবি : প্রথম আলো

২০১৯ সালের কোরবানির ঈদও পাকিস্তানে উদ্‌যাপন করতে হয়েছে। কারণ হিসেবে জানালেন, ‘একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। তার কিছুদিন পর ছিল ঈদ। আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এরপর বন্ধুবান্ধব আমাকে আসতে দেয়নি। ওদের মন রক্ষার্থে আমিও থেকে যাই। খুব সুন্দর সময় কেটেছিল।’

চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের কারণেও লম্বা সময় ধরে পাকিস্তানে থাকতে হয়েছে। ওই সময়ও পাকিস্তানে ঈদ উদ্‌যাপন করতে হয়েছে তাঁকে। তবে তখনকার ঈদের সময়ে খুব একটা আনন্দ উপভোগ করতে পারেননি শবনম। কারণ হিসেবে বললেন, ‘তখন তো আসলে শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হতো। দুই ঈদে তো আরও বেশি ব্যস্ত সময় পার করতে হতো। তাই উদ্‌যাপনের বিষয়টা এতটা খেয়াল থাকত না।’

২০১৯ সালে পাকিস্তানের একটি অনুষ্ঠানে বরেণ্য অভিনয়শিল্পী শবনম
ছবি : সংগৃহীত

বরেণ্য এই অভিনয়শিল্পী সর্বশেষ ‘আম্মাজান’ সিনেমার শুটিং করেন। এরপর তাঁকে আর চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে ক্যামেরার সামনে দেখা যায়নি। তবে শবনম এখনো অভিনয় করতে চান। তিনি বলেন, ‘একজন শিল্পী মরার আগপর্যন্ত কাজ করতে চায়। যে মানেপ্রাণে আর্টিস্ট, সে অভিনয় ছাড়া বাঁচতে পারে না। যতই ১৫০-২০০ ছবিতে অভিনয় করি না কেন, অভিনয়ের ক্ষুধা থেকেই যায়।’

সিনেমায় কাজ না করার কারণে এখন অনেক সময় পান। অবসরে তিনি পরিবার, শ্বশুরবাড়ি, আত্মীয়স্বজন—সবাইকে সময় দেন। তাঁদের নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করেন। শবনম বলেন, ‘ছেলে বাসায় থাকলে রান্না করি। কখনো কখনো নিজের জন্য রান্না করি। জীবন তো চলেই যায়। নিজের পুরোনো ছবিগুলো দেখি। রবিনের গান অনেক শুনি। আলাউদ্দীন আলী, খান আতাউর রহমানের গানও শুনি। স্মৃতি নিয়েই আমি আছি। কাউকে বিরক্ত করি না।’