প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচনের তোড়জোড়

এফডিসিতে প্রযোজক সমিতির কার্যালয়
এফডিসিতে প্রযোজক সমিতির কার্যালয়

প্রায় সাত বছর ধরে নির্বাচন বন্ধ আছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির। চলচ্চিত্রের অন্য সব সংগঠনের নিয়মিত নির্বাচন হলেও মামলাসহ নানা কারণে এই সংগঠনের নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনকৃত এফবিসিসিআইয়ের অঙ্গসংগঠন এটি। দীর্ঘ সময় ধরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে উপসচিব পদমর্যাদার একজনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে চালানো হচ্ছে সমিতি। চলচ্চিত্রের এই গভীর সংকটকালে সমিতিকে সচল করার জন্য এখন নির্বাচনের তাগিদ উঠছে সিনেমার সঙ্গে যুক্ত সবার।

এ বিষয়ে ২ ফেব্রুয়ারি বিএফডিসিতে প্রযোজকদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ১ মার্চ প্রযোজক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই নির্বাচন বোর্ড গঠন করে নির্বাচন করা হবে।

এই সমিতির সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১১ সালের ১৮ আগস্ট। ২০১১-১৩ মেয়াদি এই নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হন যথাক্রমে সোহেল রানা ও ডিপজল। এরপর কমিটির মধ্যে নানা জটিলতার কারণে আর নির্বাচন হয়নি। সরকারি প্রশাসক দিয়ে চলে আসছিল এই সমিতি। এরপর ২০১৬-২০১৮ মেয়াদি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রশাসক। কিন্তু প্রযোজক সমিতির গঠনতন্ত্র ৯ (গ) ধারা দেখিয়ে একজন প্রযোজক হাইকোর্টে মামলা ঠুকে দিলে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়।

ওই ধারায় বলা আছে, কেউ যদি পরপর তিনবার অর্থাৎ ছয় বছর টানা নির্বাচিত হন, তাহলে পরের একবার বিরতি দিয়ে আবারও তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। কিন্তু ২০১৬-১৮ মেয়াদের নির্বাচনে পরপর তিনবার নির্বাচিত এমন সাতজন প্রার্থী আবারও প্রার্থী হয়েছিলেন।

এদিকে এবার গঠনতন্ত্র সংশোধনীর মাধ্যমে জটিলতা কাটিয়ে নির্বাচনমুখী হচ্ছেন সবাই। এ জন্য প্রযোজক সমিতির গঠনতন্ত্রের একটি ধারায় সংশোধনী আনা হচ্ছে। এরই মধ্যে এফবিসিসিআই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করে ধারাটি সংশোধনীর অনুমতি এনেছে। ধারায় ছিল, পরপর তিনবার বিজয়ী হলে একবার বিরতি দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। কিন্তু সংশোধনীতে এই বিধানটি থাকছে না। বিরতি ছাড়াই একাধিকবার নির্বাচন করতে পারবেন প্রার্থীরা।

১ মার্চ প্রযোজক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা। সেখানে নতুন সংশোধনীটি প্রযোজকদের এক–তৃতীয়াংশ ভোটে পাস করে প্রযোজক সমিতির গঠনতন্ত্রে সংযোজন করা হবে। এদিকে ২ ফেব্রুয়ারি সভায় অন্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, ‘ওই সভায় আরেকটি বিষয়ও আলাপ হয়েছে। সেটি হলো কোনো প্রযোজকের একটি ছবি সেন্সর হলেই তিনি প্রযোজক সমিতির পূর্ণাঙ্গ সদস্য হবেন। তবে দুটি বিষয়ই গঠনতন্ত্রে যুক্ত করার জন্য প্রযোজকদের এক–তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে।’

গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ভোটের আয়োজন ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন প্রযোজক নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে জটিলতা কাটাতে গঠনতন্ত্রে সংশোধনী আনা হচ্ছে। চলচ্চিত্র এখন গভীর সংকটে। তাই প্রযোজক সমিতিকে সক্রিয় করতে পারলে সংকট অনেকটাই কাটবে।’

প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি সূত্র জানিয়েছে, ১ মার্চ সাধারণ সভার পর প্রশাসক নির্বাচনী বোর্ড গঠন করবেন। যেদিন গঠন হবে, তার ঠিক ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। আরেকটি সূত্র বলছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী এপ্রিলের শেষে অথবা মে মাসের প্রথম দিকেই নির্বাচন হবে এই সমিতির।